শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সরকার আবারো জঙ্গি নাটক করছে : বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ে ঘটনা আবারো সেই জঙ্গি নাটক কিনা জনগণের কাছে প্রশ্ন উঠেছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কী খোঁড়া যুক্তি? স্প্রে করে জঙ্গি, কনভিক্টেড জঙ্গি। তাকে একজন নাকি পুলিশ সদস্য নিয়ে আসতেছিলো। এটা কেমন করে হতে পারে? অসম্ভব ব্যাপার। জনগণের মনে প্রশ্ন জেগেছে, আবারো সেই জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে কিনা? যাতে করে তাদের আবার ক্ষমতায় টিকে থাকা স্থায়ী হতে পারে, কিছুটা সময় পায়। আমরা জনগণের প্রশ্নটাই তুলে ধরলাম। আমরা বিশ্বাস করি এসকল অশুভ চক্রান্ত থেকে সরকার সরে দাঁড়াবে। গতকাল সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা গুলি করে নয়ন মিয়াকে হত্যা করতে পারেন, শাওনকে হত্যা করতে পারেন। আর আদালতে আপনাদের জঙ্গি উধাও হয়ে যায় তখন আপনারা কিছুই করতে পারেন না। আমরা তো আদালতে যাই নিয়মিত, হাজিরা দিতে হয় আমাদের। আমরা তো দেখি চতুর্দিকে পুলিশ। সেখানে এন্ট্রি, এক্সিট সবই নিয়ন্ত্রিত।
তিনি বলেন, আরেকটা শুরু করেছিলো অগ্নিসন্ত্রাস। খুব একটা হালে পানি পায়নি। এটা খুব বেশি নেয়নি মিডিয়া। যে কারণে সেটাকে তারা জোর দিয়ে এটা করতে পারছে না। তাই কিছুদিন হলো জঙ্গি জঙ্গি শুরু করেছে। তারপর উধাও করে দিলো। তা আবার কারা? অভিজিত হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, যাদের শান্তি হয়েছে। বিষয়টা হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। এটা হতেই পারে না। আজকে জনগণের কাছে এই প্রশ্নটা এসেছে কিভাবে আদালত থেকে আসামী ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। তাও অভিযুক্ত সাজাপ্রাপ্ত আসামী।

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নয়া পল্টনেই হবে :
কুমিল্লা, রাজশাহী ও ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ ঘোষিত স্থানেই হবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে করার অনুমতি চেয়ে গত সাপ্তাহে বিএনপি ঢাকা মেট্রোপলিটসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বিষয়টি স্পষ্ট করতে গিয়ে বলেন, একটা কথা খুব পরিস্কার করে বলতে চাই, কুমিল্লায় ২৬ নভেম্বর, রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বর এবং ১০ তারিখ ঢাকায়। এই বিভাগীয় সমাবেশগুলো প্রত্যেকটি একই দিনে একই সময়ে ঘোষিত স্থানেই হবে। সরকারের উচিত হবে যদি ন্যূনতম শুভ বুদ্ধির উদয় হয় এই সমাবেশগুলোতে বাধা প্রদান না করা এবং নিজেদেরকে এভাবে একেবারে হাস্যকর অবস্থায় না নিয়ে যাওয়া। যখন তারা বলেন যে, আমরা সুন্দর ব্যবস্থা করছি, সমাবেশকে সমর্থন করছি, সহযোগিতা করছি তখন লোকে হাসে। মানুষজন তো প্রতিটা খবর রাখে। এখন তো ওই দিন নেই যে, সরকার যা বলে সব বিশ্বাস করতে হবে। এখন সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে মানুষ মুহুর্তের মধ্যে সমস্ত খবর পেয়ে যায়।

বিএনপি মহাসচিব জানান, গত ২২ আগস্ট থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৪ হাজার ৪১২ জনকে এজহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে, ১০ হাজার ৬৬৪জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৪৫জনকে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ৭টি সমাবেশে জনস্রোত দেখে সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গোটা দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃস্টি করেছে। যেসব বিভাগে সমাবেশ হয়ে গেছে সেখানে হয়রানি করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। বাকী যে তিনটা সমাবেশে যাতে লোকগম না হয় সেজন্য তারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্থ করার কৌশল হিসেবে এখন মহানগীরতে আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাসী চালানো হচ্ছে। নেতারা কেউ বাসায় থাকতে পারছেন না।

বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তকে মরার ওপরে খাড়ার ঘা উল্লেখ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, এই মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে জনগণই প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, একদিকে চাল-ডাল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেড়েই চলেছে। ইনফ্লেশন চরম পর্য়ায়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে, পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।এখন আরেক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের জীবনকে তারা দুঃসহ করে করে তুলেছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই দাম যদি না কমানো হয়, বিদ্যুতের দাম আগের জায়গা না নামায় তাহলে জনগণই তার প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি এমন করেছে যে, প্রত্যেকটি খাতে, প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ে, প্রত্যেকটি অধিদফতরে যে এখন কোনো মতেই সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন আইএমএফের ঋণ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে তারা জনগণের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন করা শুরু করেছে। আজকে যদি দুর্নীতি তারা (সরকার) কমাতে পারতেন, আজকে যদি জনগণের টাকা এভাবে পাচার না করতেন তাহলে এই সংকট মোকাবিলা করা জনগণের জন্য অনেক সহজ হতো।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, দুই সদস্য সচিব আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-দফতর তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন