শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জাতিসংঘে ইরানের বিরুদ্ধে ভোট দিল না ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:৫১ পিএম

হিজাব বিদ্রোহে অগ্নিগর্ভ ইরান। ‘নীতি পুলিশে’র বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন মুক্তকেশী তরুণীরা। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করছেন তারা। কিন্তু থেমে নেই শাসকও। বিক্ষোভ দমনে কড়া পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। বিক্ষোভকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে পুলিশ। ‘খোলা হাওয়া’র জন্য প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে ইরান বিরোধী একটি প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে ভারত।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আনে। সেখানে মানবাধিকার হননের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তৈরির কথা বলা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ইরানে বিক্ষোভকারীদের উপর প্রশাসনের জুলুম ও তাদের মানবাধিকার হরণের বিষয় আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরতেই এই প্রয়াস বলে মনে করা হচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই প্রস্তাব নিয়ে হওয়া ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি ভারত। ভোটদানে বিরত থাকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাজাখস্তান। বিপক্ষে ভোট দেয় পাকিস্তান ও চীন। তবে বিরোধিতা থাকলেও ৪৭ সদস্যের মানবাধিকার পরিষদে ২৫টি ভোটে প্রস্তাবটি পাশ হয়ে যায়। ফলে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তৈরি করা হয়েছে।

বলে রাখা ভাল, বেশ কয়েকদিন ধরেই মানবাধিকার পরিষদের প্রধান ভলকার টার্কের কাছে ইরানের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি উঠছে। এবার সেই দাবিতেই সিলমোহর পড়ল। এদিনের বৈঠকে, ইরানের নীতি পুলিশকে একহাত নিয়েছেন তিনি। ভলকার টার্ক বলেন, ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর এবং বাসিজ ফোর্স প্রতিবাদীদের উপর গুলি চালিয়েছে। কাঁদানে গ্যাস, ব্যাটন চার্জ করা হয়েছে।’ এদিকে, ইরানের প্রতিনিধি খাদিজেহ করিমির বক্তব্য, আইলশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত। কাশ্মীর ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বে বহুবার নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছে তেহরান। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও মোদি সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার পর কিছুটা শুর চড়ালেও তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতি স্বার্থে লোক দেখানো পদক্ষেপ। এছাড়া, চীনকে টেক্কা দিতে ইরানের চাবাহার বন্দরে বিনিয়োগ করেছে দিল্লি। তাই এই মুহুর্তে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন আঘাত আসুক তা মোদি সরকার চাইছে না।।

উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা তদারকি করে থাকে। সেই বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশীর মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। তাদের কণ্ঠেও ‘বেলা চাও’। এমন প্রতিবাদের ভিডিও নিয়ে এখন নেটদুনিয়ায় জোর চর্চা। সূত্র: টাইমস নাউ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Gajiulahsan ২৬ নভেম্বর, ২০২২, ২:৫০ পিএম says : 0
সুবিধাবাদী দেশ ।
Total Reply(0)
abulkalam ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ১১:১০ এএম says : 0
হিজাব দরকার
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন