শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বিরুদ্ধে সময় হলে অ্যাকশনে যাবে বাংলাদেশ

সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের রাজনীতি, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় কর্মরত বিদেশী রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের বক্তব্যের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়ার চিন্তা করছে সরকার। সময় হলে বাংলাদেশ অ্যাকশনে যাবে হঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশি দূতরা কোড অব কনডাক্ট না মানলে শক্তিশালী দেশগুলো চাইলেই ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু শক্তি না থাকায় সে পথে যেতে পারছে না বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ফোসা) উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক চ্যারিটি বাজার’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, ‘বিদেশি দূতরা কোড অব কনডাক্ট মানছেন না। তাহলে বাংলাদেশ কী বিদেশিদের বক্তব্যকে পাত্তা দিচ্ছে?’ জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার মতো দেশ তাদের গত নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার ২০-২১ জন কূটনীতিককে বের করে দিয়েছিল। এছাড়া আমেরিকার আভ্যন্তরীণ যেসব সংস্থা রাশিয়াকে সহযোগিতা করেছিল বলে তারা মনে করেছে, তাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা শক্তিশালী দেশ হওয়ায় এসব পদক্ষেপ সহজেই নিতে পারে। তবে আমাদের সেই শক্তি কিংবা সামর্থ্য নেই। তাই আমরা এ পদক্ষেপ নেইনি। তবে সময় হলে আমরাও অ্যাকশনে যাব।

বিদেশিদের হস্তক্ষেপের কারণে অনেক দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আপনি আফগানিস্তানের দিকে তাকান, এই বিদেশিদের জ্বালায় তারা অনেক কষ্টে আছে। চিলি বিদেশিদের কারণে ধ্বংস হয়ে গেল। ইরানের কথাও চিন্তা করুন। বিদেশিরা আসলে সবসময় তাদের দেশের স্বার্থে কাজ করেন।

উন্নত দেশগুলো বিদেশি দূতদের এক পয়সাও পাত্তা দেয় না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ইদানিং একটা নীতি হয়ে গেছে, এটা খুব দুঃখজনক। তারা বিদেশিদের কাছে ধর্না দেয়। জেনেশুনে তারা যে দেশের কাছে গিয়ে মাতবরি করেছেন, সেই দেশের অবস্থা কিন্তু ভালো না। উন্নত দেশগুলোতে বিশেষ করে আমেরিকাতে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রদূতের এক পয়সাও পাত্তা নেই। ভারতে বিদেশিরা অনেক কথা বলে কিন্তু তারা এগুলোকে পাত্তা দেয় না। যে সমস্ত দেশের সম্মান আছে, নেতৃত্বের সম্মান আছে, তারা বিদেশিদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করে না।

বিদেশিদের কাছে ধর্না দেওয়া লোকদের সম্মানবোধের ঘাটতি আছে মন্তব্য করে ড. মোমেন আরো বলেন, আমার মনে হয়, এখনও আমাদের দেশের অনেকেরই নিজের দেশ সম্পর্কে সম্মানবোধের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। যেখানে বিদেশি এসেছেন, সেখানেই সমস্যা হয়েছে। এজন্য আমাদেরকে তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। তাদের কোনো পরামর্শ আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। তারা বলতে পারেন, আমরা তা শুনতেই পারি। তবে কোড অব কনডাক্ট অনুযায়ী, তারা যদি কিছু জানাতে চান, তাহলে আমাদের সরকারের কাছে জানাবেন।

দেশের গণমাধ্যমকে বিদেশিদের বক্তব্যের বিষয়ে পরিপক্কতার পরিচয় দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের মিডিয়াকে আরো পরিপক্ক হতে হবে। অতীতে বিদেশিরা বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে চেষ্টা করেছেন, বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেছেন। যাদের পছন্দ হবে মানুষ তাদেরই ভোট দেবে। জনগণের প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস। কারণ তাদের রায় কখনো ভুল হয় না।

বিদেশিদের দ্বারস্থ না হতে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়ে ড. মোমেন বলেন, বিদেশিদের কাছে ধর্না না দিয়ে গ্রামে-গঞ্জে আমার দেশবাসীর কাছে যাওয়া দরকার। আমাদের বিরোধীদলগুলো বিদেশিদের কাছে না গেলে তাদেরও মঙ্গল হবে, দেশেরও মঙ্গল হবে। বিরোধীদল বলেন সরকার বলেন দেশটা আসলে সবার। তারাও হয়ত অনেক সময় বিদেশিদের কাছে যেতে চান না। কিন্তু অনেক সময় পথভ্রষ্ট হয়ে তাদের কাছে চলে যান। তবে এটুকু বলতে চাই বিদেশেীদের কাছ থেকে কোনো চাপ অনুভব করছি না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন