পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বর্তমানে জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৫২১ জন নারী শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন। দেশে দুর্যোগ উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের জন্য নিয়োজিত মোট স্বেচ্ছাসেবকদের এক-তৃতীয়াংশই নারী। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) বিকল্প প্রতিবেদন-২০২২ এর ওপর জাতীয় পর্যায়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনের খবরে দেখেছি, চীনের ৪ জন নাগরিকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো। তিনি আরো বলেন, প্রবাসীরা দেশের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। সে কারণে আমরা প্রবাসীদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রতি বছর ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রবাসী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই প্রস্তাব পাস হয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটি সুখবর।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, জাতিসংঘের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে নারীর ভূমিকা জোরদারকরণ বিষয়ক রেজল্যুশন ১৩২৫ বাস্তবায়নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৯ সালে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, যা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় সকল দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসন, বিরোধ নিষ্পত্তি, শান্তিরক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নারীদের সক্রিয় ও অধিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় কর্মপরিকল্পনাটির বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের নারীরা ইতোমধ্যে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে দুর্যোগ উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের জন্য নিয়োজিত মোট স্বেচ্ছাসেবকদের এক-তৃতীয়াংশই নারী। এছাড়া, সহিংস চরমপন্থাসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় নারীদের প্রতিরোধমূলক ভূমিকা অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আমাদের টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ড. মোমেন বলেন, প্রতিটি কন্যাশিশু যেন বৈষম্যহীনভাবে সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে আমরা যে এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি সাধন করেছি, সেটি আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ সরকার দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। আমি আশা করি, নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের জন্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সকল প্রতিশ্রুতি ও বাধ্যবাধকতার সুষ্ঠু ও কার্যকর বাস্তবায়নে বাংলাদশের জনগণ, নাগরিক সমাজ ও সরকার একসাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে। সিডও সনদের অর্থপূর্ণ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিশেষভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন