নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঋণের চাপে শাবানা পারভীন লাইলী (৩৭) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার শহরের রেলওয়ে অফিসার্স কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত শাবানা পারভীন একই এলাকার জাবেদ আলী পাপ্পুর স্ত্রী। তিনি তিন সন্তানের জননী ছিলেন।
পরিবার ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাবেদ আলী তাঁর স্ত্রী শাবানার নামে ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক ও ঠ্যাংগামারা এনজিওসহ স্থানীয় কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার ঋণ নিয়েছিলেন। ওই ঋণের কিস্তি প্রতিদিন পরিশোধ করতে হতো। স্বামীর সামান্য বেতনে শাবানার পক্ষে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। একপর্যায়ে ব্যাংক, এনজিওসহ অন্যরা সুদে টাকার জন্য প্রতিনিয়ত তাগাদা দিতে থাকে। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন শাবানা। এরই জেরে আজ বেলা ১১টার দিকে সবার অগোচরে পেয়ারা গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন শাবানা।
মৃতের শিশু সন্তান জিসান আহমেদ (১০) বলে, ‘আমার মায়ের নামে অনেক টাকা ঋণ নেওয়া ছিল। ওই টাকার জন্য লোকেরা বাড়িতে এসে সব সময় বসে থাকত। কিন্তু টাকার সমস্যার জন্য কিস্তি দিতে পারত না। তাই আজ আমার মা মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছেন।’
শাবানার স্বামী জাবেদ আলী বলেন, ‘আমি একটি বেসরকারি কোম্পানির স্থানীয় বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতাম। তিন মাস আগে আমার চাকরি চলে যায়। পরে ব্যবসা করার জন্য দুটি ব্যাংক, একটি এনজিও ও তিনজনের কাছ থেকে স্ত্রীর নামে ঋণ নিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যবসায় সব টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। অপরদিকে, অভাবের কারণে ঠিকভাবে কিস্তি দিতে পারছিলাম না। কিন্তু যাদের কাছে টাকা নিয়েছিলাম তারা প্রতিদিন চাপ দিত। এ কারণে মানসিক চাপে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।’
রোববার (০৪ নভেম্বর,) এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে পরিবারের কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন