ঢাকায় গণসমাবেশ উপলক্ষে লিফলেট বিতরণের সময় বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে জবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় ছাত্রদল সমর্থকদের পাল্টা হামলায় উভয় পক্ষে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ইশরাক তার সমর্থকদের নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকের সামনে পৌঁছালে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জবি শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আহতর সংখ্যা দাবি করা হয়েছে ২০-২৫ জন এবং শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ৭ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন প্রায় শতাধিক বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এলে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী হামলা করেন। এসময় ইশরাক হোসেনের সঙ্গে থাকা বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এরপর ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী প্রধান ফটকের সামনে এসে সংঘর্ষে জড়ান।
এর আগে ইশরাক হোসেন মতিঝিল, গোপিবাগ এলাকায় গণসংযোগ চালান। সেই সময় ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে বাসায় বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশি হয়রানির অভিযোগ এনে নেতাকর্মীদের হয়রানি না করার জন্য ওয়ারী থানায় অনুরোধ জানান।
গোপীবাগ এলাকায় সংযোগ শুরু করে ওয়ারী, ইত্তেফাক মোড় হয়ে বংশাল, জয়কালী মন্দির, টিপু সুলতান রোড, রথখোলাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে ছাত্রদলের গুরুতর আহত মনোয়ার নামে একজনকে পুলিশ আটক করে সূত্রাপুর থানায় এবং আরেকজনকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। ছাত্রলীগের গুরুতর আহত দুই জনকে চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান মাতব্বর জানান, ‘বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকলে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাদের বাধা দেন। এরপর ইশরাকের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর হামলা করেন। পরে ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী এসে হামলা করলে ইশরাকসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যান। ছাত্রদলের দুই জনকে পুলিশ আটক করে একজনকে সূত্রাপুর ও আরেকজনকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়।’
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ‘ইশরাক ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছলে শাখা ছাত্রলীগ রড, হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা করেছে। এতে জগন্নাথ ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ইউনিটের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। যারা মিটফোর্ডসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা জগন্নাথ ছাত্রদল এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন বলেন, ‘বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের সামনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আমাদের কয়েকজন এতে বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়। পরে আমাদের বেশ কয়েকজন ছোট ভাই পাল্টা আক্রমণ করে তাদের প্রতিহত করে। এ ঘটনায় আমাদের সাত জন নেতাকর্মী আহত হয়।’
এছাড়াও ঘটনা ভিডিও ধারণ করার সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন প্রতিনিধির (সাংবাদিক) উপর আক্রমণ করা হয়। পরে তাদেরকে মেডিকেলে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত জবি প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পরিবেশ এখন শান্ত আছে। প্রক্টরিয়াল বডি সতর্ক অবস্থানে আছে। কতজন আহত হয়েছে, কোনো পক্ষ থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন