হঠাৎ রাজপথে বারুদের গন্ধ। গতকাল পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। টিয়ারসেল নিক্ষেপ গরম পানির গাড়ি সংঘাট-সংঘর্ষে এক বিভীষিকাময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিএনপির নেতাকর্মীসহ পথচারীরা প্রাণভয়ে ছুটাছুটি করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে এই উত্তাল অবস্থা। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন মকবুল আহমেদ নামে এক পথচারী। বিএনপি নেতাকর্মী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে এবং অভিযান চালায়। সেখান থেকে এবং আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। বিএনপি বলছে, তাদের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাকে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। পুলিশ কার্যালয় ঘিরে রেখে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া এই ঘটনা রাত অবধি বিরাজমান ছিল। বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে পুরানা পল্টন, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা, কাকরাইল মোড়, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা মোড়, আরামবাগ এলাকাসহ চারদিকে ধাওয়া করে পুলিশ। এসময় জমায়েত দেখা মাত্রই টিয়ারসেল, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়েন তারা। পাশাপাশি রায়টকার, এপিসি দিয়ে নয়া পল্টনের চারপাশে মহড়া দেয় পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াত। সংশ্লিষ্ট এলাকার চারপাশে পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসংখ্য সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আতঙ্কে অত্র এলাকার চারপাশের দোকনপাট সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে দুইদিন ধরে নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সেøাগান, প্রতিবাদ সমাবেশ করছিলেন তারা। গতকাল বুধবারও সকাল থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন এবং গণসমাবেশ সফল করতে নানা সেøাগান দেন। এসময় সড়কের একপাশ দিয়ে যান চলাচল করছিল। তবে দুপুরের দিকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়ে গেলে সড়কের অনেকটা অংশজুড়ে তারা অবস্থান নেন। এসময় সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বেলা পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। এসময় পুলিশ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে। তারাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ পাল্টা জবাবে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। এতে বিএনপি নেতাকর্মী, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় স্পেশাল বাহিনী সোয়াতও।
সরেজমিনে দেখা যায়, নয়াপল্টনে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে, আতঙ্কে তাদের অনেকে দিগি¦দিক ছুটোছুটি করতে থাকে। অনেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উপরে উঠে আশ্রয় নেয়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াও হয়। এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, জবাবে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ছুঁড়ে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, পুলিশ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরেও মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় ভেতরে দলটির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কার্যালয়ের সামনে পুলিশের লাগাতার টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে টিকতে না পেরে পিছু হটে বিএনপি নেতাকর্মীরা। আশপাশের গলিতে অবস্থান নেয় তারা। পরবর্তীতে পুলিশও প্রতিটি গলিতে ঢুকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে মকবুল আহমেদ নামে এক পথচারী নিহত হন। আহত হন তিন শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল আহমেদ। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় মকবুলকে এক ব্যক্তি হাসপাতলে নিয়ে আসেন, যিনি নিজের নাম মোস্তাফিজুর রহমান বলে জানিয়েছেন। ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি পথচারী, রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মকবুলকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষের পর নয়াপল্টন এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা ওই এলাকা ছেড়ে দেন। এতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আটকা পড়েন শতাধিক নেতাকর্মী। বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে অভিযান চালায়। সেখান থেকে অন্তত ৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি। এর মধ্যে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ৩৫ জন, এর কিছুক্ষণ পর ১০-১২ জন, এর আগে আরও ৪টি প্রিজন ভ্যানে অন্তত ৪০ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান বিএনপি নেতারা।
এসময় একে একে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়, প্রথমে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েলকে। এর কিছুক্ষণ পর বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে। আর সন্ধ্যার দিকে আটক করা হয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে।
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে ছাত্রদলের সাবেক নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত বলেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসেছে। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করছিলাম। পুলিশ অতর্কিতভাবে দুই দিক থেকে আমাদের ওপর হামলা করে। ছররা গুলি ও টিয়ারশেল এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এখন আমাদের যাকে যেখানে পাচ্ছে, পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পুলিশের একটি দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে অভিযান শুরু করে। সেখানে তারা নেতাকর্মীদের বেদম পিটিয়েছে। একপর্যায়ে বিকেল সোয়া চারটার দিকে অসংখ্য পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান শুরু ও শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে। তারা কার্যালয়ের প্রবেশপথের সাথে অবস্থিত জিয়াউর রহমানের ম্যুরালেও আঘাত করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন এই সংঘর্ষ শুরু হলো। বুধবার পল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে।
আহত তিন শতাধিক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আটক হওয়ার আগে জানান, পুলিশ নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সরাসরি গুলি ও অসংখ্য টিয়ারশেল ছুঁড়েছে। এতে কার্যালয়ের ভেতরে এক অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানে কমপক্ষে শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও টিয়ারশেলের আঘাতে তিন শতাধিক আহত হয়েছেন। কার্যালয়ের ভেতরে বিএনপির সিনিয়র নেতারাসহ এক হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এসময় বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, খন্দকার আবু আশফাক, শিরিন সুলতানা, অঙ্গসংগঠনের আবুল কালাম আজাদসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী। পুলিশের ছোঁড়া টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো নয়াপল্টন এলাকা। দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ থেকে আহতদের উল্লেখযোগ্য হলেনÑ কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম, মীর নেওয়াজ আলী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বেনজীর আহমেদ টিটো, ফজলুল হক মিলন, খন্দকার আবু আশফাক, তারিকুল আলম তেনজিং, যুবদলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, নাজমুল হাসান, মেহবুব মাসুম শান্ত, আরিফা সুলতানা রুমাসহ তিন শতাধিক নেতাকর্মী।
নিহত মকবুল বুটিক কারখানার মালিক : পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে নিহত মকবুল হোসেন মিরপুরে একটি বুটিক কারখানার মালিক ছিলেন বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের অদূরে সংঘর্ষকালে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে সড়কের পাশে পড়ে থাকেন ওই ব্যক্তি। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই সংঘর্ষে পুলিশ, পথচারী ও বিএনপির নেতাকর্মীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। তাদের মধ্যে অন্তত ২৫ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী হালিমা খাতুনসহ স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে মকবুলের লাশ শনাক্ত করেন। নিহতের বড় ভাই আব্দুর রহমান বলেন, তারা মিরপুর ১১ বাউনিয়া বাধ লালমাটি এ ব্লকের টিনসেট কলোনিতে থাকেন। তার ভাই কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তারা বাসায় বুটিকের কারখানা চালাতেন। বুধবার সকালে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারে কারখানার মাল কিনতে ১ হাজার টাকা নিয়ে বের হয় তার ভাই। পরে টেলিভিশনের মাধ্যমে জানতে পারেন, মকবুল নামে একজন পল্টনে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। পরে ঢাকা মেডিকেলে এসে ভাইয়ের মৃতদেহ দেখতে পাই। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার উদিমেরচড় গ্রামে।
মকবুলেরর স্ত্রী হালিমা আক্তার বলেন, কারখানার মাল কিনতে পুরান ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। বিএনপির ওখানে তো তার স্বামীর যাওয়ার কথা নয়। পরে জানতে পারেন, পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলেছে। হালিমা জানান, তার ঘরে মিথিলা (৮) নামে এক মেয়ে সন্তান আছে। সে একটি মাদরাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তার স্বামী কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের রবিন খান, আনোয়ার ইকবাল, মো. খোকন, মনির হোসেন, মো. রাশেদ, ইয়াসির আরাফাত, মো. সুমন, জহির হাসান, শামীম মো. হানিফ, হৃদয়, মকবুল, ফারহান আরিফ, নূরনবী, সুলতান আহমেদ, মনির, আমিনুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, বিপ্লব হাওলাদার, আসাদুজ্জামান এবং মেহেদী হাসান নয়নের নাম পাওয়া গেছে।
রাস্তায় বসে পড়েন মির্জা ফখরুল: বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান শুরু হলে বেলা সাড়ে চারটার দিকে সেখানে আসেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। মির্জা ফখরুলকে সেখানে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। ফলে কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে বসে পড়েন মির্জা ফখরুল। পুলিশের এই অভিযানের এক পর্যায়ে রুহুল কবির রিজভীকে আটক করা হয়। পরে আমান উল্লাহ আমান, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল সহ কমপক্ষে শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা ভয়াবহ, ভীতিকর ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা আশা করতে পারি না, একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের সামনে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে সেখান থেকে পুলিশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যথায় সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে। নেতাকর্মীদের আটকের পর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ১০ তারিখের সমাবেশের প্রচারের কাজে থাকা দুটি ট্রাক র্যাকার দিয়ে টেনে নিয়ে যায় পুলিশ।
ইউট্যাবের নিন্দা : এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও দলীয় কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। তারা অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো দলের আনুগত্য না করে পেশাদার আচরণ বজায় রাখার আহ্বান জানান। তা না হলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে বলে তারা মন্তব্য করেন।
বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশি হামলার নিন্দা গণফোরামের
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ধরপাকড় ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে গণফোরাম। গণমাধ্যমে গতকাল পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটি এই প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে গণফোরাম নির্বাহী পরিষদের জরুরি বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে পুলিশ হামলায় ১ জন নিহত ও অসংখ্য আহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন