পুলিশি অভিযান আতঙ্কে বাসার বাইরে ছিলেন ওয়ারী থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফয়সাল মাহবুব মিজু। গত বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা। এ সময় ওয়ারী গোপী বসাক লেনের মিজুর বাসায় প্রবেশ করে ৩০-৪০ জনের দুর্বৃত্ত দল। তাদের সকলের মুখে মাস্ক পড়া ছিল। বাসায় ঢুকে তারা যুবদলের এ নেতাকে খুঁজতে থাকেন। তাকে না পেয়ে বাসার মালামাল ভাংচুর করতে থাকে। অপরদিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
বাসায় প্রবেশ করা দুর্বৃত্তদের পরিচয় এবং ছেলেকে খোঁজার কারন জানতে এগিয়ে মিজুর বয়োবৃদ্ধ বাবা এবং পরিবহণ ব্যবসায়ী মিল্লাত হোসেন (৭০)। এ সময় দুর্বৃত্তরা মিল্লাত হোসেনের ওপর চড়াও হয়। তিনি প্রতিবাদ করলে দুর্বৃত্তরা মিল্লাত হোসেনকে পেটাতে শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। মিল্লাত হোসেনের মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। এ সময় দুর্বৃত্তরা বাসা থেকে বের হয়ে চলে যায়। পরিবারের সদস্যরা মিল্লাত হোসেনকে উদ্ধার করে দ্রæত আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তিনি মারা যান। ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তরা আওয়ামীলীগ কিংবা এর অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডার বলে অভিযোগ করেছেন মিল্লাত হোসেনের পরিবারের সদ্যরা।
মিল্লাত হোসেনের ছোট ছেলে ফারহান মাহবুব জানান, আমার বড় ভাই ফয়সাল মাহবুব ওয়ারী থানার যুবদলের নেতা। গত বুধবার রাতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন লোক আমার ভাইকে খুঁজতে আসে। এ সময় লোকজনের সঙ্গে বাবার কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। সন্ত্রাসী মাস্ক পরিহিত থাকায় এবং তাদের বেপরোয়া তান্ডবের কারনে কাউকে চেনা যায়নি। তবে পরিবারের অপর সদস্যদের দাবি, দুর্বৃত্তরা আওয়ামীলীগ কিংবা এর অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডার। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার কারনে তারা মিজুকে হত্যা করতে এসেছিলো। অথবা বিএনপি কোন প্রগামে যাতে মিজু যাতে করে সক্রিয় ভূমিকা না রাখে সেজন্য হুশিয়ারি ও হুমকি দিতে এসেছিলো। কিন্তু তাকে না পেয়ে মিজুর বাবাকেই পিটিয়ে হত্যা করে।
ওয়ারী থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মগে মিল্লাতের লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। গত রাত ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি।
এ ব্যাপারে ওয়ারী থানার ওসি কবির হোসেন হাওলাদার জানান, গত বুধবার রাতে অজ্ঞাত কিছু লোকজন মিল্লাত হোসেনের বাসায় গিয়ে তার ছেলের খোঁজ করে। এ সময় ওই লোকজনের সঙ্গে মিল্লাত হোসেনের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় পড়ে গিয়ে মাথার পেছনে গুরুতর আঘাত লাগে তার। পরে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান।
তিনি বলেন, ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করতে ইতিমধ্যে নিহতের বাসা ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনার রাতে কি ঘটনা ঘটেছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। তার এক ছেলে থানা য্বুদলের নেতা হলেও আরেক ছেলে ছাত্রলীগ নেতা। নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। শোক বাণীতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ওয়ারী থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহŸায়ক ফয়সাল মাহবুব মিজুকে বাসায় না পেয়ে তার বাবাকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। রাতেই তাকে আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন