শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

জেনারেলের পকেট থেকেই জন্ম বিএনপির : শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জেনারেলের পকেট থেকেই বিএনপির জন্ম, মাটি ও মানুষ থেকে এদের জন্ম হয়নি। এরা সব সময় মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। ২০০১, ২০০৬ সালে প্রতিবার তারা ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে শেষবারের মতো দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপির আমলে দুর্নীতিই ছিল নীতি। এছাড়া জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস লুটপাট মিলে দেশে আরেকটি কালো অধ্যায় শুরু হয়। বিএনপির রাজনৈতিক ধারাবাহিকতাই ছিল অগণতান্ত্রিক, অবৈধ উপায়ে।

সন্ধ্যা ৭টার দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধী জামা-কাপড় ইস্ত্রি করে বসেই থাকেন অগণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার জন্য। আর যারা কোন উন্নয়ন চোখে দেখে না, তারা বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধি। তারা যেকোনভাবে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে চায়। কারণ অগণতান্ত্রিক সরকার এলে তাদের কদর বাড়ে। তারা অগণতান্ত্রিক সরকারের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। তিনি বলেন, যাদের চোখ আছে তারা উন্নয়ন দেখবে, আর বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধীরা কোনও উন্নয়ন দেখে না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তাদের মূল্য বাড়ে। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ চললে তাদের হতাশা লাগে। নির্বাচিত সরকার হটিয়ে অনির্বাচিত কাউকে ক্ষমতায় আনলে দেশের কোনও ভালো হবে না। তাদের জ্ঞান-বুদ্ধিকে দেশের কল্যাণী কাজে লাগানোর আহবান জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে ছিল গভীর চক্রান্ত। জনগণের ভোট আওয়ামী লীগ পেয়েছিল, কিন্তু ক্ষমতায় বসতে পারেনি। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামল ছিল জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও লুটপাটের। বিএনপির সময় দুর্নীতিই নীতি হয়ে যায়। যখন আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে তখনই মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার নিজেকে জনগণের সেবক মনে করে এবং সেটাই করে। তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচন নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ ছিল না। সে সময় বিএনপির সব পছন্দের লোকই ক্ষমতায় থাকার পরও যে দল ৩১টি আসন পায়, সে দল জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসবে- এটা বিএনপির নেতারা কীভাবে মনে করে। যে দলের নেতারা বিদেশে টাকা পাচারের জন্য শাস্তি পাওয়া, গ্রেনেড হামলায় শাস্তি পাওয়া; তারাই আবার টাকা পাচার নিয়ে কথা বলে। যে দলের নেতারা গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান, মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত, জনগণের ভোটে তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় যাবে এ স্বপ্ন তারা কীভাবে দেখে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে এখন বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা, আর পাচার করা টাকায় দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করা তার (তারেক জিয়া) কাজ। দেশের যে টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে, এখন সেই টাকাই বিদেশে দেশের বদনাম করতে ষড়যন্ত্র করছে, বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক চলছিল।

নৌবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : এদিকে নৌবাহিনীর কমিশন্ডপ্রাপ্ত নতুন কর্মকর্তাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ‘মিডশিপমেন্ট ২০২০ আলফা ব্যাচ’ এবং ‘ডাইরেক্ট এন্ট্রি ২০২২ ব্রাভো ব্যাচ’-এর ক্যাডেটদের শীতকালীন প্রেসিডেন্ট কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সততা, নেতৃত্ব ও আত্মউৎসর্গের গুণে বলীয়ান হয়ে, সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি দেশের স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনাদেরকে (নৌবাহিনীর সদস্য) সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশকে একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী সব সময়ই দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা যে কোন দুর্যোগ চলাকালে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও ত্রাণ বিতরণ করেছে। তিনি বলেন, আমি চাই নৌবাহিনীর নতুন কর্মকর্তারা আন্তরিকভাবে কাজ করুক। আপনাদের সব সময়ই শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে হবে এবং দেশপ্রেমকে হৃদয়ে ধারণ করে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। তিনি বলেন, নতুন কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে এবং যথাযথভাবে নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তারা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে এবং সেই বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক প্রযুক্তির জ্ঞানে নিজেদের প্রস্তুত করবে। আমাদের অর্থনীতি ও যে কোন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ডিজিটালি সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশ একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ও ‘উন্নত বাংলাদেশে’ পরিণত হবে- যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্ভাব্য বহিঃশত্রæর আক্রমণ প্রতিরোধে সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম করতে তাঁর সরকার সর্বাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সমৃদ্ধ একটি অত্যাধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কারো সঙ্গে যুদ্ধে না জড়িয়ে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট। একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ এর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে। আমি সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক কারিগরি জ্ঞান সমৃদ্ধ ও সর্বাধুনিক সরঞ্জামাদিতে সজ্জিত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই- যাতে করে আমরা সম্ভাব্য বহিঃশত্রæর হামলা প্রতিহত করতে পারি এবং যদি কোন যুদ্ধ হয়, তবে তাতে জয়লাভ করতে পারি। এ লক্ষে তাঁর সরকার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়েছে এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী রণতরী নির্মাতা ও সিস্টেমে পরিণত হচ্ছে এবং এর ফলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। বাংলাদেশ নিজস্ব ব্যবহারের জন্য স্থানীয় শিপইয়ার্ডেই জাহাজ নির্মাণ করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী খুলনা শিপইয়ার্ডে পাঁচটি টহল জাহাজ ও দুটি বৃহৎ টহল জাহাজ নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। আরো পাঁচটি টহল জাহাজের নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের নৌবাহিনী তিন বাহিনীর জন্য আইএফএফ (আইডেন্টিফিকেশন অব ফ্রেন্ড এন্ড ফো) সিস্টেম প্রস্তুত করেছে। এখন নৌবাহিনী (রণতরী ও সিস্টেমের) ক্রেতা থেকে একটি ‘নির্মাতা’ বাহিনীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। আর এভাবে এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, স্থানীয় প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টালেনের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত- যেটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল। বিএনএস শের-এ-বাংলার নির্মাণকাজ চলছে। কক্সবাজারের পেকুয়ায় একটি স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মিত হচ্ছে। তাঁর সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে সরকার এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।

গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ৪টি ফ্রিগেট, ৬টি কর্ভেট, ৪টি বৃহৎ টহল জাহাজ ও ২টি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১ রণতরী যুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ স¤প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে নৌবাহিনী ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ-২০২২’ আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি ছাদ খোলা গাড়িতে চড়ে পাসিং আউট প্যারেড পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে, ২০২০ আলফা ব্যাচের মোট ৩৫ মিডশিপমেন কমিশন্ডপ্রাপ্ত হন। ২০২২ ব্রাভো ব্যাচের ৬ জন ডাইরেক্ট এন্টি অফিসার হিসেবে উন্নীত হন। প্রধানমন্ত্রী সেরা দুজন অল-রাউন্ড মিডশিপমেন্টের হাতে সোর্ড অব অর্নার ও সিএনএস গোল্ড মেডেল এবং সেরা ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারের হাতে বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক তুলে দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Md Enam ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৪৬ এএম says : 0
যার যে অবস্থান সেই রকম কথা বলতে হয়। আপনার কথার সাথে সাথে দলীয় নেতা কর্মীরা আরও বেশি ... খুজে পায়।।
Total Reply(0)
Ismail Sagar ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৪৭ এএম says : 0
দ্রব্যমূল্যের এমন চড়া দামে সাধারন মানুষ দিশেহারা! এই বিষয়ে কোন চিন্তা নাই! কারন জনগনের দরকার নাই!
Total Reply(0)
Md Ali Azgor ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৪৮ এএম says : 1
Congratulations.wellcome to of our best honorable real current Primeminister with Sheikh Hasina daughter of democratic leader government people’s Republic of digital Bangladesh! joy Bangla!
Total Reply(0)
Zakaria Mirza ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৪৮ এএম says : 0
খুব ভাল খবর,কিন্তু ১৪ বছরে কোন জিনিষ পত্রের দাম কমাইতে পারলো না,যে সব জিনিষের দাম বিশ্ব বাজারে কম,অইসব জিনিষের দাম বাংলাদেশে বেশ্বি তার কারন কি..??
Total Reply(0)
Anarul Mia ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৪৯ এএম says : 1
শেখ হাসিনার মতো দূরদর্শী নেতৃত্ব আছে বলেই বাংলাদেশ আজ সঠিক পথে এগিয়ে চলেছে।
Total Reply(0)
Ayon Zaki ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৪৯ এএম says : 1
নেত্রীর কাছে অনুরোধ, উন্নয়নের পাশাপাশি, সাধারণ জনগণের জন্য,খাদ্যর দাম কমানো হোক।তাহলে তৃণমূলে আরো আমাদের কাজ করে সুবিধা হবে।
Total Reply(0)
Md Rashed Khan Rashed ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:৫০ এএম says : 1
বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে আমাদের দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব
Total Reply(0)
Abu talib ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:২০ এএম says : 0
বাংলাদেশের শতের কোটি মানুষ জানে বিএনপির জনম সবাধীনতার ঘোষক জেনরেল জিয়ার পেট ও মস্তিষ্ক থেকে, আপনাকে কে বলল জেনারেলের পকেট থেকে জন্ম বিএপির? উদ্ভট কথাবার্তা আর কত বলবেন শেখ হাসিনা? মানোষ হাসবে তো!
Total Reply(0)
Abdur ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ২:৫২ পিএম says : 0
If General is better then political people , it's should be will-com.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন