আয়তনে ছোট হলেও গত শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকে বেশ অর্থনৈতিক সাচ্ছন্দ্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কাতার। জীবাশ্ম জ্বালানির বিপুল মজুদ মূলত এর কারণ। বর্তমানে পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি বা ক্রয়ক্ষমতার সমতা বিবেচনায় মাথাপিছু জিডিপি ধরলে কাতার বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের একটি। সম্পদশালী দেশ হওয়ার কারণে কাতার একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক মহলে প্রবেশ করতে পেরেছে, তেমনি সেই মহলে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করে উপস্থাপনের চেষ্টা জারি রেখেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ফুটবলের কথা। উপসাগরীয় অন্যান্য দেশের মতো কাতার বেশ কয়েক বছর ধরে খেলাধুলায় বিশেষ করে ফুটবলে বিনিয়োগ করছে। কাতার মনে করে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নির্মাণ ও সুনাম অর্জনে খেলাধুলা কার্যকর মাধ্যম। তাদের এই কৌশলের বিস্ফোরণ ঘটে বিশ্বকাপ ফুটবল ঘিরে। অবশ্য ফিফার কাছ থেকে যে প্রক্রিয়ায় কাতার ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের অনুমতি হাতিয়ে নেয়, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। প্রায় এক দশক ধরে সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময়ে বলেন, ব্যাপক আকারে দুর্নীতি না করলে এই অনুমতি কাতার কখনোই পেত না। তাদের অভিযোগের তীরে বিদ্ধ ফিফা স্বয়ং। সাংবাদিকদের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস বছরখানেক আগে ফিফার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও জালিয়াতির অভিযোগ আনে। মার্কিন ওই দপ্তরের ভাষ্য, বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত ভোট পেতে ফিফার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের দেড় কোটি ডলার ঘুষ দেয় কাতার। সমালোচনার মুখে একপর্যায়ে ফিফার নিন্দিত সাবেক প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটার স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘২০২২ সালের বিশ্বকাপ কোন দেশ আয়োজন করবে, তা বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়। কাতারকে আয়োজক দেশ হিসেবে বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।’ যাই হোক, মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও বিশ্বকাপ আয়োজনের সুবর্ণ সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে কাতার। আনুমানিক ২২ হাজার কোটি ডলার এই আয়োজনে খরচ করে দেশটি। এই অর্থের মধ্যে স্টেডিয়াম নির্মাণে এক হাজার কোটি ডলার এবং বাকি অর্থ ব্যয় হয় রাস্তাঘাট উন্নয়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আতিথেয়তার পেছনে। এসব খরচাপাতির বাইরে ডেভিড বেকহাম, গ্যারি নেভিলসহ আরও কয়েকজন ফুটবল তারকার সমর্থন আদায়ে ব্যয় করে কাতার সরকার। এছাড়া দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে জনসংযোগ (পিআর) বৃদ্ধি ও সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণেও কম খরচ করেনি কাতার। ২০১৪ সালে ব্রিটিশ এক নিউজ চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বকাপ ঘিরে বিতর্ক মোকাবিলায় একটি বৈশ্বিক পিআর ফার্মকে ভাড়া করে কাতার। এদিকে ২০২২ সালের বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক ফুটবল অঙ্গনে দেশটির একের পর এক বিনিয়োগ বেশ লক্ষণীয়। ২০১০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য মনোনীত হওয়ার এক সপ্তাহ পর স্পোর্টস কিট স্পন্সরের লক্ষ্যে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে ২২ কোটি ডলারের চুক্তি করে কাতারের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কাতার ফাউন্ডেশন। এর কয়েক মাস পর ফরাসি ক্লাব পিএসজি কিনে নেয় দেশটির বিনিয়োগ কর্র্তৃপক্ষ। এছাড়া ২০০৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এশিয়ান গেমস, ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপসসহ ২৪টি টুর্নামেন্টের আয়োজন করে কাতার।
২০২২ সালের বিশ্বকাপ কাতারে হবে জেনে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল বিশ্বব্যাপী। ফিফার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে তুমুল বিতর্ক। বিশ্বকাপটি শেষ পর্যন্ত কাতারেই হয় এবং বেশ সফলভাবে। বিশ্বকাপ আয়োজন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাতার ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। এর মধ্য দিয়ে লাভবান হয়েছে দেশটি। কেউ কেউ আবার ভিন্ন কথাও বলছেন। বিশ্বকাপ ঘিরে কাতারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠা থেকে শুরু করে গ্রুপ পর্ব থেকে জার্মানির ছিটকে যাওয়াসহ একের পর এক বিস্ময়কর ঘটনা দর্শকদের উপহার দেয় এবারের কাতার বিশ্বকাপ। অনেকের মনে হতে পারে, এসব কোনো ঘটনাই নয়, খেলার মাঠে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতেই পারে, সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা তো খেলা শুরুর এক যুগ আগেই ঘটে গিয়েছিল! সেটা কী? তাদের মতে, ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার কাতারকে দিয়ে সবাইকে বিস্মিত করে ফিফা। ২০১০ সালের তাদের সেই অবাক করা সিদ্ধান্তের সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর তুলনাই চলে না। যে দেশে ফুটবলের কোনো ইতিহাস নেই, ঐতিহ্য নেই, পর্যাপ্ত পরিমাণে স্টেডিয়াম নেই, হোটেল নেই, মহাসড়ক নেই, সেই ছোট্ট উপসাগরীয় রাষ্ট্র কীভাবে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আয়োজক হয়, তা তারা ভেবে পাননি। কাতারের জনসংখ্যা ৩০ লাখেরও কম। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই অভিবাসী শ্রমিক। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্পোর্টিং ইভেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব ফিফা কীভাবে দেশটিকে দেয়, তা স্বভাবতই সে সময় অনেকে বুঝে উঠতে পারছিলেন না। যাই হোক, মানুষের এসব প্রশ্নের জুতসুই উত্তর যে কাতার দিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১২ বছর পর জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে কাতার দেখিয়ে দিয়েছে, টাকা থাকলে সবই সম্ভব, ইতিহাস-ঐতিহ্যের দরকার পড়ে না। অবশ্য এই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে কাতারকে অন্য দিক থেকে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা গত এক দশকে বেশ কয়েকবার দেশটির বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতিসহ অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি অন্যায় আচরণের অভিযোগ তোলেন। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের গত বছরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আরব উপদ্বীপের দেশ কাতারে ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজারের বেশি অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ওই সময়ে হাজার হাজার শ্রমিককে দেশটিতে অমানবিক পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। কর্মস্থলে তারা নির্যাতনেরও শিকার হন। অভিবাসী শ্রমিকদের বিষয়ে এসব অভিযোগের পাশাপাশি এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকারের প্রতি কাতার সরকারের রক্ষণশীল অবস্থান নিয়েও সমালোচনা ওঠে। বিশ্বকাপের ভেন্যু পরিবর্তনের আহ্বান ও বয়কটের হুমকির মধ্যেই শেষ পর্যন্ত বিশ্বের ৫০০ কোটির বেশি মানুষ পর্দায় ও ১০ লাখের বেশি মানুষ আরব উপসাগরে গিয়ে টুর্নামেন্টটি উপভোগ করেন। ১৮ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এই আয়োজনের পর্দা নামে। অনেকের মনে এখন প্রশ্ন, বিশ্বকাপ কি কাতারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিকে সামনে আনল নাকি দেশটির এ সংক্রান্ত দুর্নাম ধুয়েমুছে সাফ করে দিল।
নব্বইয়ের দশকে মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জোসেফ নাই বলেছিলেন, সামরিক শক্তি ও সম্পদের ওপর নির্ভরতার প্রাচীন ধারণা বিশ্বায়নের এই যুগে অনেকাংশে অচল। আন্তর্জাতিক পরিসরে ক্ষমতাবান হতে হলে উদীয়মান দেশগুলোকে আকর্ষণের রাজনীতি করতে হবে। তাদের এমন কিছুর সঙ্গে যুক্ত হতে হবে যার মাধ্যমে তারা তাদের সংস্কৃতি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবে এবং এর মাধ্যমে বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করবে। বলা বাহুল্য, খেলার কূটনীতিই এক্ষেত্রে সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম এবং এই কূটনীতি সফট পাওয়ারের অংশ। প্রশ্ন উঠতে পারে, এই সফট পাওয়ার কী? রাজনীতিতে সফট পাওয়ার বলতে এমন এক দক্ষতাকে বোঝায় যার বলে উদীয়মান কোনো দেশ তার সমালোচনাকারী দেশগুলোর সঙ্গে দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে তাদের নিজের দলে ভেড়াতে প্ররোচিত করে। একবার দলে ভিড়ে গেলে সমালোচনাকারী দেশগুলোর পক্ষে আর সমালোচনা জারি রাখা সম্ভব হয় না। মূলত আবেদন-নিবেদন ও ঘুষের মাধ্যমে এই দলে টানার কাজ করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার বন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্টুয়ার্ট মুরে বলেন, খেলাকে ব্যবহার করে বিদেশি দর্শক ও প্রতিষ্ঠানের চিন্তায় পরিবর্তন আনা যায়, তাদের আকৃষ্ট করা যায়। এর মাধ্যমে পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নও বেশ সহজ হয়ে যায়।’ কাতার’স গ্লোবাল স্পোর্টস স্ট্র্যাটেজি নামে এক নিবন্ধে জোনাথন গ্রিক্স, পল মাইকেল ব্রানাগান ও ডোনা লি বলেন, ‘খেলার আয়োজন করে দেশগুলো তাদের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ আন্তর্জাতিক দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতে পারে।’ এবারের বিশ্বকাপে বিশ্বের মানুষ এসব বিষয় বেশ ভালোভাবেই প্রত্যক্ষ করে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। বিজয়ী দলের ফুটবলার লিওনেল মেসির হাতে কাপ তুলে দেওয়ার আগে তার গায়ে কালো রঙের একটি আলখাল্লা পরিয়ে দেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। ওই আলখাল্লাকে আরবরা বিশত বলে। ঐতিহ্যবাহী পোশাকটি সাধারণত রাজা-বাদশা থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিয়ের দিনে বর, ঈদসহ অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবে আরব পুরুষরা পরে থাকেন।
ইংল্যান্ডের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের প্রভাষক মুস্তাফা বেগ বলেন, ‘মেসিকে বিশত পরিয়ে কাতারের আমির তাকে সম্মান জানান। এটি আরবের আবহমান কালের সাংস্কৃতিক রীতি।’ কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে খেলাকে ব্যবহারের কৌশল অবশ্য নতুন নয়। ১৯৭১ সালেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে। সে বছর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের টেবিল টেনিস খেলোয়াড়রা সামনাসামনি হন। পিং পং কূটনীতি নামে পরিচিত ওই ঘটনার পরের বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন চীন সফর করেন। এই কূটনীতির মধ্য দিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ২৩ বছরের তিক্ত সম্পর্কের অবসান হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বকাপ আয়োজনের মধ্য দিয়ে কয়েকটি ক্ষেত্রে সফল হয়েছে কাতার। আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাতারের যোগাযোগ এখন নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে বাড়বে। একই সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ ও পর্যটন শিল্পে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে এগিয়ে থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে দেশটির। বিশ্বকাপ আয়োজক কাতারের বিষয়ে বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের অবস্থান ছিল ব্যাপকভাবে নেতিবাচক। বিশেষ করে দেশটির মানবাধিকার লঙ্ঘন ও শ্রমিক নিপীড়নের ঘটনা তাদের চিন্তিত করে। এ বিষয়ে ক্রীড়া লেখক ডেভিড গোল্ডব্ল্যাট বলেন, এটি একেবারেই আপেক্ষিক ব্যাপার। কোন পত্রিকা মানুষ পড়ছে, তার ওপর নির্ভর করে কাতারকে কীভাবে দেখা হচ্ছে। বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ অনেক সংবাদমাধ্যম বিশ্বকাপ ঘিরে কাতারের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, অভিবাসী শ্রমিক মৃত্যুর তদন্ত দাবি করে। অন্যদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে এ বিষয়ে লক্ষণীয়ভাবে মৌন থাকতে দেখা যায় এবং আলজাজিরাসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর প্রায় প্রতিটি সংবাদমাধ্যম বিশ্বকাপ নিয়ে বেশ ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বকাপকে বিবেচনায় নিয়ে নিজেদের পক্ষে জনসংযোগ বাড়াতে ও সংবাদ ছাপতে পিআর প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমের পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছিল কাতার। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই, বিশ্বকাপ আয়োজন কাতারের জন্য যতটা না অর্থনৈতিক, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কূটনৈতিক পদক্ষেপ ছিল। তারপরও বিশ্বকাপকে ঘিরে দেশটির অর্থনৈতিক লাভের দিকটি ফেলে দেওয়ার মতো নয়। কাতারের ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে আয়োজক হিসেবে কাতারের নাম ঘোষণার পর দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগ ও জিডিপি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বকাপের কারণে ২০২২ ও ২০২৩ সালে কাতারের অর্থনীতি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়বে। কূটনৈতিক সম্পর্কের দুয়ার উন্মোচন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিক থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি যতটা সম্ভব সরিয়ে রাখা ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার মধ্য দিয়ে এই মুহূর্তে কাতার প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তাই যদি বলা হয়, মেসির দল আর্জেন্টিনাই এবারের একমাত্র বিশ্বকাপজয়ী দেশ নয়, কাতারও অনেক ক্ষেত্রে জয় পেয়েছে, তাহলে হয়তো খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন