শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আন্দোলনের ঢেউ রাজপথে

বিএনপির তৃণমূল নেতারা কর্মসূচির জন্য মুখিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবির যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিতে ছোট দলগুলো জোট-ফ্রন্ট গঠন করছে জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃ

স্টালিন সরকার | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম


২০১৪ সালের নির্বাচনের পর হামলা-মামলা, জেল-জুলুম-নির্যাতনের কারণে ‘মাঠের রাজনীতি হারিয়ে’ গিয়েছিল। ২০১৮ নির্বাচনের সময় মাঠে রাজনীতি কিছুদিন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাঁধা, বিএনপির নেতাদের কারাগার এবং আদালতের বারান্দায় দৌড়ঝাঁপের কারণে রাজনীতির বল (কর্মসূচি) মাঠে গড়াতে পারেনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইচ্ছামতো কর্মসূচি পালন করতে পারলেও বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোকে দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। কারাগারের ভয় আর অর্ধলক্ষাধিক মামলার ভারে নূজ্ব্য বিএনপির সভা-সেমিনার, ভার্চুয়ালি আলোচনা, ঘরোয়াভাবে কর্মসূচি পালনের মধ্যেই কার্যত সীমাবদ্ধ ছিল। এমনকি রাস্তায় সুশৃঙ্খলভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি, পোস্টার বিতরণে বাধার মুখে পড়তে হতো। কিন্তু ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালী দেশ, দাতা সংস্থা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচি পালনে রাজপথ খুলে দেয়া হয়। এতে করে চাঙা হতে থাকে মাঠের রাজনীতি। এখন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা মুখিয়ে রয়েছেন। তারা বলছেন, কেন্দ্র কর্মসূচি ঘোষণা করলেই রাজপথে তারা ঝাঁপিয়ে পড়বেন।

জানতে চাইলে নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য রফিকুল ইসলাম ভূইয়া রুহেল বলেন, সাধারণ মানুষ এই সরকারের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ। তারা মুক্তি চায়। বিএনপি নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন আন্দোলনের যেকোনো কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুত। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন, আমরা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থেকে সফল করব। মামলা-হামলা জেলের ভয় কোনো কিছুই আমাদের দমাতে পারবে না।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যত জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যেসব উপনির্বাচন ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন হয়েছে সেগুলোতে জনগণকে ভোট দিতে দেয়া হয়নি এবং জনগণ ভোট দিতে যায়নি। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সম্মেলনে আমন্ত্রিত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেয়া হয়। অতঃপর বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার রক্ষাকে এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করে। একের পর এক দেশ; এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপ দিতে থাকে। বিদেশিদের চাপের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে ফিরছে রাজনৈতিক দলগুলো। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের কলেবর বৃদ্ধি করে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ‘বর্তমান সরকারের অধীনে পাতানো’ নির্বাচন করতে চাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সংবিধানের দোহাই দিয়ে দেশি-বিদেশি জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। কিন্তু বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ডান-বাম-মধ্যপন্থি সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা’ দিয়েছে। এ রূপরেখার বেশিরভাগ ধারা বাস্তবায়নের দাবিতে বামদলগুলো দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে।

বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা নিয়ে কারো কারো মতভেদ থাকলেও ‘জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত’ দাবির সঙ্গে সব দলই একমত। ফলে ডান-বাম-মধ্যপন্থি বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল পৃথক পৃথক প্ল্যাটফর্মে থেকে যুগপৎ কর্মসূচি পালনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। পৃথক পৃথকভাবে ‘অভিন্ন কর্মসূচি’ আন্দোলন করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। ‘বিএনপির আন্দোলনের মুরোদ নেই’, ‘খেলা হবে’ ‘বিএনপি মাজাভাঙা দল’ ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের ধারাবাহিক এমন অবজ্ঞাসূচক বক্তব্যের মধ্যেই বিএনপি গত ৩১ জুলাই লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এর আগে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। তৃণমূলের নেতাদের মতামত নিয়ে আন্দোলনের কর্মকৌশল গ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, তিনি বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ে আয়োজিত সভায় নিজের অবস্থান তুলে ধরেন এবং কর্মসূচি প্রণয়ন করেন। অতঃপর ২২ আগস্ট থেকে বিভিন্ন দাবিতে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। বেশ কয়েকটি দাবিতে ১২ অক্টোবর থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে গণসমাবেশ করেন। বিএনপির বিভাগীয় এসব গণসমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম হওয়ায় সরকারের নীতি নির্ধারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। একদিকে বিদেশি চাপ অন্যদিকে বিভাগীয় গণসমাবেশে ফিনিক্স পাখির মতো বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি সরকারের নীতি নির্ধারকদের ‘বিপদের পূর্বাভাস’ মনে হতে থাকে। ফলে একের পর এক বিভাগীয় সমাবেশের আগে সরকার নানা কৌশলে পরিবহণ ধর্মঘট, পথে পথে দলীয় কর্মীদের প্রহরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে চেকপোস্ট বসিয়েও জনশ্রোত ঠেকাতে চেষ্টা করে। কিন্তু জনস্রোত ঠেকানোর চেষ্টা বালির বাঁধের মতো ভেঙে যায়। দেখা যায় সমাবেশের দুই-তিন দিন আগে হাজার হাজার নেতা-কর্মী চিড়া-মুড়ি নিয়ে মাঠে হাজির হচ্ছেন। কেউ কেউ একশ থেকে দুইশ কিলোমিটার পথ হেঁটে হাজির হচ্ছেন। দেশের গণমাধ্যমে সচিত্র এইসব খবর প্রচার হয় এবং বাধ্য হয়ে সরকারের আজ্ঞাবহ গণমাধ্যমগুলোও সে খবর প্রচার করে। এর মধ্যে ১০ ডিসেম্বরের ঢাকায় গণসমাবেশ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিএনপির সমাবেশের নামে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং সেটা দেশ-বিদেশে প্রচার হয় সে জন্য ফাঁদ পাতানো হয়। বিএনপি সেই পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। বাধা-বিপত্তি-গণগ্রেফতারসহ নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখেও রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপি স্মরণকালের জনসমবেশ ঘটিয়ে সমাবেশ করেন। সেখানে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিএনপির এমপিদের সংসদ থেকে পদত্যাগ সরকার সাময়িক হলেও রাজনৈতিক ধাক্কা খায়।

‘ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি’ এমন পরিস্থিতিতে যে দলগুলো জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার সে দলগুলো যুগপৎ আন্দোলনের পথে অগ্রসর হচ্ছে। নতুন এই কৌশল কার্যত ৯০ এর এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং ২০০৬ সালের বিএনপির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের আদলে হতে যাচ্ছে।

পৃথক পৃথকভাবে অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল অভিন্ন দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে নামবে। নতুন এ কৌশল কার্যকরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেয়া হয়েছে। বিএনপির কর্মসূচিতে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতে এরই মধ্যে ১২ সমমনা দল জোট গঠন করেছে। নাম দেয়া হয়েছে ‘১২ দলীয় জোট’। এ জোটের শরিকরা হচ্ছে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাগপা, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, এনডিপি, এলডিপি (আব্বাস-সেলিম), মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং সাম্যবাদী দল। জোট গঠনের ঘোষণা দিয়ে জোটের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, ‘বিএনপির সাথে আমাদের বোঝাপড়া ও ঐক্য আগের মতোই থাকবে। যে রাজনৈতিক দলগুলো এ ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে, তাদের অংশগ্রহণে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে আমরা নতুন কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’

সাবেক ২০ দলীয় জোটের শরিক ৭টি দলের সমন্বয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে প্রধান সমন্বয়ক করে নতুন আরেকটি জোট আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এই জোটে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ছাড়াও থাকবে অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট, সাদেক শাওনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাপ, খন্দকার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার একাংশ), অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী), সাইফুদ্দীন মনির নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) ও অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ পিপলস লীগ। এ ছাড়াও অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা এবং এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন গণদল ও এই জোটের শরীক হিসেবে নেয়ার লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। এই জোট ও ফ্রন্ট সবার উদ্দেশ্যে বিএনপির নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মাঠের আন্দোলনে পৃথকভাবে অংশগ্রহণ করা। এর আগে গত ৮ আগস্ট ৭টি দল নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ তৈরি করা হয়। এ মঞ্চে রয়েছে আ স ম আবদুর রবের জেএসডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, সাইফুল হকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জোনায়েত সাকির গণসংহতি আন্দোলন, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলের ভাসানী অনুসারী পরিষদ, নুরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদ ও হাসানাত কাইয়ুমের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এ জোটও বিএনপির জোটের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়াও কর্নেল (অব.) আলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ইতোমধ্যেই বিএনপির দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। আর জামায়াত ’৯০-এর এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং ’৯৪ সালের আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচির মতো জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলনে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

এর আগে ৭টি বাম দলের সমন্বয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট গঠন করা হয়। দলগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন। তারও আগে আরেকটি জোট ‘গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য’ গঠন করা হয়। জোটের দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম এল), জাতীয় বিপ্লবী পার্টি, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাংলাদেশের সোশ্যালিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমতা পার্টি ও বাংলাদেশের শ্রমিক পার্টি।

জানতে চাইলে যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পবির্তন আসুক। তবে সেটা অবশ্যই হতে হবে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। কিন্তু বর্তমান স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের নামে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা চায় আবারো ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে। তাই স্বৈরাচার সরকারকে হটাতে আমাদের সামনে এখন আন্দোলনের বিকল্প নেই। আমাদের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মীরা এখন সংগঠিত। তারা শুধু কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায়। যেকোনো কর্মসূচি সফল করতে তারা প্রস্তুত। বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মসূচি তারা রাজপথে থেকে সফল করেছে। আগামী দিনেও করবে।

ঢাকা মহানগরের এক নেতা বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে হামলা, মামলা, গ্রেফতার এগুলো এখন কোনো বড় বিষয় নয়। সকলেই এগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এসব করে আর আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। এখন বিএনপির কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বেড়েছে। প্রতিটি কর্মসূচিতে যেভাবে মানুষ অংশ নিচ্ছে তাতে প্রমাণিত হয় তারা আওয়ামী সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়, যার নেতৃত্ব আশা করে বিএনপির কাছ থেকে।

ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও রাণীশংকৈল পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মো. আক্তারুল ইসলাম বলেন, বিএনপির কর্মসূচি এখন সাধারণ মানুষের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। যতই সময় যাচ্ছে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। কেন্দ্র থেকে যে কর্মসূচিই দেয়া হচ্ছে আমরা তা বাস্তবায়ন করছি। হামলা, মামলা, গ্রেফতার কোন কিছুই আর নেতাকর্মীরা পরোয়া করে না। তবে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এখন সরকার পতনের কঠোর কর্মসূচি চায়। আমরা কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। যখন যে নির্দেশনা আসবে তা প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখে বাস্তবায়ন করব। রংপুর সদর উপজেলার এক নেতা বলেন, বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছে যে, গুলি করে, হামলা করে বিএনপিকে আর দমিয়ে রাখা যায় না। কারণ যতই হামলা, হত্যা, মামলা করা হচ্ছে ততই মিছিল সারি দীর্ঘ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ আমাদের আন্দোলনে শামিল হচ্ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Naser Ahmed ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:২৪ এএম says : 0
শুধু শুধু নির্বাচন করে দেশের সম্পদ নষ্ট করার কী দরকার, যেখানে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা ছাড়া অন্যদের ক্ষমতায় যাবার কোন সম্ভাবনাই নাই? আর এতে গন্ডগোল লেগে কিছু লোকের জীবনহানী হবার সম্ভাবনাও রয়েছে? কী দরকার? যে ভাবে চলছে চলুক না। জনগনতো মেনেই নিয়েছে এই অচলায়তন!
Total Reply(0)
Mamun Afnan ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:২৪ এএম says : 0
নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে জনগন অংশ নিবেনা। আর আওয়ামীলীগ এমন কি অপকর্ম করেছে যে ক্ষমতা ছাড়তে চরম ভয় পাইতেছে।
Total Reply(0)
Mominur Rahman Chowdhury ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:২৪ এএম says : 0
সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড ও নীতিনির্ধারক দের মন্তব্য থেকে বুঝা যায় সরকার কোনভাবেই সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ সৃস্টি করবে না। পাতানো অরাজকতা, হত্যাকান্ড বাড়তে পারে। কেউ অস্ত্রের মুখে আন্দোলন করে পারে না। বাংলাদেশে মনে হয় গণতন্ত্র হত্যাই হয়ে যাবে। আর এদেশের সিভিল সোসাইটি অন্ধ ও বিক্রিত হয়ে গেছে। এককথায় জাতি এখন দিশেহারা।
Total Reply(0)
Rashed Jaman ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:২৭ এএম says : 0
এটাতো কোনো অনুসন্ধান বা বিতর্কের বিষয় নয়। খুবই সোজা ও বাস্তব সত্য। অাওয়ামীলীগ অবৈধ উপায়ে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করে অাছে বিগত ২০১৪ সাল থেকে। তারা এটা করতে পারছে একটি বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে। এর বিনিময়ে তারা জনগনের সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব - দুটোই সেই প্রভুদের হাতে তুলে দিয়ে নিজে পুতুল সরকারের ভূমিকায় অাছে। তারা চেষ্টা করছে এভাবে যতদিন সম্ভব ক্ষমতায় থেকে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে পুরোপুরি অকার্যকর বা সম্ভব হলে নির্মুল করে দিতে। এভাবে অন্য রাষ্ট্রের গোলামী করে হলেও নিজ দেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে এখন তারা মরিয়া। কারন তারা জানে যে মোটামুটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন হলে তারা ১০ টি সংসদীয় অাসনেও জিততে পারবেনা। তাই যেকোনো উপায়ে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরী করে অাগামী নির্বাচনেও ভোট ডাকাতি করে নির্লজ্জভাবে সাংবিধানিক পদ্ধতির দোহাই দিয়ে পুনরায় ক্ষমতা দখলে রাখতে।তারা এটাও জানে যে কোনোভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন মানেই তাদের নিশ্চিত পতন অার পতন মানেই তাদের পরিবার ও নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত হাজার হাজার কোটি টাকার বিত্ত - বৈভব হারানো, হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার ও গুম- হত্যা- রাহাজানি - ধর্ষণ - নির্যাতনের বিচার....। সারাদেশের মানুষ এগুলো খুব ভালোভাবে জানে ও বোঝে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ অাবারো সেটা হতে দেবে কিনা, যদিও রাস্তায় নামলে মানুষকে নির্বিচারে গুলি করা হয়।
Total Reply(0)
Mohmmed Dolilur ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৩:০২ এএম says : 0
জয় বাংলাদেশ জয় জিয়া ,জয় খালেদা ,জয় তারেক জিয়া ,জয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,জয় রিজভি,জয় বি এন পির নেতা কর্মী। জয় সংযুক্ত দলগুলি ,নারায়ে তাকবির আল্লা হু আকবর।
Total Reply(0)
Abdul Bari Sarker ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৪ এএম says : 0
নির্যাতিত নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর আন্দোলন কোনদিন বৃথা হয় না । সফল হবেই ইনশাল্লাহ ।
Total Reply(0)
Sharif Sharif ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৯ এএম says : 0
এই সরকার আমাদের দরকার নাই
Total Reply(0)
Md Johir Khan ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০৯ এএম says : 0
সবাই এগিয়ে আসার আহবান
Total Reply(0)
Badal Banik ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:১২ এএম says : 0
প্রতিবাদ চলছে দূর্বার গতিতে।সবার দেখা মিলবে ভাই। ব্যবধান শুধু সময়ের।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন