প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করেছে বহুল কাক্সিক্ষত স্বপ্নের মেট্রোরেল। রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গতকাল এ মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচলকারী সাধারণ মানুষ এই মেট্রোরেলের সেবা পাবেন।
বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম বøুমবার্গ। এতে ঢাকায় মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তাসহ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, মেট্রোরেল শেখ হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক ভাবমর্যাদা বাড়াবে।
‘বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর পেলো প্রথম মেট্রোরেল’ শিরোনামে বøুমবার্গ লিখেছে, ‘বাংলাদেশের রাজধানীর এখন আছে মেট্রোরেলের প্রথম লাইন। জাপানের অর্থায়নে, বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোর একটি অংশ গতকাল উদ্বোধন করেন, যা লাইন-৬ নামে পরিচিত। এ লাইন ঢাকার উত্তর অংশের সঙ্গে মধ্যাংশের সরকারি অফিস ও এবং হাসপাতালগুলোর সংযোগ তৈরি করেছে। পরবর্তীতে এটি শহরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ দিকের বাণিজ্যিক বিভাগ মতিঝিলে যাবে।’
‘এ প্রকল্প ঢাকায় বসবাসরত মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আনবে। সঙ্গে হাসিনার সরকারের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ভাবমর্যাদা বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকাবাসীর বহুল আকাক্সিক্ষত মেট্রোরেলের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটি বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন মাইলফলক।’
বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে বøুমবার্গ লিখেছে, ‘৩০৫ বর্গকিলোমিটারের শহর ঢাকায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। ১০ বছর আগে ঢাকায় যানবাহনের গতি ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। সেখান থেকে তা কমে হয়েছে ৭ কিলোমিটার। কমতে কমতে এটি ৪ কিলোমিটারে নেমে যেতে পারে, যা হাঁটার চেয়েও ধীরগতি।’
ঢাকার মেট্রোরেল নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্টিন রমার দেওয়া একটি বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেছে বøুমবার্গ।
মার্টিন রমা মেট্রোরেল নিয়ে বলেছিলেন, ‘ঢাকার মতো শহরের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক উন্নয়ন। আপনি যদি ভারতের বিভিন্ন শহরের দিকে তাকান দেখবেন মানুষের কাজে যাওয়ার যোগাযোগ পথে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মেট্রোরেল যোগাযোগের নিরাপদ একটি বাহন। বিশেষ করে নারীদের জন্য। দক্ষিণ এশিয়ায় যা গতানুগতিক নয়।’
তবে রমা বলেন, ‘মেট্রোরেলের কারণে ঢাকার যানজট এ মুহ‚র্তেই চলে যাবে এমন চিন্তা করাটা বোকামি হবে। কারণ কোনো যোগাযোগ স্থাপনা তৈরির পর রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের যে চাপ কমে সেটি নতুন বাহনে আবারও ফিরে আসে।’
এরপর বাংলাদেশে যানজটের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে বøুমবার্গ লিখেছে, যানজটের কারণে ঢাকায় প্রতিদিন নষ্ট হয় ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। ফলে প্রতিদিন কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। এছাড়া বিশ্বের বসবাসযোগ্য নয় এমন শহরের তালিকায় ঢাকা যে সপ্তম শহর সেটিও উল্লেখ করেছে এই সংবাদমাধ্যম।
বøুমবার্গের প্রকাশিত প্রতিবেদনটির শেষ দিকে জাপান সরকারের অর্থায়ন ও প্রকল্পের খরচ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে পদ্মাসেতু ও মেট্রোর মতো দুটি বড় বড় অবকাঠামো উদ্বোধন করেছেন সেটিও তুলে ধরা হয়েছে। সূত্র : বøুমবার্গ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন