বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ৬ মাসের অন্তবর্তীকালিন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল (মঙ্গলবার) বিচারপতি মো. সেলিম এবং বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন প্রদানের পাশাপাশি দুই নেতাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না Ñএই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। এই আদেশের ফলে দুই বিএনপি নেতার কারামুক্তিতে আর কোনো বাঁধা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সগীর হোসেন লিওন। সরকার পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবি এম গোলাম মোস্তফা।
আদেশের বিষয়ে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা আদালতে শুনানিতে বলেছি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের নাম মামলার এজাহারে নেই। এছাড়া তারা দুজনই বয়োবৃদ্ধ মানুষ। এ কারণে আদালতের কাছে মানবিক কারণে জামিন প্রার্থনা করেছি। আদালত দুইজনকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন। পাশাপাশি রুল জারি করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা নেই। হাইকোর্টের এই জামিন আদেশের ফলে তারা কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন ৩ বার নাকচ করেন ঢাকার চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম)।
গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও অর্ধশত আহত হন। সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায়। ঘটনার পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক ৪ টি মামলা করে পুলিশ। এতে ২ হাজার ৯৭৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭২৫ জনের। তবে নাম উল্লেখ করা বিএনপির নেতাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস ছিলেন না। ‘উপরের নির্দেশে’ ওই দুই নেতার বাসায় ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে পৃথক অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ ঘণ্টা পর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। পরে তাদের পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে বিএনপি’র দুই নেতার জামিনের পর তাদের কারামুক্তিতে কোনো বাঁধা নেই বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে জামিন স্থগিতের আবেদন জানাবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর। ফলে হাইকোর্ট জামিন দিলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং মির্জা আব্বাস কারামুক্ত হবেন কি না -এ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন