বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস কারামুক্ত হতে পারেন যে কোনো সময়। এ তথ্য জানিয়েছেন দলটির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
গতকাল রোববার আপিল বিভাগ বিএনপি’র দুই নেতার জামিন বহাল রাখার পর তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন। হাইকোর্টের এই জামিননামা (বেইল বন্ড) বিচারিক আদালত হয়ে কারাগারে যেতে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সেই প্রক্রিয়া শেষ হবেন এবং যেকোনো মুহূর্তে তারা কারামুক্ত হবেন।
এর আগে গতকাল সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ সরকার পক্ষে করা আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রাখেন। সেই সঙ্গে গত ৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিননামা দাখিলে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন সেটিও প্রত্যাহার করেছেন আপিল বিভাগ। বিএনপি নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো: জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ। সরকারপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। এ সময় অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, মেহেদী হাছান চৌধুরী সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা মামলায় গত ৩ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ৬ মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী জামিন দেয়া হবে নাÑ এই মর্মে রুল জারি করেন। বিএনপি নেতাদের কারামুক্তি রদ করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে মিস আপিল করে সরকারপক্ষ। চেম্বার জাস্টিস জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম কোনো আদেশ না দিয়ে আবেদনের ওপর শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
এরও আগে এ মামলায় বিচারিক আদালতে মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং মির্জা আব্বাসের পক্ষে ৪ বার জামিন চাওয়া হলেও সেটি নাকচ হয়।
প্রসঙ্গত : গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত হন এবং পুলিশসহ অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষের পর রাতের বেলা পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায়। পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক ৪টি মামলা করে পুলিশ। এতে ২ হাজার ৯৭৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭২৫ জনের। সেখানে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না। ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে নিজ নিজ বাসা থেকে মির্জা ফখরুল ও আব্বাসকে তুলে আনে ডিবি পুলিশ। দু’জনকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। পরদিন তাদের পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন