বিশ্বব্যাংক মঙ্গলবার সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং চীনের দুর্বল প্রবৃদ্ধির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এ বছর মন্দার ‘বিপজ্জনকভাবে কাছাকাছি’ আসবে। তারা ২০২৩ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাষ কমিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানোর প্রবণতা, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ অব্যাহত থাকা ও বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর নড়বড়ে অবস্থানের কারণে দেশগুলো অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে, যা বিশ্ব ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে।
এ উন্নয়ন-বান্ধব ব্যাংকটি জানিয়েছে, তারা ২০২৩ সালে বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে প্রত্যাশা করছে। এটি ২০০৯ ও ২০২০ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়টুকু বাদ দিলে ৩ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ধীর প্রবৃদ্ধির হার। এর আগে ২০২২ সালের জুনে প্রকাশিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা প্রতিবেদনে ব্যাংকটি প্রবৃদ্ধির হার ৩ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছিল।
বিশ্ব ব্যাংক জানায়, এতে উদীয়মান অর্থনীতি ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর বড় আকারের প্রভাব পড়বে। তারা ঋণের বোঝা মোকাবিলা করতে সমস্যায় পড়বে। দুর্বল মুদ্রা, আয়ের প্রবৃদ্ধিতে স্থবিরতা ও বাণিজ্য খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ কমতে থাকায় পরবর্তী ২ বছরে এই দেশগুলোতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হয়েছে, যা গত ২ দশকের তুলনায় অর্ধেক।
বিশ্ব ব্যাংক উল্লেখ করেছে, ২০২২ এর শেষের দিকে এসে জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের কারণে কিছু পরিমাণে মূল্যস্ফীতির চাপ কমে এসেছে, তবে সংস্থাটি সতর্ক করে, সরবরাহ খাতে নতুন করে বিঘ্ন দেখা দেওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি এবং সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির ধারা অটুট থাকতে পারে। সংস্থাটি আরও জানায়, এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো প্রতিক্রিয়া হিসেবে পলিসি রেট বর্তমান প্রত্যাশিত হারের চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে পারে। এসব উদ্যোগের পরিণাম হিসেবে বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
নিম্ন আয়ের দেশগুলোর খাদ্য ও জ্বালানি সংকট, সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী এবং ঋণ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে বিশ্ব ব্যাংক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহবান জানিয়েছে। ব্যাংকটি ভর্তুকি মূল্যে অর্থায়ন ও অনুদান দেয়ার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে বেসরকারি মূলধন ও অভ্যন্তরীণ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া, মানবসম্পদ তৈরি ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করার গুরুত্বের কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। সূত্র: আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন