চট্টগ্রাম ব্যুরো : ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ১৮০ বছর পূর্তির তিন দিনব্যাপী উৎসবের দ্বিতীয় দিনে গতকাল (শনিবার) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও স্কুলের পতাকা উত্তালনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ইউনূস ‘গ্রামীণ’ নাম থাকলে কোনো প্রকল্পে সরকারি অনুমোদন পেতে বড় কষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেন। সামাজিক ব্যবসার আওতায় চট্টগ্রামে একটি নার্সিং কলেজ করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকসংক্রান্ত আইন করতে গিয়ে বিপদে পড়ার এবং পরবর্তীতে সরকারের খুশিতে গ্রামীণ ব্যাংককে সরকারের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। ইউনূস বলেন, আরেকটা নার্সিং কলেজ করার সময় আমাদের এসে গেছে। চট্টগ্রামে একটা জায়গা নিয়েছি। অনন্যা বলে যে আবাসিক এলাকা সেখানে সিডিএ থেকে আমরা একটা জায়গা নিয়েছি। আগামী বছরের মধ্যে কনস্ট্রাকশন শুরু করব। আমাদের ইচ্ছা এটাকে স¤প্রসারিত করে মেডিক্রাল কলেজ এবং হাসপাতাল করা। মেডিক্যোল কলেজ করতে গেলে হাসপাতাল লাগে। কাজেই এই তিনটি জিনিসই আমাদের একসঙ্গে করতে হবে।
প্রতিবন্ধকতা ও অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে ইউনূস বলেন, এসব জায়গায় আমাদের একটা মুশকিল হয়ে যায়, বলাও মুশকিল এসব কথা। সরকারের অনুমোদন পেতে আমাদের বড় কষ্ট হয়। এখানে কেউ গ্রামীণ নাম দেখলেই আর এটাতে হাত দিতে চায় না। যে কোনো বিপদে পড়ি আবার।
অনুমতির জন্য আমরা আটকে থাকি। কাউকে অভিযোগও করতে পারি না। এখানে সমস্যা হয়। কত দিনে দেয়? যদি অনুমোদন দেয় চট করে করে ফেলতে পারব। যদি অনুমোদন না দেয়, অপেক্ষা করতে হবে। আমাদের করার কিছু নেই। সামাজিক ব্যবসা কি এবং কেন সেটাও বক্তব্যে ব্যাখ্যা করেন এই ধারণার প্রবর্তক ইউনূস। উদ্বোধনী বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে এসে সংলগ্ন জোবরা গ্রামে কৃষকের সেচের সঙ্কট মেটাতে তেভাগা আন্দোলন শুরু করার কথাও জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, উদ্দেশ্য ছিল কৃষকরা নিজের খরচে নিজে চলা, কারো কাছে হাত পাততে হবে না। পরবর্তীতে যত কথা বলছি সবকিছুর গোড়া কিন্তু ওইখানে। গ্রামীণ ব্যাংক, সামাজিক ব্যবসাÑ সূত্র এটাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের সভাপতি ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। বক্তব্য রাখেন ১৮০ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলন উদযাপন পরিষদের আহŸায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী এবং সদস্য সচিব মোস্তাক হোসাইন।
বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল থেকেই কলেজিয়েট স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকে। পুরনো বন্ধুদের ফিরে পেয়ে, অনেক সাবেক শিক্ষার্থী ক্যামেরাবন্দি হন সেলফিতে। তিন দিনব্যাপী জমকালো আয়োজনে আরো রয়েছে গুণীজন সংবর্ধনা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রীতিভোজ, স্মৃতিচারণ, র্যাফেল ড্র, রক্তদান কর্মসূচি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন