কাবুলের অন্যতম দরিদ্রতম পাড়ায় প্রতিদিন সকালে মেয়েরা গোপনে পড়াশোনার জন্য একটি বাড়িতে জড়ো হয়। সারা বিশ্বের লাখ লাখ মেয়েরা যেখানে অবাধে শিক্ষা গ্রহণ করছে, সেখানে তাদের এই সুবিধা গোপনেই নিতে হচ্ছে।
বিশ্ব সম্প্রদায় মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস পালন করছে। আফগানিস্তানই একমাত্র দেশ যেখানে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ। শিক্ষা ও পাঠদানের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে মানবিক মর্যাদার ওপর আক্রমণ আখ্যায়িত করে ইউনেস্কো বছরটি আফগান মেয়ে ও নারীদের জন্য উৎসর্গ করেছে।
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পরপরই তালেবানরা দেশের বেশিরভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মেয়েদের জন্য বন্ধ করে দেয়। প্রায় ৫০০ দিন পরেও আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
আফগানিস্তানে মেয়েদের জন্য বেশিরভাগ সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল শূন্য রয়েছে। গোপন স্কুলের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
কাবুলে এই গোপন স্কুলটি একই নেটওয়ার্কের পাঁচটি শহরের আটটি স্কুলের অংশ। স্কুলটি একটি আফগান সংস্থা এসআরএকে দ্বারা সমর্থিত। সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইট অনুসারে, স্কুল নিষেধাজ্ঞা যেসব অঞ্চলে অনেক বেশি সেখানে তারা কাজ করে। পশতু ভাষায় শ্রাকের অর্থ ‘সকালের আলোর প্রথম রশ্মি’।
পারস্তো, এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রয়েছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে কেবল তার প্রথম নামটি ব্যবহার করার অনুরোধ করেন তিনি।
তিনি বলেন, তালেবান দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরপরই তিনি শিক্ষকদের কাছ থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড স্কুল স্থাপনে সহায়তা চেয়ে ফোন পেয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনির সরকারে শিক্ষা ক্ষেত্রে তার সক্রিয় অভিজ্ঞতা থাকায় তিনি এগিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, স্কুল স্থাপন করা কঠিন কিছু নয়, কারণ ‘মহিলা এবং শিশুরা নিজেরাই আমাদের কাছে আসছে এবং সাহায্য চাইছে।’
নিরাপত্তার কারণে পুরো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গণিত শিক্ষক, এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, আমি উপলব্ধি করেছি যে শিক্ষার্থীরা এবং আমি একে অপরের জন্য প্রয়োজনীয়। আমরা দু'জনেই একে অপরকে আশার আলো দেখিয়েছি।
বেশিরভাগ পরিবার খরচ বহন করতে অপারগ হওয়ায় এই গোপন বিদ্যালয়গুলোতে বিনামূল্যে শিক্ষা দেয়া হয়। সদস্য এবং সমর্থকদের সাহায্যে স্কুলগুলো চলে। সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন