কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গত সোমবার দুপুর থেকেই তিনি অসুস্থ বলে জানান রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা আইভী। তিনি বলেন, রুহুল কবির রিজভী কারাগারে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সোমবার দুপুরে তিনি প্রচÐ পেটে ব্যথা অনুভব করেন। সঙ্গে বমিও হয়েছে। পরে তাকে করাগারের ভেতরে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি জানান, আমি সোমবার কারাগেটে গিয়েছিলাম কিছু বই দিতে। সেসময় কিছুই জানতে পারিনি।
রিজভীর স্ত্রী আরো জানান, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর মাঝে-মধ্যে তার পেটে সমস্যা হতো। সেই থেকে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না। খোলা পানিও খান না। চিকিৎসকের পরামর্শে বোতলজাত পানি পান করতে হয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভীকে। তিনি পানির বোতল পাঠিয়েছেন কারাগারে। কিন্তু রিজভীকে খেতে দেওয়া হচ্ছে কি না তা জানিনা। অনতিবিলম্বে রুহুল কবির রিজভীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে উন্নত ও সুচিকিৎসার দাবি জানান তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা।
রিজভীর অসুস্থতার বিষয়ে জানতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম ও হাসান মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে একাধিবার ফোন দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
১৯৮৪ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হলে সাবএকিউট ইনটেস্টাইনাল অবসট্টাকসন সমস্যায় ভোগেন। তার পেটে অস্ত্রোপচার থেকে এ সমস্যা হয়। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা করিয়েছেন।
প্রসঙ্গত যে, মহামারী করেনার সময়ও রিজভী করোনা ভাইরাসে দুইবার আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ চার মাস রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেই থেকে চিকিৎসকের কঠোর নির্দেশনা মেনে জীবন-যাপন করতে হয় রিজভীকে।
উল্লেখ্য যে, গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ওইদিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে চারশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন রুহুল কবির রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। স¤প্রতি তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে দলের বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের সাথে নিয়মিত কথা বলতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ও হামলা-মামলা নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন করতেন রিজভী। এরমধ্যে কারাগারে থেকেই গত ১৯ জানুয়ারি এলএলএম (মাস্টার্স) পরীক্ষা শেষ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মোট তিনটি পরীক্ষা কারাগারে দেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন