শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অবিলম্বে বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস সংশোধন করতে হবে

বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

শিক্ষামন্ত্রী সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থার নাম দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এখন শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে শেষ করার হীন ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা সিলেবাসের পক্ষে সাফাই গেয়ে প্রায় ৯২ ভাগ মুসলমানদের কলিজায় আঘাত হেনেছেন। অবিলম্বে বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ইসলামী আদর্শ চর্চার পথ রুদ্ধ করতেই দেশবিরোধী একটি গোষ্ঠী সুকৌশলে এদেশের পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় বিদ্বেষ সংযোজন করেছে। বিষোদগার করা হয়েছে মুসলমানদের ফরজ বিধান পর্দাসহ নানান বিষয় নিয়ে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই নাস্তিক্যবাদ মানসিকতা তৈরি করতেই এসকল চক্রান্ত করা হচ্ছে। অবিলম্বে বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী পাঠ এবং ভুল ও বিতর্কিত কাল্পনিক মুখরোচক গল্প-গুজব বাদ দিয়ে নতুন পাঠ্যপুস্তকে পাঠদান করাতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর মতিঝিলের আরামবাগস্থ ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ৪র্থ নগর যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থার নাম দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এখন শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে শেষ করার হীন ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা সিলেবাসের পক্ষে সাফাই গেয়ে প্রায় ৯২ ভাগ মুসলমানদের কলিজায় আঘাত হেনেছেন। ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নগর সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আব্দুর রহমান, আব্দুল আউয়াল মজুমদার মাওলানা আরিফ বিন মেহের উদ্দিন। নগর যুব সম্মেলনে ২০২৩-২০২৪ সেশনের ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি।

বাংলাদেশ ইসলামী যুব সমাজ : বাংলাদেশ ইসলামী যুব সমাজের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভা পুরানা পল্টনস্থ’ কেন্দ্রীয় অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের সভাপতি মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, একটি কুচক্রী মহল হিন্দুত্ববাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চক্রান্ত করছে। বাংলাদেশের শিক্ষা কারিকুলাম থেকে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা ও মূল্যবোধকে তুলে দিয়ে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের মাধ্যমে এক ধর্মহীন নাস্তিক প্রজন্ম তৈরি করার গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এটা কোনো ভাবেই বরদাশত করবে না। এই ধরনের আয়োজন অতীতে ব্যর্থ হয়েছে এবারও এটা প্রতিহত করতে ছাত্র-জনতা কে সাথে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সংগঠনের মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মাসউদ খানের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি দ্বীনে আলম হারুনী, মাওলানা আতিকুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ সাকী, মাওলানা মুহিবুল হাসান, মাওলানা ইলিয়াস, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম ও ইসলামী ছাত্র সমাজের সভাপতি এহতেশামুল হক সাখী।

খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের নবনির্বাচিত আমীর শায়খুল হাদীস মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেছেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে নাস্তিক্যবাদী কোনো শিক্ষাক্রম মেনে নেয়া হবে না। ভুল, বিভ্রান্তিকর ইতিহাস ও কাল্পনিক দেব-দেবীর মূর্তিতে ভরা পাঠ্যপুস্তক বাতিল করতে হবে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের চিন্তা-চেতনা ও সংস্কৃতিকে অক্ষুণœœ রেখে নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে। গতকাল শনিবার খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে বিদায়ী আমীর প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, মানবতার মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে দ্বীন ইসলাম। হিম্মতের সাথে ময়দানে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। অধিবেশনে বিভিন্ন দাবিতে আগামী ১১ ফেব্রæয়ারি রাজধানীতে গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ইসলামী ঐক্য আন্দোলন : ইসলামী ঐক্য আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রণীত নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক চালু করার সঙ্গে সঙ্গে দেশব্যাপী বিভিন্ন মহল থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠেছে। বিভিন্ন মহল থেকে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হচ্ছে এই শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বাস ও ঈমান আক্বিদার পরিপন্থি। অবিলম্বে বিতর্কিত সমস্ত বই বাতিল করে নতুন বই ছাপিয়ে দ্রæত ছাত্র সমাজের হাতে তুলে দিতে হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন। সেমিনারে ইসলামী ঐক্য আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর আমীর মোস্তফা বশীরুল হাসানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সেক্রেটারী জেনারেল মোস্তফা তারেকুল হাসান, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা এরশাদ উল্যাহ ভ‚ইয়া, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম-এর সহ-সভাপতি হযরত মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর হযরত মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর ময়নুল হক, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নায়েবে আমীর ডক্টর মাওলানা মুহাম্মাদ এনামুল হক আজাদ, মাওলানা ফারুক আহমাদ, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, ভোলা লালমোহন ডাক্তার আজহারউদ্দিন কলেজের প্রভাষক মো. ইকবাল হুসাইন, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, আন্দোলনের ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. আবু বকর সিদ্দিক।

বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন : বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের ২০৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান পীর সাহেব বাহাদুরপুর ।

সভাপতি তার সমাপনি বক্তব্যে বলেন, ২০৫ বছর যাবৎ আমার বংশের নেতাদের আদর্শ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন এদেশের মানুষের খেদমত করে আসছে। ধর্মীয় মূল বোধকে সমুন্নত রেখে দেশ থেকে শিরক ও বিদআতের মূলোৎপাটন করে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফরায়েজী আন্দোলন অতন্দ্র প্রহরীরমত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিশ^ব্যাপী পরিত্যাজ্য ডারউইনের মতবাদ “ বানর থেকে মানুষ”এবং মুসলিম শাসকদের প্রতি ঘৃনা সৃষ্টিরমত মিথ্যাচার ও শিশুদের নৈতিকপদস্থল সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং পর্দাকে অবজ্ঞা করে পাঠ্য পুস্তক রচনা করা হয়েছে। এ সমস্ত পাঠ্যপুস্তক বাজেয়াপ্ত করে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে পাঠ্য পুস্তক রচনার ওপর জোর দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন