শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবন ১৪৩১, ২০ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চট্টগ্রামে মুুক্তিপণের দাবিতে শিশু অপহরণ, যুবক গ্রেফতার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

নগরীতে দেড় বছরের এক শিশুকে অপহরণের ৯ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। শিশুটিকে উদ্ধারের পর মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পনের টাকা না দিলে তাকে হত্যা করারও হুমকি দেয় অপহরণকারী। শনিবার রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধারের পাশাপাশি অপহরণে জড়িত এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার মো. জুয়েল মিয়ার (২৪) বাড়ি সিলেট জেলার বালাগঞ্জে। থাকেন নগরীর বালুছড়া এলাকায়।
র‌্যাব জানায়, একই এলাকার প্রতিবেশী ব্যবসায়ী পিয়ার মোহাম্মদের সঙ্গে জুয়েল মিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের বাসায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। পিয়ারের ছেলে-মেয়েকে প্রায় দোকানে নিয়ে চকলেট-চিপস কিনে দিতেন জুয়েল। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পিয়ারের দেড় বছরের শিশু কন্যা সিদরাতুল মুনতাহা ফারিয়াকে নিয়ে দোকানে যান জুয়েল। এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জুয়েল পিয়ারকে ফোন করে শিশুটি তার হেফাজতে আছে এবং ৩০ হাজার টাকা না দিলে তাকে খুন করে লাশ নালায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। পিয়ার মোহাম্মদ বিষয়টি তাৎক্ষণিক র‌্যাবকে জানান।
র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বলেন, অভিযোগ পাবার পর আমরা দ্রæততার সঙ্গে অপহরণকারীর অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালাই। রাত সাড়ে ৯টার দিকে অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করে অপহরণকারী জুয়েল মিয়াকে (২৪) গ্রেফতার করি। জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল জানিয়েছে, টাকার জন্যই সে শিশুটিকে অপহরণ করেছিল।
এদিকে নয় বছরের এক শিশুকে দুবাই পাচারের আগে উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব জানায়, ওই শিশু ঢাকা মহানগরীর মিরপুর এলাকায় ৫ম শ্রেণির একজন ছাত্রী। কিছুদিন আগে দুবাই প্রবাসী মো. শহিদুল করিমের সাথে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে তার পরিবার জানতে পারে, শহিদুল বাংলাদেশ থেকে দুবাই নারী পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত। শহিদুল ওই শিশুটির বোনকে বিয়ের নামে দুবাই নিয়ে গেলেও দুবাই নাইট ক্লাবের কাছে তাকে বিক্রি করে অন্য দেশে থাকতে শুরু করে। কিন্তু ওই পাচারের পরপরই সে শিশুটিকেও বিদেশ পাচার করার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। গত ৩ জানুয়ারি শিশুটি মাদরাসায় যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়।
দীর্ঘসময় পরও সে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। এক সময় তার পরিবার জানতে পারে আসামি শহিদুল এবং তার সহযোগী সাকিব ও নুরুজ্জামানের সহায়তায় তাকে বিদেশ পাচারের জন্য অপহরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় শিশুটির মা বাদি হয়ে তিন জনকে আসামি করে ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
র‌্যাব জানতে পারে ওই মামলার দুই আসামি চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে আবু সুফিয়ান রানা (৩১) ও শারমিন কাওসার হান্নাকে (২২) আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্যে মামলার এজাহারনামীয় ৩ নম্বর আসামি নুরুজ্জামানকে (৫৫) হাটহাজারীর চিপাতলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে নুরুজ্জামানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এবং তার দেয়া তথ্য মতে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানার নলুয়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যদের সহায়তায় অসহায় মেয়েদের বিভিন্নভাবে ভালো চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই পাচার করত। নাবালিকা ওই শিশুকে অপহরণ করে তারা দুবাই পাচার করার জন্য গত কয়েকদিন চট্টগ্রাম ও আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিল।
দুবাই পাচারের আগে উদ্ধার অপহৃত আরেক কন্যা শিশু

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন