বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ওচাকভে ইউক্রেনীয় নৌ ঘাঁটিতে হামলা রাশিয়ার

ব্রিটিশ ভাড়াটে সেনারা নিহত ক্রিমিয়া আর কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না : ক্রোয়েশিয়ান প্রেসিডেন্ট বাখমুতে রিজার্ভ সেনা পাঠাচ্ছে কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেবেন না : বাইডেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ব্রিটিশ ভাড়াটে সেনা যারা ইউক্রেনীয় বাহিনীকে কৃষ্ণ সাগর এবং আজভ সাগরে নাশকতার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, ওচাকভের ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে রাশিয়ার হামলার মাধ্যমে তাদের নির্মূল করা হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থার একজন প্রতিনিধি সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

‘সোমবার রাতে, ওচাকভ (নিকোলায়েভ অঞ্চল) এলাকায় ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে একটি আর্টিলারি স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল, যেখানে ৭৩তম মেরিটাইম বিশেষ অপারেশন সেন্টারের একটি ইউনিট অবস্থিত। হামলার ফলে সেখানকার লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম এবং ডক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে,’ প্রতিনিধি বলেন। তিনি জানান, ‘শত্রæদের ৩টি অটোমোবাইল যান ধ্বংস হয়েছে। তাদের ১৪ সেনা নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছে। নির্মূল করা সেনাদের মধ্যে ব্রিটিশ ভাড়াটে সৈন্যরা রয়েছে, যারা কৃষ্ণ সাগর এবং আজোভ সাগরে নাশকতামূলক কর্মকাÐে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।’ ক্রিমিয়া আর কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না : ২০১৪ সালে রাশিয়া দ্বারা অধিভুক্ত কৃষ্ণ সাগর উপদ্বীপ ক্রিমিয়া আর কখনও ইউক্রেনের অংশ হবে না, ক্রোয়েশিয়ান প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিচ সোমবার কিয়েভকে সামরিক সহায়তা প্রদানে তার আপত্তির কারণ জানিয়ে বলেছেন।

ডিসেম্বরে, ক্রোয়েশিয়ান আইনপ্রণেতারা একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যে, দেশটি ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর সমর্থনে একটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিশনে যোগদান করে, যা মিলানভিচ এবং প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ প্লেনকোভিচের মধ্যে গভীর বিভাজন প্রতিফলিত করে। ইউক্রেনে পশ্চিমা নীতির একজন সোচ্চার সমালোচক, মিলানোভিচ বলেছেন যে, তিনি চান না তার দেশ, ইইউ-এর নতুন সদস্য রাষ্ট্র, ইউক্রেনে ১১ মাস পুরনো যুদ্ধের সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিণতির মুখোমুখি হোক।

‘ইউক্রেন সম্পর্কে পশ্চিমারা যা করছে তা গভীরভাবে অনৈতিক কারণ (যুদ্ধের) কোনো সমাধান নেই,’ কিয়েভের জন্য পশ্চিমা সামরিক সহায়তার কথা উল্লেখ করে পূর্বাঞ্চলীয় শহর পেত্রিঞ্জায় সামরিক ব্যারাক পরিদর্শনকালে মিলানভিক সাংবাদিকদের বলেছিলেন। তিনি যোগ করেছেন যে, ইউক্রেনে জার্মান ট্যাঙ্কের আগমন কেবল রাশিয়াকে চীনের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। ‘এটা স্পষ্ট যে, ক্রিমিয়া আর কখনোই ইউক্রেনের অংশ হবে না,’ মিলানোভিচ যোগ করেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ক্রিমিয়ার উপর ইউক্রেনের শাসন পুনরুদ্ধার করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। রাশিয়া বলেছে যে, রুশ বাহিনী উপদ্বীপ দখল করার পর অনুষ্ঠিত গণভোট দেখিয়েছে যে, ক্রিমিয়ানরা সত্যিকারের রাশিয়ার অংশ হতে চায়। মিলানোভিচ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বৈত মান ব্যবহার করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলির সমালোচনা করে বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের অংশ নেয়ার জন্য একটি অজুহাত হিসাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ‘কসোভোর সংযুক্তি’ বলে অভিহিত করবে।

মিলানোভিচ ১৯৯৮-১৯৯৯ সালের যুদ্ধের পরে ২০০৮ সালে কসোভোর স্বাধীনতার ঘোষণার কথা উল্লেখ করছিলেন যেখানে আলবেনিয়ান-সংখ্যাগরিষ্ঠ কসোভোকে রক্ষা করার জন্য সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো সমন্বিত যুগোসøাভিয়ায় ন্যাটো দেশগুলি বোমাবর্ষণ করেছিল। ‘আমরা কসোভোকে এমন একটি রাষ্ট্রের (সার্বিয়া) ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বীকৃতি দিয়েছি যাদের সাথে কসোভো ছিল,’ তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন যে, তিনি কসোভোর স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন না বরং পশ্চিমা দ্বৈত মানদÐের ধারণাকে প্রশ্ন করছেন।

বাখমুতে রিজার্ভ সেনা পাঠাচ্ছে কিয়েভ : ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী আর্টিওমভস্ক (ইউক্রেনে বাখমুত নমে পরিচিত), উগলেদার এবং মেরিঙ্কায় রিজার্ভ সেনা স্থানান্তর অব্যাহত রেখেছে, ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের (ডিপিআর) ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেনিস পুশিলিন সোমবার রাশিয়ান টিভিতে বলেছেন।
‘কিছু অতিরিক্ত বাহিনীর রিজার্ভ সেনা স্থানান্তর অব্যাহত রয়েছে এবং অন্যান্য এলাকার সঙ্গে এটি আর্টিওমভস্ক, উগলেদার এবং মেরিঙ্কার দিকে বেশি ঘটছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি,’ পুশিলিন বলেছিলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, রাশিয়ান বাহিনী এ দিকগুলিতে কিছু অগ্রগতি করেছে, কিন্তু সেটি ‘অতটা অসামান্য’ নয়, কারণ সেখানে প্রতি মিটারের (অঞ্চল) জন্য আক্ষরিক অর্থে যুদ্ধ চলছে।’ ৩০ জানুয়ারী, পুশিলিন ঘোষণা করেছিলেন যে, রাশিয়ান বাহিনী উগলেদারের পূর্ব উপকণ্ঠে প্রবেশ করেছে এবং যোগ করেছেন যে, শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ফলে একই সাথে দুটি দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হবে। পুশিলিন আরও উল্লেখ করেছেন যে, রাশিয়ান বাহিনী আর্টিওমভস্কের প্রধান সড়কগুলোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তবে শহরটি ঘেরাও করার বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, কারণ সেখানে মারাত্মক লড়াই চলছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেবেন না : রাশিয়ার সেনাবাহিনী নতুন করে ইউক্রেনে আরেকবার বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, গত কয়েকদিন ধরে এমন দাবি করে আসছে কিয়েভ। তাদের হামলা প্রতিহতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর কাছে প্রথমে ট্যাংক সহায়তা চায় ইউক্রেন। ট্যাংকের প্রতিশ্রæতি পাওয়ার পর এখন যুদ্ধবিমান চাইছে তারা।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চেয়েছে দেশটি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেবেন না। সোমবার এক সাংবাদিক বাইডেনকে প্রশ্ন করেন কিয়েভকে যুদ্ধবিমান দেওয়ার কোনো ইচ্ছা তার আছে কি না। এ প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, ‘না’। রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় এক বছর ধরে যুদ্ধ করায় আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর শক্তি। যখন পশ্চিমারা তাদের ট্যাংক দিতে সম্মত হলো তখন কিয়েভ ভাবল এখন তাদের যুদ্ধবিমানও দিতে পারে তারা। আর এসব যুদ্ধবিমান দিয়ে নিজেদের বিমানবাহিনীর শক্তি আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আপাতত সরাসরি এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। এরআগে জার্মানিও যুদ্ধবিমান দেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়।
ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে না হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া ও সার্বিয়া : হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়া ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাবে না এবং তারা চলমান সংঘাতের বৃদ্ধি রোধ করতে চায়, সোমবার বুদাপেস্টে তার অস্ট্রিয়ান সমকক্ষ ক্লাউদিয়া ট্যানারের সাথে আলোচনার পর হাঙ্গেরির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টফ সজালে-বব্রোভনিস্কি বলেছেন।

‘হাঙ্গেরির অবস্থান স্পষ্ট: আমরা সংঘাতের এলাকায় অস্ত্র পাঠাই না, কারণ আমরা এর বৃদ্ধি এড়াতে চাই এবং আমাদের অবস্থান অস্ট্রিয়ার অবস্থানের সাথে মিলে যায়,’ সজালে-বোব্রোভনিস্কি বলেছেন, দুই মন্ত্রী ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন, ‘নিরপেক্ষ অস্ট্রিয়াও যেখানে শত্রæতা হয় সেখানে অস্ত্র পাঠায় না।’
এদিকে ট্যানার বলেছিলেন যে, তিনি ইউক্রেনের সংঘাতকে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়াকে সবচেয়ে বড় বিপদ বলে মনে করেন। এমটিআই নিউজ এজেন্সি অনুসারে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু প্রচলিত যুদ্ধের কথা বলছি না, বরং অপ্রথাগত হুমকির কথাও বলছি, যেমন অভিবাসন বৃদ্ধি যুদ্ধের ফলে বেড়েছে।’

এদিকে, সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিক সোমবার বলেছেন, সার্বিয়া ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করছে না এবং ভবিষ্যতে এটি করার কোন পরিকল্পনা নেই। ‘সার্বিয়ার বিশেষায়িত শিল্পে প্রচুর নতুন বিনিয়োগ থাকবে এবং অনেক পরিবর্তনও হবে যাতে তারা অর্থ উপার্জন করতে পারে এবং তাদের অস্ত্র বিক্রি করতে পারে। আমরা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করি না, তবে আমরা অন্য কারো কাছে তা বিক্রি করব,’ চেক প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমানের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভুসিক বলেছেন।
চেক প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমান বলেছেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় যোগ দিতে সার্বিয়ার অস্বীকৃতি তার সুবিধা। ‘অবশ্যই, আমি সার্বিয়ার অবস্থান বুঝতে পারি এবং এর নিরপেক্ষতা বুঝতে পারি,’ তিনি একই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘সার্বিয়ার দ্বারা অনুষ্ঠিত নিরপেক্ষতার অবস্থান, যা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে না, একটি মধ্যস্থতার সম্ভাব্য ভ‚মিকার জন্য এক ধরণের সুবিধা হতে পারে কারণ একজন মধ্যস্থতাকারীর স্পষ্টভাবে কারো পক্ষ নেয়া উচিত নয়।’

সার্বিয়ান নেতা এর আগে বলেছিলেন যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান সার্বিয়ার উপর প্রচুর পশ্চিমারা চাপ সৃষ্টি করেছে, যার মধ্যে রাশিয়া বিরোধী নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও রয়েছে। ভুসিক বারবার বলেছেন যে, সার্বিয়া যদি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নির্দেশিত নিষেধাজ্ঞা নীতিতে যোগ দেয় তবে এটি কোনও ফলাফল আনবে না। সার্বিয়ান নেতা ২০২২ সালের নভেম্বরে একটি সাক্ষাতকারে নিউজ মিডিয়াকে বলেছিলেন যে, বেলগ্রেড মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, ‘যদি তার মাথায় তলোয়ার ধরে রাখা হয়’।
খারকভ অঞ্চলে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশ : গতকাল খারকভ অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান ভিটালি গানচেভ বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী বর্তমানে খারকভ অঞ্চলের প্রায় ২৫টি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যেগুলি ক্রমাগত হামলার সম্মুখীন হয়েছে। ‘কেউ বলতে পারবে না যে, এসব অঞ্চলে কত জনবসতি রয়েছে। ফ্রন্টলাইনে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। আমি বলতে পারি যে প্রায় ২৫টি এলাকা এখন রাশিয়ান ফেডারেশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে,’ তিনি বলেছিলেন। গানচেভের মতে, ইউক্রেনের অবিরাম গোলাগুলির কারণে ‘অবশ্যই সেখানে পরিস্থিতি কঠিন’।

১০ সেপ্টেম্বর, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ডনবাসে প্রচেষ্টা বাড়ানোর জন্য খারকভ অঞ্চলের বালাক্লিয়া এবং ইজিয়ামের কাছে রাশিয়ান সৈন্যদের পুনর্গঠনের ঘোষণা করেছে। এই অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন স্থানীয়দের রাশিয়াতেও সরে যাওয়ার আহŸান জানিয়েছে। গানচেভ এর আগে বলেছিলেন যে, প্রায় ৭০ হাজার লোক এ অঞ্চল ছেড়ে গেছে, তাদের বেশিরভাগই বর্তমানে বেলগোরোড এবং ভোরোনেজ অঞ্চলে, রাশিয়ার দক্ষিণ ক্রাসনোদর অঞ্চল এবং লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রী (এলপিআর) এ অবস্থান করছে।
কিয়েভ পশ্চিমা ট্যাঙ্ক সরবরাহ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করতে পারে : ইউক্রেনের জেলেনস্কি সরকারের কাছে পশ্চিমা ট্যাঙ্ক সরবরাহ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে, তাই আমেরিকানদের কিছু উচিত কথা বলার এবং রাশিয়ার সাথে একটি টেকসই শান্তি চুক্তি করার সময় এসেছে, ফরাসি অর্থনীতিবিদ ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল চার্লস ডি গলের নাতি পিয়েরে ডি গল বলেছেন।

রাশিয়া ও ফ্রান্সে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতির প্রতি নিবেদিত গোলটেবিল সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এবং স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধে বিজয়ের ৮০ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ডি গল উল্লেখ করেছিলেন যে, ইউক্রেনকে সরবরাহ করার পশ্চিমের সিদ্ধান্ত ভারী ট্যাঙ্কগুলি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছিল কারণ এটি ‘অনেক বেশি শক্তিশালী অস্ত্র এবং আরও বড় পরিসরের অস্ত্র’ সরবরাহকে উস্কে দেবে। ‘এটি সেই অতল গহŸর যার কিনারায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি,’ তিনি যোগ করেছেন। ‘আমি এটি বলতে চাই: সময় এসেছে শান্তি প্রতিষ্ঠার, আমেরিকানদের সাথে যুক্তি করার এবং রাশিয়ার সাথে একটি স্থিতিশীল, দৃঢ় এবং স্থায়ী শান্তিতে পৌঁছানোর। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট (ইমানুয়েল ম্যাখ্যোঁ) মনে করার সময় এসেছে যে, তারা একটি মহান স্বাধীন জাতি, এবং তাদের লক্ষ্য একটি যোগ্য ভ‚মিকা পালন করা। এছাড়াও, রাশিয়াকে গুরুতর গ্যারান্টি প্রদান করা প্রয়োজন,’ ডি গল বিশ্বাস করেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে ফ্রান্স তার প্রতিষ্ঠার অদূরদর্শী নীতি এবং ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রাশিয়ার প্রতি বন্ধুত্বহীন হয়ে উঠেছে। ‘ফ্রান্স অন্ধভাবে মার্কিন নীতি অনুসরণ করে। ফরাসিরা আর তাদের রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করে না, যারা নিজেদেরকে অসম্মান করেছে। তারা ঐক্যমত্যের বিরোধিতা করে,’ তিনি বলেন, ‘আমি ফরাসি প্রেসিডেন্টের কথা শুনেক্ষুব্ধ যে যুদ্ধের সূচনা ইইউর জন্য একটি পরীক্ষা। আমরা জানি যে সেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভুগছে।’

ডি গলের মতে, ইউক্রেনে নতুন পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহ সংঘাতের সময় কোন সিদ্ধান্তমূলক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে না। অথবা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী (যা, যেমন ডি গল উল্লেখ করেছে, ‘যথেষ্ট যোগ্য নয়’) পরিস্থিতির উন্নয়নকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হবে না। ‘এ পশ্চিমা নীতির লাগাম টানতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, পশ্চিমা রাজনীতিবিদরা এটি উপলব্ধি করেন না। তারা আমাদের মনে করানোর চেষ্টা করছেন যে, তারা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আছে। এটি একটি মিথ্যা। তারা ইতিহাস বা পরিণতি বোঝে না,’ তিনি উপসংহারে বলেছিলেন।
পুতিন, জেলেনস্কির মধ্যে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত ব্রাজিলের নেতা : ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এবং তার ইউক্রেনের সমকক্ষ ভøাদিমির জেলেনস্কির মধ্যে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত থাকবেন।

‘যদি আমি পারি, আমি অবশ্যই সাহায্য করব। কিন্তু যদি পুতিন এবং জেলেনস্কির সাথে আলোচনা করার প্রয়োজন হয়, আমি শান্তি মীমাংসার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত থাকব, কোন সমস্যা নেই। আমাদের আসলেই প্রয়োজন হল পর্যাপ্ত শক্তিশালী একদল লোককে একত্রিত করা। আলোচনার টেবিলে সম্মানিত হতে হবে। এবং আমাদের উভয়ের সাথে জড়িত হওয়া উচিত,’ সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সাথে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডা সিলভা বলেছেন।

রাজনীতিবিদ ইউক্রেনে শান্তি আলোচনার জন্য জি২০-এর মতো আলোচনার একটি বিস্তৃত আন্তর্জাতিক বিন্যাস প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করেছিলেন। ব্রাজিলের নেতা বলেছেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই শলৎজ এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখ্যোঁর সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং তিনি ফেব্রæয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে এবং মার্চ মাসে চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সাথে আলোচনায় বিষয়টি উত্থাপন করতে চান। সূত্র : রয়টার্স, তাস, এএফপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Mohammad Rafiquzzaman ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:২৭ এএম says : 0
মনে করার কিছু নেই। বিশ্ব-মানচিত্র থেকে ইউক্রেন মুছে যাক, এটাই চাই। যেমন চাই ইস্রাইলের ক্ষেত্রেও।
Total Reply(0)
Md Serajul Ishlam ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:২৮ এএম says : 0
ইউক্রেনের মাটিতে পশ্চিমা নেটো জোট ধ্বংস হউক , রাশিয়ার জয় হউক এই কামনা করি ।
Total Reply(0)
Molla Ali ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:২৮ এএম says : 0
আমরা দেশ প্রেমিক ১৯৭১ সালে আমেরিকা ছিল পাকিস্তানের পক্ষে বাংলাদেশ ধ্বংসের জন্য সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। অপরদিকে স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশের পক্ষে ৮ম নৌবহর পাঠিয়েছিল রাশিয়া। ভয়ে লেজ গুটিয়ে ফিরে গিয়েছিল আমেরিকা। কারন তো ওখানেই। যুদ্ধে যেতে না পারলে ও রাশিয়াকে সমর্থন করা প্রতিটা দেশ প্রেমিকের নৈতিক দ্বায়িত্ব। জয় হোক রাশিয়ার। ধ্বংস হয়ে যাক আমেরিকা তথা ন্যাটো।
Total Reply(0)
Taj Uddin ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:২৮ এএম says : 0
এত সহজে জবাব দেওয়া বন্ধ করা যাবে না, Ukarin এর একেবারে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।তাহলে অন্য দেশ গুলো রাশীয়া কে ভয় পাবে কেও আর দুঃসাহস দেখাবে না।
Total Reply(0)
Alam Shah ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:২৯ এএম says : 0
পুতিন মুলত ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সরাসরি যুদ্ধে টেনে আনতে চাইছে -- আর যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন সরাসরি যুদ্ধে জড়ায় তাহলে ইউরোপের বড় বড় শহরগুলো নিমিষেই ধ্বংসস্তুুপে পরিনত হবে --
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন