বিএনপি গাবতলী থেকে শুরু করে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে বর্তমান সরকারের বিদায়ের শোভাযাত্রা। সরকারকে বলতে চাই, আপনাদের সময় শেষ। পায়ের নিচের মাটি নেই। দেশে-বিদেশ থেকে আপনাদের চাপ দিচ্ছে। আর সে জন্য বিএনপির কোনো প্রোগ্রাম দেখলে আপনারা ভয়ে ভীত হয়ে যান।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলীতে পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির নেতা ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপি যখনই কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণ করে তখনই তারা (আওয়ামী লীগ) বলে, আমরা নাকি বিশৃংখলা সৃষ্টি করব, সন্ত্রাস সৃষ্টি করব। আমি বলতে চাই, সারাদেশে আমরা যখন ১০টি বিভাগীয় সমাবেশ করেছি, তখন পুলিশ ও পেটোয়া বাহিনী দিয়ে নেতাকর্মীদের ঘরে-ঘরে গিয়ে হয়রানি, গ্রেপ্তার করছেন, পরিবহন ধর্মঘট করেছেন। তারপরও এই দেশে মানুষ স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে প্রত্যেকটি গণ-সমাবেশে সফল করেছে। এসব সমাবেশে কোনো সন্ত্রাসী ও বিশৃংখলা হয়েছে? তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা না সূচক জবাব দেন। বিএনপির এ নেতা বলেন, সরকার যত রকমের হুঙ্কার দেয় না কেন দেশের জনগণ বিএনপির সমাবেশের মাধ্যমে রায় দিয়েছে তারা আপনাদের আর দেখতে চায় না। গণতন্ত্র হত্যাকারী, ভোট ডাকাত, ভোট চোরকে আর কেউ ভোট দিতে চায় না। সে জন্য আজকে আওয়ামী লীগের ভয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের জনগণের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করে সরকারের বিদায়ের আন্দোলনে আমরা অগ্রসর হব। অতি দ্রæত এই সরকারকে বিদায় দিতে সমর্থ হব। মামলা নির্যাতন করে মনে করেছিলেন বিএনপিকে ঘরে বসিয়ে দেবেন। বিএনপি এবং দেশের জনগণ প্রমাণ করেছে, তারা বসে যায়নি বরং আপনাদের বিদায় করার জন্য রাস্তায় নেমেছে। তারা এদেশের কোনো মেরামত করতে পারবে না। তাদের বিদায় যত দ্রæত সম্ভব হবে, দেশ ও জনগণের জন্য ততই মঙ্গল।
আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি, বিদেশে টাকা প্রচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, আজ ব্যাংকগুলো ডলারে পেমেন্ট দিতে পারছে না। স্টিমার এসে বসে আছে, টাকা দিতে পারে না বলে মাল খালাস করতে পারছে না। আর সরকার বড়-বড় কথা বলে।
সরকারের হাতে টাকা না থাকার কারণে জনগণের কাছ থেকে লুট করে নেওয়ার জন্য গণ-শুনানি ছাড়া দফায়-দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে উল্লেখ করে ড. মোশাররফ বলেন, একই কারণে প্রত্যেক দিন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারা বৃদ্ধি করছে, আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটরা। যারা লুট করে বিদেশে টাকা প্রচার করছে।
বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অনির্বাচিত ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে জীবন-যাপন করছি, দেশে যারা হালাল উপার্জন করে জীবন-যাপন করতে চায়, সেই কৃষক-শ্রমিক, সাধারণ মানুষ,ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজ চলতে পারছে না। প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আমরা যখন বলি দাম কমাতে হবে, তখন জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করা, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অবস্থান নিয়েছে। ফলে, কৃষক-শ্রমিক, বেকার যুবক ও সাধারণ মানুষ যারা সৎভাবে বাঁচতে চায়, তাদের সামনে সরকারের পতন ছাড়া কোনো উপায় নেই। একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর সেটা শুধু সম্ভব এই সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিলের মাধ্যমে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সাবেক যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন