সাগরের পানি থেকে হাইড্রোজেন বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে যে সকল কোম্পানী প্রস্তাব দিয়েছে, তাদের সাথে আলোচনা চলছে। যদি সম্ভব হয় তাহলে মাতারবাড়ি, মহেষখালী বা বাঁশখালীতে হাইড্রোজেন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবতা যাচাই করা হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান। লিখিত প্রশ্নে তিনি কক্সবাজার সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে সুবিধাজনক স্থানে সাগরের পানি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জলবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে সরকারের পরিকল্পনা আছে কীনা, তা জানতে চান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সাগরের পানি থেকে হাইড্রোজেন বিদ্যুত উৎপাদন নতুন ধারণা। বিশ্বের কোন কোন দেশে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করা হয়, যা ব্যয়সাপেক্ষে এবং তা বাণিজ্যিকভাবে ফলপ্রসু হয়নি। ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কোন পরিকল্পনা এই মুহুর্তে নেই। তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের বিদ্যুক কেন্দ্র নির্মাণের খরচ কমে এলে বঙ্গোপসাগরের জোয়ার-ভাটাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।
রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে নানামুখি পদক্ষেপ রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার জন্য সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে অধিক কর্মী পাঠানো ও বৈধভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠান অন্যতম। বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার ২০১৯ সালের পহেলা জুলাই থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রণোদনার বিষয়টি ২ শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশে উন্নীত করেছে। সরকারের এ সব পদক্ষেপের ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।
এক বছরে ১১ লাখ কর্মী বিদেশে আওয়ামী লীগের সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ১১ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৪ কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এরমধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা এক লাখ ৫ হাজার ৪৬৬ জন। এছাড়া সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিডেটের (বোয়েসেল) মাধ্যমে ২০২২ সালে ৬১৫ জন পেশাজীবী এবং ১৭ হাজার ৯৭৮ জন দক্ষ কর্মীসহ মোট ১৮ হাজার ৫৯৩ জন কর্মীর কর্মসংস্থান লাভ করেছে।
৭০টি দেশে সবজি ও ফল রপ্তানি আওয়ামী লীগের আরেক সদস্য বেনজির আহমেদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপন্ন হতো ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন তা ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে ৭০টির বেশি দেশে সবজি ও ফল রপ্তানি হচ্ছে এবং কৃষি পণ্য রপ্তানিতে ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বে চাল উৎপাদনে ৩য় স্থানে, সবজি ও পেঁয়াজে ৩য় স্থান। পাট উৎপাদনে ২য়, চা উৎপাদনে ৪র্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম স্থানে উন্নীত হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন