তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যুর মিছিল কেবলই বাড়ছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের। এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে।
তুরস্কের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থানা কর্তৃপক্ষের বরাতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত তুরস্কে ৩০ হাজার ৬০৫ জনের এবং সিরিয়ায় ৩ হাজার ৯৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এর দ্বিগুণ হবে।
এদিকে সপ্তম দিনের উদ্ধার অভিযানেও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে প্রাণের সন্ধান মিলছে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, যত সময় গড়াচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হয়ে আসছে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, ভূমিকম্পের ১৫৯ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১০ বছর বয়সী এক শিশু ও তাঁর বাবাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাদের উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা।
আনাদোলু আরও জানায়, রোববার দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৫৯ ঘণ্টা পর ৫৫ বছর বয়সী এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পের ১৫৮ ঘণ্টা পর তিন বছর বয়সী এক শিশু ছেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কে সপ্তম দিনের অভিযানে এক যুবককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম মুস্তফা সারিগুল। ভূমিকম্প আঘাতের ১৪৯ ঘণ্টা পর তাঁকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
তুরস্কে এখনো পুরোদমে উদ্ধারকাজ চললেও আধুনিক ও ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে সিরিয়ার অনেক এলাকায় উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেসব এলাকায় আরও অনেক মরদেহ রয়েছে। গৃহযুদ্ধকবলিত দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাইরের কোনো দেশ থেকেও সেখানে যেতে পারেনি কোনো উদ্ধারকারী দল।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অসহায় হয়ে দেশটির বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জীবিতদের অনুসন্ধান তৎপরতার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবী বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ও দেশটির বৃহত্তম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল হোয়াইট হেলমেট এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়।
উল্লেখ্য, তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত সোমবার ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে গুঁড়িয়ে যায় দুই দেশের হাজার হাজার হাসপাতাল, স্কুল ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে দেশ দুটির বিপুলসংখ্যক লোক। উদ্ভূত ঘটনার প্রেক্ষাপটে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১০ প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন