পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপান। দেশটি অর্থনৈতিকভাবে যেমন উন্নত, তেমনি আইনশৃঙ্খলার দিক থেকেও। বিশ্বজুড়েই সুশৃঙ্খল জাতি হিসেবে পরিচিত জাপানিরা। এবার দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতা কী, তার অনন্য নজির দেখা গেল দেশটিতে। আসুন তাহলে জেনে নিই প্রকৃত ঘটনা কী।
ঘটনা ১৯ ফেব্রুয়ারির। জাপান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ৩৩৫ জন যাত্রী নিয়ে টোকিওর হানেডা বিমানবন্দর থেকে উড়ে গিয়েছিল স্থানীয় ফুকোকা বিমানবন্দরে। কিন্তু গন্তব্যের বিমানবন্দরে পৌঁছতে ডেডলাইন পেরিয়ে যায় বিমানটির। বিমানবন্দরের কাট অফ টাইমের ১০ মিনিট পরে বিমানটি পৌঁছেছিল। আর সে কারণেই বিমানটিকে নামতে দেওয়া হয়নি ওই বিমানবন্দরে। অগত্যা সেটি ফের টোকিও বিমানবন্দরে দিকে রওনা দেয়।
জানা গেছে, যখন বিমানটি উড্ডয়ন করে তখন বাজে স্থানীয় সময় রাত ৮টা। দুটি বিমানবন্দরের মধ্যে দূরত্ব প্রায় ১০০০ কিমি। গন্তব্যের বিমানবন্দরে ১০ মিনিট দেরিতে পৌঁছার কারণে সেটিকে নামার অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
দ্য আশাহি শিমবুন সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে, নামতে না দেওয়ায় ফের পাঁচ ঘণ্টা দূরত্বে টোকিও বিমানবন্দরে ফিরে আসতে বাধ্য হয় ওই বিমানটি।
তবে ফেরার পথে জ্বালানি ভরার জন্য বিমানটি কানসাই বিমানবন্দরে নেমেছিল। সেখানে জ্বালানি ভরে, দেখভালের কাজ করে ফের রাত ২টা ৫০ মিনিটে বিমানটি টোকিও যায়।
এরপর বিমানের যাত্রীদের একটি হোটেলে রাখা হয়। সেখানে সারারাত কাটিয়ে পরের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি বিমানটি ফের ফুকোকার দিকে রওনা দেয়।
কিন্তু কেন এমন করা হল ওই বিমানের সঙ্গে? জানা গেছে, ওই বিমানবন্দরে রাত ১০টার পর কোনও প্লেন নামতে দেওয়া হয় না। মূলত সাধারণ মানুষের যাতে সমস্যা না হয় সেকারণেই রাত ১০টার পর বিমান নামতে দেওয়া হয় না সেখানে। তবে খারাপ আবহাওয়াসহ অন্যান্য কারণে এই ডেডলাইন মাঝেমধ্যে পেরিয়ে যাওয়ার নজির রয়েছে।
আসলে মূল বিষয়টি হল বিমানটি নামার কথা ছিল ৮.৩০ মিনিটে। কিন্তু ১০টা পর্যন্ত ওই বিমানবন্দরে বিমান নামার সময়সীমা। তারপর সাধারণত আর বিমান নামতে দেওয়া হয় না। কিন্তু বিমানটি পৌঁছেছিল ১০টা বেজে ১০ মিনিটে। মূলত রাত ১০টার পর যাতে শব্দ দূষণ হয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের কোনও সমস্যা সৃষ্টি না করে, সে কারণেই বিমানটিকে নামতে দেওয়া হয়নি। এতে ফের পাঁচ ঘণ্টা দূরের বিমানবন্দরের দিকে রওনা দেয় বিমানটি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসেও এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তবে আশার কথা যাত্রীদের রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, ফক্স বিজনেস, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, দ্য আশাহি শিমবুন, নিউ ইয়র্ক টাইমস
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন