মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহিলা

এস এ গেমসে স্বর্ণজয়ী সীমান্ত ও শিলা

প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাউথ এশিয়া গেমসে এবার বাংলাদেশেকে আলোকিত করলো দুই স্বর্ণজয়ী বাংলাদেশী নারী। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও সাঁতারে জলকন্যা মাহফুজা খাতুন শিলা। স্বর্ণজয়ী এ দুই কন্যার হাত ধরেই ইতিহাসে নাম লেখাল বাংলাদেশ। সীমান্ত এসএ গেমসে এবারই প্রথম অন্তর্ভুক্ত হওয়া ভারোত্তোলনে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। পদক বিতরণের সময় মাবিয়া যখন বিজয়মঞ্চে, ঠিক তখনই বেজে উঠল বাংলাদেশর জাতীয় সংগীত। লাল-সবুজ পতাকাটি যখন ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠছিল, সীমান্ত তখন পতাকার দিকে তাকিয়ে যেন বাংলাদেশের সীমানা ছুঁয়ে যাওয়া দেখছিলেন। এসএ গেমসের তৃতীয় দিনে গুয়াহাটির ভোগেশ^রী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মেয়েদের ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচে ৬৭ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৮২সহ মোট ১৪৪ কেজি উত্তোলন করে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন সীমান্ত। আর এসএ গেমসে ১ মিনিট ১৭.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে প্রথম সোনা এবং ৩৪.৮৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৫০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে দ্বিতীয় সোনা জয় করেন শিলা।

শিলার স্বর্ণ জয়ের পেছনের কথা
যশোর জেলার অভয়নগরের নোয়াপাড়ার মেয়ে মাহফুজা শিলা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিন বোনের মধ্যে মেজ শিলা, তার আয়ের টাকা দিয়েই বেশিরভাগ সময় সংসার চলতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে অ্যাথলেট ছিলেন। পায়ের ইনজুরির জন্য বেছে নেন সাঁতার। ২০০৩ সালে শিলা ভর্তি হন বিকেএসপিতে। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সে খুব বাস্তববাদী মেয়ে। কখনোই আবেগের মধ্যে বাস করেন না, বাস্তবটাকে সব সময় মেনে নেন। বন্ধুদের যে কোনো বিপদ-আপদেও শিলা সর্বপ্রথমে ছুটে যান। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে করতে দেশের জন্য এমন সাফল্য আনতে পেরে আনন্দে আত্মহারা শিলার মা মোছাম্মত করিমুন্নেছা। তিনি বলেন, আমি কি বলবো! আমার কোনো ভাষা নেই। এতো কষ্টের মাঝেও আমার মেয়ে দেশের জন্য দু’টি স্বর্ণ অর্জন করেছে তাতে আমার গর্বের শেষ নেই। আমি গর্বিত এমন সন্তানের মা হতে পেরে, এমন সন্তানকে জন্ম দিতে পেরে। আমি চাই আমার সন্তানের মতো অন্যরাও যেন দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে। আমার সন্তানের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

সীমান্তের সোনা জয়ের গল্প
সীমান্ত ভারোত্তোলনে নাম লেখান ২০১০ সালে। দেশে প্রথম প্রতিযোগিতামূলক আসরে অংশ নেন ২০১১ সালে। অর্জন করেন দ্বিতীয় স্থান। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সীমান্তকে। এরপর সীমান্ত ভারতের পুনেতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে সিনিয়র, জুনিয়র ও ইয়ুথ বিভাগে সোনা জিতেছেন। ওই আসরে ৩টি সোনার পাশাপাশি ২টি রুপার পদকও পান তিনি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২০১২ সালে দক্ষিণ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ানশিপে ব্রোঞ্জ, ২০১৩ সালে মালয়েশিয়ার কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়ানশিপে ব্রোঞ্জ এবং ২০১৫ সালে কমনওয়েলথ ভারোত্তোলনে রুপা জয় করেন সীমান্ত। এসএ গেমসে সোনা জেতার পর উচ্ছ্বসিত সীমান্ত তার অনুভূতিতে ‘দেশকে স্বর্ণ উপহার দিতে পারার অনুভূতি অবশ্যই অসাধারণ’ বলে জানান। মামা বক্সিং কোচ শাহাদত কাজীর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাতেই মাবিয়া আক্তার সীমান্তের ক্রীড়াঙ্গনে আসা। ১২ বছর বয়সে ভারোত্তোলনে যুক্ত হন তিনি। মাদারীপুরের মেয়ে মাবিয়ার মা গৃহিণী আক্তার বানু ও বাবা ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ।য় আলম শামস

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন