বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনালি আসর

ভাষাসৈনিক আবদুল গফুর

| প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গোলাম আশরাফ খান উজ্জ্বল : আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি। আমি কি ভুলিতে পারি। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই এ বিখ্যাত গানটি মনে পড়ে। মনে পড়ে সালাম, রফিক, শফিক, জব্বারসহ আরো অনেক ভাষা শহীদের নাম। যাদের রক্তে রাঙানো ঢাকার রাজপথ, ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী দেশ হলো বাংলাদেশ। পৃথিবীতে শুধুমাত্র ভাষা আন্দোলন হয় বাংলাদেশে। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশ সে সময় পাকিস্তানের অংশ ছিল। এ অঞ্চলের একশ’ ভাগ লোকই বাংলায় কথা বলত কিন্তু পাকিস্তানি শাসকরা জোর করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাইল। এ দেশের সব মানুষ এর প্রতিবাদ জানাল জোরালোভাবে। ১৯৪৭-১৯৫২ সাল পর্যন্ত চলে বাংলা ভাষা আন্দোলনের দাবি। এ ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন অধ্যাপক আবদুল গফুর। তিনি ১৯৪৭-১৯৫২ সাল পর্যন্ত তমদ্দুন মজলিসের সক্রিয় কর্মী হিসেবে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। মিছিল, মিটিং ও সেমিনারে বক্তব্য দিয়ে জনতাকে এক করতেন। বিভিন্ন লেখনীর মাধ্যমেও অধ্যাপক আবদুল গফুর সচেতন করতেন দেশবাসীকে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় অধ্যাপক আবদুল গফুর পুলিশের তাড়া খেয়ে সারা রাত ঝোপের মধ্যে কাটিয়েছেন। মশার কামড় খেয়ে শরীর ফুলে গিয়েছিল। কখনও আত্মগোপেেন ছিলেন চট্টগ্রাম, কখনও জামালপুরে।
দেশপ্রেমিক এ ভাষাসৈনিকের জন্ম রাজবাড়ি জেলায়। ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯২৯ সালে। অধ্যাপক আবদুল গফুর পাংশা থানার দাদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজী হাবিল উদ্দিন। তিনি ১৯৪৫ সালে ফরিদপুর মইজুদ্দিন হাই মাদ্রাসা হতে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল কলেজ) হতে ইন্টারমিডিয়েট পাস এবং ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ পাস করেন। কর্মজীবন শুরু অধ্যাপনা দিয়ে। ১৯৬৩-১৯৭০ পর্যন্ত ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। পরে ঢাকার আবুজর গিফারী কলেজে ১৯৭২-১৯৭৯ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। কীর্তিমান এ পুরুষ শিক্ষক হিসেবে দারুণ খ্যাতি অর্জন করেন। শুরু করেন সাংবাদিকতা। তিনি দৈনিক সৈনিক পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। ১৯৮৬ সাল হতে অধ্যাপক আবদুল গফুর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন অদ্যাবধি। আবদুল গফুর ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদকে ভূষিত হন। তার বিখ্যাত কয়েকটি গ্রন্থের মধ্যে অন্যতম হলোÑ বাংলাদেশ আমার স্বাধীনতা, আমার কালের কথা, স্বাধীনতার গল্প শোন ও আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন