বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহিলা

একজন স্নেহময়ী সংগ্রামী আজিজুন নাহার

| প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ কামাল হোসেন  : আজিজুন নাহার কুহিনুর। মা। আমার প্রিয় মা। মণি মা। ষাটোর্ধŸ। চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট নয়। স্বামী নেই। পরিচয় মাসখানেক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ফেসবুকে। রাশভারি টাইপের। গুরুগম্ভীর। পরহেজগার। যথেষ্ট আধুনিকাও বটে। সামনা সামনি দেখা হয়নি এখনো। হবে। খুবশিগগিরই। তবু মনে হয় কতকাল...কতযুগ ধরে সম্পর্ক। জানাশোনা। আমাকে সন্তানের মতোই আদর করেন। স্নেহ করেন। অসম্ভব স্নেহময়ী। আবেগী। দু’হাতে আমাকে আগলে রাখেন। স্বল্পভাষী। ছোট ছোট বাক্যে কথা বলেন। রসবোধও আছে। প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। শ্রদ্ধায়Ñ
ভালোবাসা, ব্যক্তিত্বে মাথা নত হয়ে আসে। জীবনের অনেক কিছু তিনি দেখেছেন খুব কাছ থেকে। উপলব্ধি করেছেন, জগত সংসারে টিকে থাকার জন্য কতটা সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়। তিলে তিলে গড়া স্বামীর সংসারটাকে একটু একটু করে ভেঙে যেতে দেননি। শরীরের রক্ত-মাংস পানি করে দু’হাতে স্বামীর রেখে যাওয়া সংসারটাকে যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছেন। খড় কুটোর মতো নিঃশেষ হতে দেননি। ছেলেমেয়েদের নিজের সর্বস্ব দিয়ে মানুষ করেছেন। দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মণি মা এখন কাঁদছেন। অঝোরে। অবোধ বালকের মতো। ঘন ঘন চোখ মুখ মুজছেন। চ্যাটিং-এ স্পষ্ট বুঝতে পারছি। কথা বলতে পারছেন না। আবেগে গলা বসে যাচ্ছে। ইদানীং প্রায়ঃশ এমন হয়। বেশিদূর পর্যন্ত কথা এগোয় না। মানুষটার অনেক দুঃখ। ভেতরে অনেক জ্বালা। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারি। সান্ত¦না দিতে পারছি না। ব্যর্থ হচ্ছি। যদিও সবসময় মুখে হাসিটা লেগেই থাকে। কাউকে কিছু বুঝতে দেন না। ওল্টো আমাকে বলছেনÑ
Ñতুই বাচ্ছা। পিচকি। বুঝবি না।
আমি আর তাঁকে বিরক্ত করি না। আদর করে আমাকে পিচকি ডাকেন। পর্বতসম একটা মানুষ কীভাবে ভেঙে পড়ে মণি মাকে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। ক্লান্ত-শ্রান্ত, অবসাদগ্রস্ত মানুষটা আবার আপনা-আপনি ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। প্রবাহমান নদীর মতো। কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। এ-কুল ভাঙে, ও-কুল ভাঙে। আবার ভাঙে আবার গড়ে। তখন এ-মানুষ আর ও-মানুষ দু’টো সত্তাকে আলাদা করা বড় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। নিজেকেও কিছুটা বোকা বোকা লাগে। তখন, সত্যি সত্যি-ই প্রিয় মণি মা’র পিচকি মনে হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন