সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

প্রলোভনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু কিশোর ও নিম্নআয়ের লোকজন

বগুড়ায় বাণিজ্যমেলার নামে অবৈধ লটারির মহোৎসব!

| প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ায় র‌্যাফেল ড্র’র নামে চলছে অবৈধ লটারির রমরমা ব্যবসা। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লটারির টিকিট বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে ভ্যান, অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানে। এছাড়া শহর ও শহরতলির একাধিক পয়েন্টে চেয়ার টেবিল বসিয়ে অবৈধ এই লটারির টিকিট বিক্রি হচ্ছে দিনের পর দিন। এর মাধ্যমে সাধারণ লোকজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা। শুধু অবৈধভাবে লটারির টিকিট বিক্রিই নয়, তা আবার আইন লংঘন করে কেবল টিভি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্প্রচার করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় লোকজনকে লোভনীয় পুরস্কারের কথা বলে টিকিট কিনতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্নআয়ের লোকজন। একইভাবে শিশু-কিশোরদেরও লটারিতে আসক্ত করা হচ্ছে। বগুড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার নামে চলছে এই অবৈধ লটারি বিক্রির মহোৎসব!
আর মেলা কর্তৃপক্ষ লটারির অনুমতি না থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও জানিয়েছে, মেলার পরিচালনা ব্যয় মেটাতে তারা বাধ্য হয়ে লটারি চালাচ্ছেন।
বগুড়া শহীদ চান্দু ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশে ১ মার্চ বগুড়া চেম্বার এন্ড কমার্সের উদ্যোগে শুরু হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। শুরুর দিন থেকেই এর মূল বিষয় হয়ে ওঠে র‌্যাফেল ড্র’র নামে ডেইলি লটারি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা নাম দেয়া হলেও এতে অন্য কোনো দেশের পণ্যের কোনো প্যাভিলিয়ন বা স্টল নেই। মেলায় রয়েছে ৭৮টি বিভিন্ন পণ্যের স্টল। এর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বেনারসি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। মেলায় সার্কাসসহ শিশুদের জন্য কয়েকটি রাইড স্থাপন করা হলেও পুরো মেলাই চলছে র‌্যাফল ড্র নামে লটারিকেন্দ্রিকভাবে। এর নাম দেয়া হয়েছে স্বপ্ন ছোঁয়া র‌্যাফেল ড্র। প্রতিটি টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে ২০ টাকা করে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নানা বয়সী লোকজন থেকে শুরু করে শিশু-কিশোররা বিভিন্নভাবে টাকা সংগ্রহ করে টিকিট কেনার জন্য ছুটছেন। নি¤œআয়ের দিনমজুর শ্রেণির লোকজন তাদের প্রতিদিনের উপার্জিত অর্থের বেশিরভাগই ব্যয় করছেন লটারির টিকিট কেনার জন্য। প্রতিজন প্রতিদিন কিনছেন ৭/৮টি বা এর চেয়েও বেশি টিকিট। এ ব্যাপারে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ফজলুল হক জুয়েল দাবি করেছেন তারা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় লটারি পরিচালনা করছেন। বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ও মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাহফুজুল ইসলাম রাজ জানিয়েছেন, তাদের লটারির অনুমোদন নেই। তারা মেলাটি আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যবসায়ীকে ইজারা দিয়েছেন। আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, মেলা করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয় কিন্তু ভালো প্রতিষ্ঠান তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে না, তাই বাধ্য হয়ে লটারি চালানো হচ্ছে মেলা পরিচালনা ব্যয়ের সংস্থানের জন্য। লটারি ও কেবল টিভি নেটওয়ার্কে সম্প্রচার বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মেলার অনুমোদন দিয়েছে তবে লটারির কোন অনুমতি প্রশাসন থেকে দেয়া হয়নি। এছাড়া কেবল টিভি নেটওয়ার্কে তা সম্প্রচার বেআইনি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন