জীবন যুদ্ধে জয়ী এক সংগ্রামী নারী গোলাপী আক্তার। কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার ৯ নং মাইজখার ইউনিয়নের মেহার গ্রামে তার বাড়ি। তিনি চান্দিনা পৌরসভার হারং গ্রামের মৃত খোরশেদ আলম সরকারের দ্বিতীয় মেয়ে। তার মা রীনা সরকার। তারা ৬ বোন ১ ভাই। ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখ উপজেলার মেহার গ্রামের সাংবাদিক মো. ওসমান গনির সাথে তার বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। সাংসারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী। ছেলে সজীব হোসেন (১৬) বড়। মেয়ে সুরভী আক্তার (১২)। ছেলে সজীব হোসেন এ বৎসর চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ে সুরভী আক্তার একই উপজেলার রসুল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে।
গোলাপী আক্তার সংসার জীবনে গৃহিণী হলেও তিনি তার সংসারের সমস্ত কাজকর্ম করে ফাঁকে ফাঁকে একটি বেসরকারি কোম্পানি ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে উন্নয়নকর্মী হিসেবে খÐকালীন কাজ শুরু করেন। তার মা রীনা সরকার ওই কোম্পানির একজন কর্মকর্তা। মা কোম্পানিতে চাকরি করেন দেখে গোলাপী আক্তারের ইচ্ছা হয় কোম্পানীতে কাজ করার। এই সুবাধে গোলাপী আক্তার তার মায়ের পাশাপাশি কোম্পানির উন্নয়নকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে কাজ করে গোলাপী আক্তার চলার মতো টাকা রোজগার করেন। এদিকে তার স্বামী সাংবাদিকতার পাশাপাশি ওষুধের ফার্মেসির ব্যবসা করেন। দুজনের টাকা দিয়ে গোলাপী আক্তারের সংসার এখন স্বচ্ছলভাবে চলছে। গোলাপী আক্তার কোম্পানির চাকরি করার কারণে এলাকার সকল মানুষের কাছে তার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তিনি শত কাজের মাঝেও নিয়মিত নামাজ-রোজা করেন। তিনি তার জীবনে যত কাজ করেন স্বচ্ছতার মাঝে করেন। তার কাজের স্বচ্ছতার কারণে তার অফিসের কর্মকর্তারা তাকে খুব আদর করে থাকেন। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে কোম্পানির কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সব সময় কোম্পানির সফলতা কামনা করেন। তার ধারণা হলো, কোম্পানি বাঁচলে আমরা কর্ম করে বাঁচতে পারব।
তার কোম্পানির কাজের ব্যাপারে তাকে উৎসাহ দেন তার বড় বোনের স্বামী আক্তার হোসেন। তিনিও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার মা ও তার বোনের স্বামী আক্তার হোসেনের উৎসাহের কারণে তার এতদূর এগিয়ে আসা। তার মতে, দেশের সকল নারীকে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত। কে কী বলল তার দিকে না তাকিয়ে কাজ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তার কর্মজীবনেও প্রথম প্রথম কাজ করতে তিনি নিজে নিজে অস্বস্তি ভাব মনে করতেন। ভাবতেন গ্রামের লোকজন কে কী বলবে। এখন তার কাছে সেটা আর কোনো ব্যাপার বলে মনে হয় না। পাছে লোকে কিছু বলে সেই বাক্যকে পেছনে ফেলে আনন্দের সাথে কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছেন।
য় মো. ওসমান গনি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন