রাজশাহী ব্যুরো : অটোরিকশায় এসে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে বাধা বিঘ্ন ছাড়াই ফের মেয়রের আসনে বসলেন নির্বাচিত মেয়র মো: মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গত রোববার নানা নাটকীয় ঘটনার মধ্যদিয়ে আট মিনিটের জন্য চেয়ারে বসার পর আবার দ্বিতীয় দফা বরখাস্তের শিকার হন। আইনি লড়াইয়ে দ্বিতীয় দফায়ও জিতে গতকাল শান্তিপূর্ণ ভাবে নগরভবনে মেয়রের আসনে বসেন। সকাল থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন। এগারোটার দিকে নগরভবনের অদুরে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে অটোরিকশায় চেপে নগরভবনে আসেন। গেটের বাইরে থেকে ফুল ছিটিয়ে তাকে বরণ করে নেয়া শুরু হয়। ভবনের সিড়িতে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে ক’জন কাউন্সিলরসহ ভবনের কর্মীরা। দোতলায় মেয়রের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের নিয়ে অপেক্ষমান ছিলেন সচিব। তিনি বুলবুলকে অভ্যর্থনা জানিয়ে চেয়ারের কাছে নিয়ে যান। এরপর গণমাধ্যম কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ঘরে প্রবেশ করেন। আইনজীবী নেতা অ্যাড. জমসেদ আলীর নেতৃত্বে আইনজীবী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফজলুল হকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। মেয়র বুলবুল চেয়ারে বসার আগে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে তার দায়িত্ব ফিরে পাবার জন্য শোকরিয়া আদায় করে দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন। নিজেই দোয়া দরুদ পড়ে মোনাজাত করে আল্লাহর রহমত কামনা করেন। সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাবে সবাইকে নিয়ে যাতে নগরবাসীর সেবা করতে পারেন সে জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করেন। এরপর উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেন। নির্বাচনের দেয়া প্রতিশ্রæতি মোতাবেক নগরীকে গ্রিন সিটি ক্লিন সিটি হেলদি সিটি অ্যাডুকেশন সিটি হিসাবে গড়ে তোলার প্রত্যয় পুনরায় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন কারো সাথে বিবাদ নয় সবাইকে সাথে নিয়ে রাজশাহীর উন্নয়নে কাজ করে যেতে চান বাকি দেড় বছর। এ সময়টুকু নির্বিঘ্নে কঠোর পরিশ্রম করে নগরবাসীর জন্য কিছু করে যেতে চান। অঙ্গীকার গুলো যতদুর সম্ভব পূরণ করাই লক্ষ্য। এজন্য তিনি সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বুলবুল বলেন মাঝখানে দু’বছর ছিলাম না। শুনেছি জেনেছি এরমধ্যে করপোরেশনের বিশাল ক্ষতি হয়ে গেছে। দুর্নীতি লুটপাটের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। পর্যায়ক্রমে এসব গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করা হবে। নগরবাসীর উপর যে করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে তার কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন নগরবাসী বিশেষ করে বিষয়টা নিয়ে আন্দোলন ও আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের সবার সাথে আলাপ আলোচনা করে বিষয়টার সুরাহা করা হবে। আগামী শনিবার গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করার কথাও জানান। পরে তিনি তিন তলায় কাউন্সিলরদের কক্ষে যান তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য। দুপুরে তিনি নগরভবনের দফতরসমূহ পরিদর্শন করেন।
এদিকে মেয়রের প্রত্যাবর্তনে আনন্দ অন্যদিকে ফের কি হয় এমন শঙ্কা ছিল নগরভবনের কর্মীদের মধ্যে। ছিল নানা রকম কানাঘুষা। সবাই যেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কারা যেন রাটিয়েছে সরকার পক্ষ থেকে ফের রিট করা হচ্ছে। সাধারন কর্মচারীদের ভাবনা তাদের বেতন ভাতা নিয়ে মাসের পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও তাদের বেতনের খবর নেই। চেয়ারে বসে প্রথমেই বুলবুলকে ধাক্কা সামলাতে হবে প্রায় আড়াই হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন ভাতা নিয়ে। ৩০ মার্চ একদিনেই প্রায় দেড়কোটি টাকার চেক ইস্যু হয়েছে বিভিন্ন খাতের বিলের নামে। ইতোমধ্যে তা নগদায়নও হয়েছে। এনিয়ে রয়েছে নানা কথা। গতকাল ভবনে ছিলেন না প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান প্রকৌশলী। তারা দু’জনেই ঢাকায় গেছেন বলে জানান দফতরের কর্মীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন