খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা : বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতায় খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবী। পুরনো দিনের দুঃখ, গøানি ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় মহা সমারোহে বৈসাবী ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে এখানকার পাহাড়ি-বাঙালিরা। গতকাল সকালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
এসময় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমান, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মতিউর রহমান, ডিজিএফআই অধিনায়ক মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. আলী আহমেদ খান ছাড়াও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সামরিক-বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। ঐতিহ্যবাহী বর্ণিল পোশাকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল ও বাঙালি সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের হাজারো নারী-পুরুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় ত্রিপুরাদের গরাইয়া নৃত্য ও মারমা সম্পদ্রায়ের পানি উৎসব জল-কেলী।
চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম সামাজিক উৎসবের নাম ‘বিজু’, মারমাদের কাছে সাংগ্রাই আর ত্রিপুরা সম্প্রদায় একে বৈসুক নামে পালন করে। তিন সম্প্রদায়ের উৎসবের আদ্যক্ষর নিয়েই নামকরণ ‘বৈসাব’। বাংলা সনের চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন এবং পহেলা বৈশাখে উদযাপন করা হয় বৈসাবি উৎসব। আজ চাকমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা প্রতি বছরের মতোই সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে স্থানীয় ছড়া কিংবা নদীতে জলদেবতার উদ্দেশ্যে ফুল ভাসিয়ে শুরু করবে বিজু উৎসব। আর এই দিনটিকে বলা হয় ‘ফুল বিজু’।
বৈসাবী এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ। সকল সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদে যেন বৈসাবী উৎসব উদযাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে জোরদার করা হয়েছে জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। বৈসাবী’র মহিমায় উদ্ভাসিত হবে পাহাড়ের মানুষের জীবন, পুরনো বছরের দুঃখ, গ্লানি, হতাশা দূর করে নববর্ষ সবার জীবনে নিয়ে আসবে অনাবিল সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন