মো. জাভেদ হাকিম : ইদানীং নতুন এক বাংলা ভাষার খোঁজ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বদৌলতে। সেই ভাষা সম্পর্কে আসছি একটু পরে। তারুণ্য মানেই মনের মাঝে বইবে একরাশ উচ্ছ¡াস-উদ্দীপনা। তাদের স্বভাবসুলভ আচরণে থাকবে নতুন কোনো সৃষ্টির নেশা। গঠনমূলক কোনো কাজের বাসনা নেই যে তরুণের মনে তাকে এক প্রকার মানসিক প্রতিবন্ধী বললে খুব বেশি অত্যুক্তি হবে না। তারুণ্য মানেই সমাজের প্রাণ। সৃজনশীল কাজের জন্য তারাই একদিন দেশের জন্য বয়ে আনে সম্মান।
এই তরুণরাই যদি আবার তাদের মেধা ভিন্ন খাতে প্রয়োগ করেন তা যেমন হয় নিজের জন্য আত্মঘাতী তেমনি দেশ ও জাতির জন্য হবে মহাব্যাধি। আজকের তারুণ্য আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক। এই ভাবী রাষ্ট্র নায়কদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রতিনিয়ত যদি ভাষার বিকৃতি ঘটে তাহলে সমাজ সংসারের জন্য তা হবে মহামারী। উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী বা দেশসেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করা তরুণ সমাজ আজকাল আনাড়ি ফেসবুক ব্যবহারকারী বা মূর্খ-অর্ধ শিক্ষিতদের ব্যঙ্গ করতে গিয়ে এখন তারা নিজেরাই উপহাসের পাত্রে পরিণত হতে চলেছে। তারা বেশ আনন্দ চিত্তে মজা করেই লিখে থাকে ফডু, খিচ্চা, মঞ্চায়, গিবনে, হপে, খিচাইছে এমন সব উদ্ভট শব্দ স্ট্যাটাস-কমেন্টে থাকে প্রায় নিয়মিত, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধরেই নেবে এটাও ভাষা বাংলা।
আজকের উচ্ছ¡সিত তারুণ্য বুঝতেই পারছে না যে, এটা কতটা ভয়াবহ কুৎসিত রূপ ধারণ করবে। বড়দের হাতে ক্যামেরা দেখে যদি শিশুরা বলে ওঠে মামা মামা দু-চারটা ফডু খিচ্চা দাও বা চাচ্চু চুইংগাম হপে তখন শুনতে কেমন লাগবে? তাই এখনি প্রয়োজন সবার সচেতনতা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তারা নিশ্চয়ই এরকম জঘন্যভাবে ভাষার বিকৃতি ঘটুক তা চাননি। পৃথিবীর বুকে একমাত্র বাংলাদেশের মানুষই তার মায়ের ভাষা বাংলার জন্য দিয়েছেন প্রাণ। সুতরাং ভাষার ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আমরা যেখানেই লিখি বা বলি না কেন, অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ভাষার যেন বিকৃতি না ঘটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন