স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে অংশ ‘না নেয়ার মতো ভুল’ বিএনপি করবে না বলেই তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে হবে। তবে সেই সরকার হবে অন্তর্বর্তীকালীন। সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ভুল আর করবে না বিএনপি।
গতকাল শুক্রবার সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংগঠনের প্রয়াত সদস্য সাংবাদিকদের সন্তানদের বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে তোফায়েল আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে বিএনপির প্রতি তার আহŸান ‘অত্যন্ত আন্তরিক’ ছিল।
সব দলকে নিয়ে শেখ হাসিনা নির্ভাচন করতে চেয়েছিলেন দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে গণভবনে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যাননি, নির্বাচনও করেননি। তিনি বলেন, পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ের পর ওই সময় বিএনপি তার আহŸান প্রত্যাখ্যান করবে এবং মন্ত্রীত্ব নিতে অস্বীকার করবেÑ এটা তিনি আশা করেননি। আমরা আশা করিনি, জনগণও আশা করেনি। নির্বাচনী সরকারে পাঁচটা মন্ত্রীত্ব নিতে তাদের ডাকার পরও তারা নেয়নি তা। এটা না নেয়াটা তাদের ভুল হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও এই ভুল বিএনপি করবে বলে আমি মনে করি না।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, ইলেকশন হবে নির্ধারিত সময়ে। বর্তমান সরকারের অধীনে। তবে ওই সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে। বর্তমান সরকার যেভাবে চলছে সেভাবে চলবে না। ডে টু ডে কাজ করব আমরা। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজেই হস্তক্ষেপ করবে না।
সা¤প্রতিক সময়ে কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি এবং হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের ‘সখ্যতা’ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার বিষয়েও এ অনুষ্ঠানে কথা বলেন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি আদর্শবান রাজনৈতিক দল। নির্বাচনে সব দল কৌশল অবলম্বন করে, কিন্তু আদর্শ বিলীন করে নয়। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক অসা¤প্রদায়িক দল।
ডিআরইউর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিলবোর্ড অ্যাডভার্টাইজিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, আগামী বছর থেকে প্রয়াত সদস্য সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি বাড়িয়ে মাসিক দুই হাজার টাকার পরিবর্তে তিন হাজার টাকায় উন্নীত করা হবে। এই হিসেবে প্রতি সদস্য সন্তানরা শিক্ষাবৃত্তি আগামী বছর থেকে ২৪ হাজারের পরিবর্তে ৩৬ হাজার টাকা করে পাবে।
এবার ১৭ জন প্রয়াত সদস্যের সন্তানকে বৃত্তি দেয় ডিআরইউ। তারা প্রত্যেকে এক বছরের জন্য মাসে ২ হাজার করে ২৪ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি পায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল প্রয়াত সদস্যদের সন্তানদের বৃত্তি দেয়ার উদ্যোগের প্রশংসা করে ডিআরইউকে অভিনন্দন জানান।
সাধারণ সম্পাদক মুরসালীন নোমানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন প্রয়াত সদস্য আরিফ রহমানের স্ত্রী অহনা আক্তার ও ওবায়দুল গণি চন্দনের স্ত্রী রুবিনা।
শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় সবকিছু করা হবে
এদিকে, গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৭ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে সবকিছু করা হবে। তৈরী পোশাক খাতে দেশের ৪৫ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর শিল্প কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকরা এখন উপযুক্ত বেতনে, নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে কারখানায় কাজ করছে।
‘শোভন কর্ম পরিবেশ, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সভাপাত মো. সিদ্দিকুর রহমান, কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের ডিজি মো. সামসুজ্জামান ভূঁইয়া, কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনোইট পিয়ারি লারামি, ঢাকায় নিযুক্ত আইএলও এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি রিডি, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন