আহত অর্ধশতাধিক : আটক ২০
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : পুলিশের দফায় দফায় লাঠি চার্জ,রাবার বুলেট নিক্ষেপ,আওয়ামী সমর্থিত কর্মীদের ইট পাটকেল নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার মাদারীপুর জেলা বিএনপির যৌথ কর্মীসভা পন্ড হয়েছে।এছাড়া বিএনপির সমাবেশে জেলার ৪টি উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে যাতে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে যোগদান করতে না পারে সেকারনে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদেরকে পিটিয়ে আহত করেছে। বিএনপির সমাবেশে যোগদানকে কেন্দ্র করে পথে আসা নেতা কর্মী এবং সমাবেশ স্থানে উপস্থিত নেতা কর্মী মিলিয়ে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে এবং কমপক্ষে ২০জন নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।সমাবেশে যোগদানকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র থেকে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রীমকোর্র্ট বার এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ব্যারিস্ট্রার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক সহ-পাঠাগার সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার সাজাহানমিয়া স¤্রাট সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হয়েও পুলিশের তোপের মুখে পড়েন।
জেলা বিএনপি’র সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক আবু মুন্সী ও সাধারণ সম্পাদক জাহান্দার আলী জাহান বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মাদারীপুর জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার বিএনপি’র সকল অঙ্গসংগঠন নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে এক যৌথ কর্মীসভা অনুষ্ঠানের জন পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন করে অনুমতি পেয়ে চরমুগরিয়ার সেলিম ভুইয়া কমিউনিটি সেন্টারে সভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু শুক্রবার রাতেই কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশ তালা মেরে দেয়। পরে সমাবেশ স্থান পরিবর্তন করে শনিবার সকাল ১০টায় চরমুগরিয়া বিএনপি অফিসে পুনরায় সমাবেশ করার আয়োজন করে নেতাকর্মীদের আমন্ত্রন জানানো হলে বিভিন্নস্থান থেকে নেতা কর্মীরা চরমুগয়িরা এলাকায় একত্রে জড়ো হলে পুলিশ এসে প্রথম দফা লাঠিচার্জ করে তা পন্ড করে দেয়।
পরবর্তীতে সকাল ১১টায় ঢাকা থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ স্থলে আসলে স্থানীয় বিএনপির নেতারা আবু বকর সিদ্দিক হাই স্কুল মাঠে পুনরায় কর্মীসমাবেশের আয়োজন করলে পুলিশ সেখানেও নেতাকর্মীদের উপর দ্বিতীয়দফা লাঠিচার্জ করে । তখন কতিপয় আওয়ামীলীগের কর্মীরা পুলিশের উপস্থিতিতেই বিক্ষোভ মিছিল বের করে সমাবেশে স্থলে পৌছে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ পর পর ৪ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে সমাবেশ পন্ড করে ও ব্যানার ছিনিয়ে নেয়।পুলিশের লাঠিচার্জে আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে বিএনপির যৌথ কর্মীসভায় পুলিশের লাঠিচার্জ, গন গ্রেফতার প্রসংগে বিএনপি’র কেন্দীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমাদের এই সভা আয়োজনের উপর নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রশাসন কোন ধরনের ১৪৪ ধারাও জারি করেনি। তবুও তারা বিনা উস্কানীতে আমাদের এই কর্মসূচীতে নেতা কর্মীদের লাঠিচার্জ করে পন্ড করে দিয়েছে। মুখে গনতন্ত্রের কথা এ সরকার বললেও কাজে তার উল্টো করছে।পুলিশ নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করেছে। গ্রেফতার করেছে। আমি দাবী করছি, যারা অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের উপরে লাঠিচার্জ করেছে তাদের বিচার চাই।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, সমাবেশ স্থলের সাথে রাস্তায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে যানচলাচল ব্যাহত হওয়ায় তা অপসারনের জন্য কিছুটা লাঠিচার্জ চালানো হয়েছে। এতে হয়ত ১০/১২ জন আহত হতে পারে। এছাড়া বেশ কয়েজনকে আটক ঘটনা ও স্বীকার করেন তিনি।
এদিকে বিএনপির সমাবেশে পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকার মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি ও জেলা সাংবাদিক সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন পুলিশের লাঠিচার্জের শিকার হন। পরে সংশ্লিস্ট পুলিশ কর্মকর্তার দু:খ প্রকাশের মধ্য দিয়ে বিষয়টি সমাধান হয়। এ ঘটনায় সংস্থার সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক ফোরকান আহমেদ নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন