স্টাফ রিপোর্টার :চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিবসহ দলের নেতাদের ওপর আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের আকস্মিক আক্রমণ রাষ্ট্রের সবোর্চ্চ ব্যক্তির নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নির্দেশেই এই ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, রাজনৈতিক ভদ্রতার নিয়ম-কানুন মানা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যে নেই। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস আর গুন্ডামীকেই নিজেদের জীবনে-আচরণে-কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। আওয়ামী-রাষ্ট্র সমালোচনা ও বিরোধীদলের গণতন্ত্রস্বীকৃত তৎপরতাকে স্তব্ধ করে দেয়া বাধ্যতামূলক কর্মসূচি বলে মনে করে।
বিএনপির এই নেতা প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বলেন, যারা প্রাকৃতিক মহাদুর্যোগে নিপতিত উপদ্রæত অসহায় মানুষকে ফেলে নির্বিঘেœ বিদেশ সফর করতে পারে, তারা সব কিছুই করতে পারে। জনগণ দেখল সরকারি সন্ত্রাস ও গুন্ডামির অভিনব বেপরোয়া, উদ্ধত্য। কারণ রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির প্রটেকশন ও উসকানিতে সন্ত্রাসীরা উৎসাহিত হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নির্দেশেই এই ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, গাড়ীবহরের ওপর সন্ত্রাসীরা বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষিপ্ত করতে থাকে, ধারালো অস্ত্র নিয়ে গাড়ীগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাঁর সফরসঙ্গী বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মীর ফাওয়াজ হোসেন শুভ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বকরসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।
শেখ হাসিনার দু:শাসনের প্রকোপ এখন বিপজ্জনক রূপ ধারণ করেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র পূণরুজ্জীবনের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহ, বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ, নাগরিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিবর্গ, মুক্তচিন্তার লেখক, বিবেকবান সাংবাদিক সবাই শেখ হাসিনার চরম রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার। নির্বাচন আসার আগেই গুন্ডামী ও সন্ত্রাসকে যেভাবে প্রজনন করা হচ্ছে তাতে আগামী জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হলে অবাধ-সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কী শোচনীয় বিপর্যয় ঘটবে তা সহজেই অনুমেয়।
রাঙ্গুনিয়ায় হামলা প্রতিবাদে গতকাল রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করে রিজভী বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীরা কর্মসূচি পালন করেছে। তারও উত্তর সরকার দিয়েছে গ্রেপ্তার, উৎপীড়নের মধ্য দিয়ে।
গত রোববার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও নেত্রকোনায় স্থানীয় বিএনপির ইফতার মাহফিলেও আওয়ামী লীগকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, গণবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এক অজানা ভয়ে আওয়ামী লীগের মনস্তাত্তি¡ক আবহাওয়া বদলে গেছে। পতনের আশঙ্কায় তারা উদভ্রান্ত হয়ে গুন্ডামিতে নেমে পড়েছে। তারা গুন্ডা রাজত্ব কায়েম করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।
শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন যে সম্ভবপর নয়, বর্তমান অবস্থাকে তারই প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুস সালাম, হাবিব উন নবী খান সোহেল, এমরান সালেহ প্রিন্স, হাবিবুল ইসলাম, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, মুনির হোসেন, শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন