শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ফরহাদ মজহারকে নিয়ে বিএনপির বক্তব্য উদভ্রান্তের প্রলাপ -আ‘লীগ

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিশিষ্ট কবি, লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পিছনে সরকারের এজেন্সি জড়িত- বিএনপির এমন অভিযোগের সমালোচনা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দলের পক্ষে ধানমন্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ একে ‘উদভ্রান্তের প্রলাপ’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ জুন মাস ক্লোজিং ও ফরহাদ মজহারের নিখোঁজ নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন প্রকৃতপক্ষে তা উদভ্রান্তের প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়।
প্রসঙ্গত: গতকাল সোমবার ফরহাদ মজহার নিখোঁজ হওয়ার পর রিজভী বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ফরহাদ মজহারের অপহরণে সরকারের এজেন্সি জড়িত। এ বক্তব্য আসলে রিজভীর খিটখিটে মেজারের উদভ্রান্তের প্রলাপ ছাড়া কিছু না বলেও মন্তব্য হাছানের।
অপহরণের ১৮ ঘণ্টার মধ্যে ফরহাদ মজহার উদ্ধার হওয়ায় সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা হাছান মাহমুদ বলেন, সম্ভবত, রিজভী আহমেদের মেজাজ আরও খিটখিটে হয়েছে এ কারণে যে, তিনি হয়তো বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিদেশে যাওয়ার পর আশা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া তাকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেবেন। কিন্তু খালেদা জিয়া তা না করায় তার (রিজভী) মনে কিছুটা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তিনি আশাহত হয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ছাড়িয়ে যেতে মিথ্যাচারকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলামের মিথ্যাচারের রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন রিজভী।
আওয়ামী লীগের এই প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে প্রতিপক্ষকে অভিযুক্ত করা। দলটিরা নেতারা কারণে-অকারণে সরকারকে দোষারোপ করেন। এটা তাদের দীর্ঘ দিনের লালিত অভ্যাস। এ দলের এখন কর্মসূচি হচ্ছে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করা। তাদের রাজনীতি এখন শুধু সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সকাল বেলা একটি সংবাদ সম্মেলন, বিকাল বেলা আরেকটি সংবাদ সম্মেলন, আবার দুপুর বেলায়ও সংবাদ সম্মেলন। বিএনপি এখন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে না। বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে প্রতিপক্ষকে অভিযুক্ত করা।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন যাবৎ রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতারা যে বক্তব্য রেখেছেন সেগুলোর জবাব দেয়ার প্রয়োজন আমরা মনে করি না। শুধু বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো আয়নায় তাদের চেহারা দেখার জন্য। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে হাছান বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পর পর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেন আর মামলায় হাজিরা দেন না অসুস্থতার ভান করেন আর অন্যদিকে মানুষ পুড়িয়ে মারেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যে শুধু একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দল তা নয়, তারা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। কয়েকদিন আগে কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমানের সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, যে সরকারের অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেন, যে দলের চেয়ারপারসন কালো টাকা সাদা করেন, যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য কালো টাকা সাদা করেন, যে দলের চেয়ারপারসন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেন; সেই দলের নেতারা যখন দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলেন তখন মানুষের মুখে হাসি পায়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে তথ্য রয়েছে, একটি হত্যা মামলার আসামী রক্ষায় ২১ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন তারেক রহমান। বিএনপি নেত্রীর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা ২১ কোটি ৫৫ হাজার ৩৯৪ টাকা দেশে ফেরত আনা হয়। এই টাকা বহুজাতিক কোম্পানি সিমেন্স থেকে ঘুষ হিসেবে নিয়েছিলেন কোকো।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাত করেছেন, এখন তিনি মামলায় হাজিরা দেন না। দেশে উপস্থিত থেকে সুস্থ অবস্থায় মামলায় হাজিরা না দেয়ার রেকর্ডটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। তিনি এতিমের টাকা আত্মস্বাৎ করেছেন এবং মামলায় হাজিরা দেন না। তিনি একদিকে অসুস্থতার ভান করেন, অন্যদিকে মানুষ পুড়িয়ে মারেন। তাই আপনারা মিথ্যাচার না করে কিভাবে এ থেকে বেরিয়ে আসা যায় সেই চেষ্টা করুন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাশ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন ত্রাণ ও সামাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন