শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

যারা ’৭২-এর সংবিধানের কথা বলে তারা জ্ঞানপাপী-মওদুদ আহমদ

| প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সরকারের যেসব লোক ’৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন তারা আসলে জ্ঞানপাপী। তাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ। কারণ ওই সংবিধানের মাধ্যমেই দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। গতকাল (শনিবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ আখ্যা দিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান খুব ভাল সংবিধান ছিল। সেই সংবিধানকে আপনারাইতো খন্ডবিখন্ড করেছেন। এখন আবারো ৭২’র সংবিধানের কথা বলছেন। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন।
বিএনপি’র এই নেতা বলেন, ৭ জন বিচারপতি সর্ব সম্মতিক্রমে ১৬তম সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেছেন। এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটা দেশের সকল শ্রেণির মানুষের মনের ইচ্ছার প্রতিফল ঘটিয়েছে। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ আপনারা ৭২’র সংবিধানের কথা বলছেন আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। আপনারাই চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২’র সংবিধানকে খন্ড-বিখন্ড করে একদলীয় স্বৈরাচারি সরকার কায়েম করেছিলেন। আপনারা কোন মুখে ৭২’র সংবিধানে ফিরে যেতে চান? ’৭২ সালের সংবিধানের কথা বলেন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন ’৭২ সালের সংবিধানকে কি করেছেন? বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলেন এবং পার্লামেন্টের দ্বারা বিচারকদের অপসারণের কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে তখন কি করেছিলেন? সেই সংশোধনীতে কি লিখলেন? কোনো ইপপিচমেন্ট করা যাবে না। ১১৬ নং অনুচ্ছেদ কারা বাতিল করেছিল? যারা এসব কথা বলেন, তারা জ্ঞানপাপী, বাস্তববিবর্জিত ব্যক্তি। তাদের বলা উচিত ৭২ সালের সংবিধান ছিল না, আর নাই। যারা রচনা করেছিল তারাই সেই সংবিধানকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে সমস্ত গণতন্ত্র কেড়ে নিয়ে সংবিধান সংশোধন করেছিলেন।
সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। আজকে আইনের শাসন নাই, দলীয় শাসন চলছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দেশের মানুষের শেষ ভরসা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য এই রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা যারা বিরোধী রাজনীতি করি তারা ন্যায় বিচার পাইনা। বিশেষ করে নিম্ন আদালতে। বলা হচ্ছে বিচার বিভাগ আলাদা করা হয়েছে। তাই আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে পৃথক সচিবালয় গঠন করা হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে কোনো সরকারই উদ্যোগ নেয়নি। সুপ্রিমকোর্ট করেছে এজন্য তাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, দিস ইজ এ স্টুপিড পার্লামেন্ট, এটা ফলস পার্লামেন্ট।
অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই রায়ে সারা দেশের মানুষ খুশি আর আপনি হতাশ। তার মানে কি করবে বড় জ্বালা সইতে পারছে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন মুক্তিযুদ্ধের পর কোথায় ছিল। এতগুলো বছর গেল এই সংসদ আসার আগে কি কেউ প্রশ্ন করেছিলেন। অবশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেতে কুখ্যাত বিষয় হয়েছিল ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে। যার মাধ্যমে সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল।
ফরহাদ মজহারের অপহরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ফরহাদ মজহারের কেইসটা বানানো হলো কেনো? হাজার কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে পাচার করেছেন ওইটা ধামা চাপা দেওয়ার জন্য। স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন