পান্থপথে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে জঙ্গি সাইফুল ইসলামের সাথে আরও কয়েক সহযোগী ছিল। ঘটনাস্থলের আশপাশে এদের অবস্থান ছিল। গতকাল বুধবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে শব্দ দূষণ ও হাইড্রলিক হর্ন বন্ধে করণীয় শীর্ষক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) আছাদুজ্জামান মিয়া এ সব তথ্য জানান। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে জঙ্গি সাইফুলের সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। তার সহযোগীদের ধরতে গোয়েন্দারা কাজ করছেন। সাইফুল নব্য জেএমবির সদস্য ছিলেন উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সাইফুল মাত্র কিছুদিন আগেই জেএমবিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁকে ইত্তেহাদী হামলার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছিল। হোটেল ওলিওর ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে সাইফুলের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। তাই কম সময়ের মধ্যেই তাঁর পরিচয় জানা গেছে। ডিএমপি কমিশনার দাবি করেন, বাংলাদেশে বড় কোনো জঙ্গি হামলা বা নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি নেই। এরই মধ্যে নব্য জেএমবি ও আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সাংগঠনিক সক্ষমতা অনেকটাই কমে গেছে। দেশে বড় কোনো নাশকতা ঘটানোর কোনো শক্তি নেই এদের। তবে বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি ঘটনা ঘটাতে পারে। গত মঙ্গলবার সকালে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের চতুর্থ তলায় পুলিশের অপারেশন আগস্ট বাইট নামের জঙ্গি অভিযানের সময় মারা যান সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা সাইফুলের বিষয়ে তদন্ত করেছি। এতে তার ও তার পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল এবং তার প্রিভিয়াস কি সম্পৃক্ততা ছিল তা জানা গেছে। এটা নিশ্চিত করতে আরও তদন্ত প্রয়োজন। ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া আরো বলেন, পরিচয় যাই হোক, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে উল্টোপথে গাড়ি নিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মিডিয়াতে স্পষ্টভাবে বলেছেন, কোনো মন্ত্রী-এমপির গাড়িও উল্টাপথে চলতে পারবে না। যদি আইন অমান্য করেন, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের কঠোর অবস্থানের পরও এখনও অনেক ক্ষেত্রে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তথাকথিত প্রভাবশালী মহল এখনো উল্টোপথে গাড়ি চালাতে চায়। এতে পুলিশ বাধা দিলে তাদেরকে নাজেহাল করার অপপ্রয়াস আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। কিন্তু কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে আমরা আমাদের পেশাদারিত্ব পালন করে যাচ্ছি। পুলিশ কমিশনার বলেন, আমি বিনয়ের সাথে আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই, পরিচয় যাই হোক, ট্রাফিক আইন ভায়োলেশন করলে, উল্টোপথে গেলে, সিগন্যাল ভায়োলেশন করলে, অবৈধ পার্কিং করলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা রাতারাতি সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন আছাদুজ্জামান মিয়া। নাগরিকদের মনোভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, এমনকি আফ্রিকার দেশেরও ট্রাফিক সিগন্যাল মানা হয়, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে ট্রাফিক সিগন্যাল কেউ মানতে চায় না। আইন মেনে সুশৃঙ্খলভাবে কেউ গাড়ি চালাতে চায় না। কেউ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চায় না। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয়। হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো হয়। ওয়ানওয়ে রোড মানে না, উল্টাপথে গাড়ি চালিয়ে যানজটকে ভয়াবহ আকারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন