বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জরির প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। দলটির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, লাঠিচার্জ ও ছাত্রলীগের হামলায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশ-বিএনপির মধ্যে বরিশালে বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নেত্রকোনায় পুলিশী ব্যারিকেডে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি, ল²ীপুরে স্বেচ্ছাসেবকদল, নারায়ণগঞ্জে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের মিছিলে হামলা করেছে ছাত্রলীগ।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ১৪৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি রাজধানীর থানায় থানায় বিক্ষোভ করেছে। একইভাবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছে। এছাড়া ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদি, গাজীপুর, খুলনা, টাঙ্গাইল, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, ফেনী, কুমিল্লা, সিলেট, ও যশোরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র উদ্যোগে থানায় থানায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসব মিছিলের মধ্যে বাড্ডা থানা বিএনপির একটি মিছিল মোঃ মিরাজ উদ্দীন বাদল এর নেতৃত্বে শুরু হয়। পল্লবী থানা বিএনপি একটি মিছিল কমিশনার সাজ্জাদ ও বুলবুল মল্লিকের নেতৃত্বে, খিলক্ষেত থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী এসএম ফজলুল হকর নেতৃত্বে, তেজগাঁও থানা বিএনপির মিছিলটি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিঃ যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারের নেতৃত্বে, বনানী থানার একটি মিছিল ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান ফাহিমের নেতৃত্বে বনানী কবরস্থান থেকে শুরু হয়ে বনানী মাঠে শেষ হয়। শেরে বাংলা নগর থানা বিএনপির একটি মিছিল স্কয়ার হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে সমরিতা হাসপাতালের সামনে শেষ হয়। উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির একটি মিছিল হাজী দুলালের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় মিছিলটি হাউজ বিল্ডিং থেকে শুরু হয়ে কিছু দূর অগ্রসর হলে পুলিশি বাঁধায় মিছিলটি পন্ড হয়ে যায়। উত্তরা পশ্চিম থানার আরেকটি মিছিল আব্দুস সালাম ও মোস্তফা কামাল হৃদয়ের নেতৃত্বে শুরু হয়। উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপির এম এ মনির হাছান এর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল আজমপুর থেকে থেকে শুরু হয়ে হাউজ বিল্ডিং এর সামনে শেষ হয়। মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির একটি বিক্ষোভ মিছিল আনন্দ বিদ্যালয় হতে শুরু হয়ে কলেজ গেট এসে শেষ হয়। বিমান বন্দর থানা বিএনপির একটি মিছিল ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন ও প্রচার সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে, দারুস সালাম বিএনপির একটি মিছিল এইচ.এম ইমরান, মোঃ ফারুক হোসেন ও আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে, তুরাগ থানা বিএনপির একটি মিছিল, রামপুরা থানা বিএনপির একটি মিছিল ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সাইফুর রহমান মিহিরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
একইভাবে মহানগর বিএনপি’র নেতা কে.এম জোবায়ের এজাজের নেতৃত্বে নিউমার্কেট থানার একটি বিক্ষোভ মিছিল সান্সেল্যাবরেটরীর মোড় থেকে শুরু হয়ে এ্যালিফে›ট্ট রোড, বাটা সিগনালে গিয়ে শেষ হয়। কাজী মাহবুব মাওলা হিমেল, শ্যামপুর থানার একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয় জুরাইন বাজার থেকে শুরু করে গেন্ডারিয়া রেল ষ্টেশনে গিয়ে শেষ হয়। কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির নেতা হাজী মনির হোসেন ও হাজী রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঝাউচর বেড়ী বাঁধ থেকে শুরু করে ঝাউচর প্রধান সড়কে গিয়ে শেষ হয়। খিলগাঁও থানা বিএনপির একটি মিছিল পল্লীমা সংসদ থেকে শুরু হয়ে খিদমা হাসপাতাল গিয়ে শেষ হয়। রমনা থানা বিএনপির উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল মালিবাগ রেলগেট থেকে শুরু করে মৌচাক মার্কেট গিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে। মহানগর নেতা জয়নাল আবেদিন রতন এর নেতৃত্বে ডেমরা রামপুরা রোডে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপির মিছিল যাত্রাবাড়ী বিরি বাগিচা ০১ নং গেট থেকে শুরু হয়ে ০৪ নং গেট গিয়ে শেষ হয়। লালবাগ থানার মিছিলবিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন খোকনের নেতৃত্বে পোস্তা ডাইল পট্টি লালবাগ চৌরাস্তা থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মতিঝিল থানার একটি বিক্ষোভ মিছিল নটরডেম কলেজের সামনে থেকে শুরু হয়ে ফকিরাপুল বাজার গিয়ে শেষ হয়। হাজারীবাগ থানা বিএনপির উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল টেনারী মোড় থেকে জিগাতলা টালী মোড় হয়ে হাজারীবাগ গিয়ে শেষ হয়। চকবাজার থানা বিএনপির মিছিল হরনাথ ঘোষ রোড হতে উর্দ্দু রোড পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ারী থানা বিএনপির একটি বিক্ষোভ মিছিলটি ওয়ারী এলাকা প্রদক্ষিণ করে সানাই কমুনিটি সেন্টার সামনে গিয়ে শেষ হয়। মহানগর নেতা শামসুল হুদা ও শেখ মোহাম্মদ আলী চায়নার নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। মুগদা বৌউ বাজার থেকে শুরু হয়ে আহম্মদবাদ পানির ট্যাঙ্কি গিয়ে শেষ হয়। ঢাকা মহানগর বিএনপি’র নেতা হাজী মকবুল হোসেন টিপুর নেতৃত্বে গেন্ডারিয়া থানার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে দয়াগঞ্জের মোড়ে এসে শেষ হয়। বিএনপি’র নেতা মোল্লা সাইফুলের নেতৃত্বে কোতয়ালী থানা একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পাটুয়াটলি হইতে সদরঘাট মোড় পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। এ ছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির শাহবাগ, সুত্রপুর, সবুজবাগ, কলাবাগান, পল্টন, শাহজাহানপুর, বংশাল থানার নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
স্বেচ্ছাসেবক দল: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবক দল দেশব্যাপী সকল জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পল্টন, ডেমরা, শ্যামপুর, কদমতলী, শাহবাগ, রমনা, সূত্রাপুর, বংশাল, শাহজাহানপুর, যাত্রাবাড়ী, চকবাজার, লালবাগ, মুগদা, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগ, মতিঝিল, নিউমার্কেট, সবুজবাগ ও খিলগাঁও থানা শাখা স্বেচ্ছাসেবক দলের পৃথক পৃথক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর উত্তরের পল্লবী, রূপনগর, মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, শাহ আলী, উত্তরা, তেজগাঁও, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, উত্তরখান, দক্ষিণ খান, বিমান বন্দর, খিলক্ষেত, কাফরুল, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্রদল: বেগম খালেদা জিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী। মিছিলটি সকাল ৯ টায় শাহবাগ মোড় থেকে শুরু হয়ে ঢাকা ক্লাবের সামনে দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট এর বিপরীত পাশে রমনা পার্কের গেটে সমাবেশ এর মাধ্যমে শেষ হয়। সকাল ১১ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক এবং সাধারণ সম্পাদক আসিফ রহমান বিপ্লবের নেতৃত্বে পুরান ঢাকার কোর্ট এলাকায় মিছিল করার সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ।
জবি ছাত্রদলের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা : আহত ৩
জবি সংবাদদাতা জানান : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলে কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক এবং সাধারণ সম্পাদক আসিফ রহমান বিপ্লব এর নেত্বত্বে¡ পুরান ঢাকার কোর্ট এলাকায় মিছিল করার সময় এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের হামলায় জবি শাখা ছাত্রদলের ৩ কর্মী আহত হয়েছেন।
জবি ছাত্রদলের সভাপতি জানান, প্রধান বিচারপতিকে জোড় করে ক্ষমতাহীন করে বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে বেগম খালেদা জিয়ার নামে একের পর এক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবিতে সকালে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি। এসময় আমাদের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হামলা করে কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী। এতে আমাদের কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক আর এ গনি মোস্তফাসহ আরও দুইজন আহত হয়েছেন। কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাওলাদার বলেন, ‘আমরা কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ পুরান ঢাকায় কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে দিবো না। সকালে ছাত্রদলের কিছু দুষ্কৃতিকারী পুরান ঢাকায় মিছিল করার চেষ্টা করে। আমরা কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ তাদের প্রতিহত করেছি এবং আমরা তাদের এ অপচেষ্টার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন