বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উপ সম্পাদকীয়

এককালের বঙ্গভঙ্গ-বিরোধীরাই পরবর্তীতে বঙ্গভঙ্গের জন্য উন্মত্ত হয়ে ওঠেন

মোহাম্মদ আবদুল গফুর | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গত ১৬ অক্টোবর সোমবার যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে দেশে পালিত হয়ে গেল বঙ্গভঙ্গ দিবস। ১৯০৫ সালে বৃটিশ শাসিত ভারতবর্ষে এই দিনে প্রধানত শাসনকার্যের সুবিধার জন্য তদানীন্তন বঙ্গ-বিহার-উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত বিশাল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীকে বিভক্ত করে ঢাকা রাজধানীসহ ‘পূর্ব বাংলা ও আসাম’ নামে একটি নতুন প্রদেশ সৃষ্টি করা হলে দীর্ঘ অবহেলিত মুসলিম-অধ্যুষিত পূর্ব বাংলার উন্নয়নের কিঞ্চিৎ সুবিধা হবে বিবেচনা করে এ অঞ্চলের তদানীন্তন অবিসম্বাদিত জননেতা নবাব সলিমুল্লাহ এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। পক্ষান্তরে এর ফলে কলিকাতা প্রবাসী হিন্দু জমিদাররা পূর্ববঙ্গে অবস্থিত তাদের জমিদারীতে তাদের প্রভাব হ্রাসের আশঙ্কায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এর বিরুদ্ধে বিরাট আন্দোলন সৃষ্টি করে বসেন। 

ইতিহাস পাঠকদের জানা থাকার কথা, ১৭৫৭ সালে পলাশী বিপর্যয়ের মধ্যদিয়ে এদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন পর্যন্ত নব্য শাসকদের একটা নীতিই হয়ে দাঁড়ায় প্রশাসন, প্রতিরক্ষা, জমিদারী, আয়মাদারী, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রভৃতি সকল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র থেকে বেছে বেছে মুসলমানদের উৎখাত করে যেসব স্থানে ইংরেজ অনুগত হিন্দুদের বসানো। পলাশী বিপর্যয়ের মাত্র কয়েক বছর পর ১৭৯৩ সালে পূর্বতন ভূমি-নীতি বদলিয়ে চিরস্থায়ীবন্দোবস্ত নামের নতুন ভূমি ব্যবস্থার মাধ্যমে যে নব্য জমিদার গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয় তার সিংহভাগই ছিল ইংরেজ অনুগত হিন্দু।
মুসলমানরাও সাতসমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আসা ইংরেজদের শাসন কিছুতেই সহজভাবে মেনে নিতে পারছিলেন না। মীর কাসিমের যুদ্ধ, মজনু শাহেব নেতৃত্বাধীন ফকীর আন্দোলন, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার যুদ্ধ, হাজী শরীয়তুল্লাহ-দুদু মিয়ার ফরায়েজী আন্দোলন প্রভৃতি ছাড়াও মহীশুরের হায়দার আলী-টিপু সুলতানদের লড়াই, সৈয়দ আহমদ ব্রেলভীর নেতৃত্বাধীন জিহাদ আন্দোলন, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ পর্যন্ত বিভিন্ন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন হারানো স্বাধীনতা ফিরে পেতে। কিন্তু বৃহত্তর প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের অসহযোগিতা এবং ইংরেজ শাসকদের প্রতি তাদের সমর্থনের ফলে মুসলমানদের এসব লড়াইয়ের প্রত্যেকটাতে তাদের পরাজয় হয়ে পড়ে এক অনিবার্য বাস্তবতা।
পক্ষান্তরে নব্য শাসকদের প্রতি এদেশের হিন্দু নেতৃবৃন্দের সমর্থনের ফলে ইংরেজরা তাদের স্বাভাবিক মিত্র হিসাবেই দেখতে পেয়েছেন এতদিন। কিন্তু বঙ্গভঙ্গের ফলে এই মিত্রদের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ সৃষ্টি হওয়াতে ইংরেজ শাসকরা বিব্রত বোধ করতে থাকেন এবং মাত্র ছয় বছরের মাথায় ইংরেজ শাসকরা বঙ্গভঙ্গ বাতিল ঘোষণা করে পুরাতন মিত্রদের মনোরঞ্জনের প্রয়াস পান। বঙ্গভঙ্গ বাতিল ঘোষিত হওয়ায় পূর্ববঙ্গের অবিসম্বাদিত জননেতা নবাব সলিমুল্লাহ অত্যন্ত বিক্ষুদ্ধ হন। তাঁর ক্ষোভ প্রহসনের লক্ষ্যে তাঁর অন্যতম দাবী ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয় ইংরেজ সরকার।
কিন্তু এতেও কলিকাতা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীদের নিদারুন অসন্তোষ। বঙ্গ-ভঙ্গের বিরুদ্ধে তাদের যুক্তি (কুযুক্তি!) ছিল এর দ্বারা বঙ্গ-মাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ হবে। ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তাদের কুযুক্তি ছিল এর দ্বারা নাকি বঙ্গ-সংস্কৃতি দ্বিখন্ডিত করার মত অন্যায় করা হবে। কিন্তু তাদের আরেকটি বক্তব্যে তাদের আসল মতলব ফাঁস হয়ে যায়। তাদের এ বক্তব্য ছিল : পূর্ব বাংলার অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত মুসলমান চাষা-ভূষা, তাই তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ পূর্ববাংলার মানুষরা অশিক্ষিত চাষাভূষা, তারা অশিক্ষিত চাষাভূষাই থাক, তাদের শিক্ষা বা উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই। তাদের এই বিদ্বেষী মনোভাবের দরুন প্রতিশ্রুতি ঘোষণার দীর্ঘ ১০ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯২১ সালে।
এসব ছিল ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন পাশের আগের কথা। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন পাশের পর অবস্থা অনেকটাই পালটে যায়। ঐ আইনে প্রদেশের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অনেকটাই হস্তান্তরিত হয়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের আওতায় প্রথম ১৯৩৭ সালে যে সাধারণ নির্বাচন হয় তাতেই এটা পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে এরপর মুসলিম প্রধান এ প্রদেশে মুসলমানদের হাতেই সরকারের নেতৃত্ব থাকবে। বাস্তবেও দেখা যায় সেটাই। ভারতবর্ষে বৃটিশ শাসনআমলের শেষ দিনগুলোতে প্রথমে এ. কে. ফজলুল হক, তার পর খাজা নাজিমুদ্দিন, সর্বশেষে হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী অবিভক্ত বাংলায় প্রাদেশিক প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে সম্রাজ্যবাদী বৃটিশ শাসনের অবসান হয়। এ সময় স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রথম সারিতে অবস্থান ছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও নিখিল ভারত মুসলিম লীগের। প্রথমটির দাবী ছিল ভারতকে অবিভক্ত কাঠামোতে স্বাধীনতা দিতে হবে। দ্বিতীয়টি অর্থাৎ নিখিল ভারত মুসলিম লীগের দাবী ছিল : সমগ্র ভারতবর্ষকে হিন্দু ও মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে বিভক্ত করে উত্তর পশ্চিম ও পূর্ব দিকের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় একাধিক স্বতন্ত্র স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মুসলিম লীগের এই প্রস্তাবই ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাস্তবতা বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও বৃটিশ সরকার এই লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতেই উপমহাদেশের স্বাধীনতার কাঠামো নির্বাচনে সম্মত হয়।
যদিও এই লাহোর প্রস্তাবের কোথাও পাকিস্তান শব্দ ছিলনা, মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে এ প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার খবর পর দিন হিন্দু পত্রিকাসমূহ প্রকাশিত হয় “পাকিস্তান প্রস্তাব গৃহীত” এই শিরোনামে। পরবর্তীকালে মুসলিম লীগও লাহোর প্রস্তাবে উল্লেখিত স্বাধীন রাষ্ট্রকে পাকিস্তান বলে স্বীকার করে নিয়ে এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে পাকিস্তান আন্দোলন হিসাবেই গ্রহণ করে। ১৯৪৭ সালে বাস্তবে এ রাষ্ট্র যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তা পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসাবেই পরিচিতি লাভ করে।
দেড় হাজার মাইলের অধিক দূরত্বে অবস্থিত ভৌগোলিকভাবে বৈরী-রাষ্ট্র দ্বারা বিচ্ছিন্ন দুই ভূখন্ড মিলে একটি রাষ্ট্র গঠনের দৃষ্টান্ত ইতিহাসে প্রায় নেই বললেই চলে। এই বাস্তব সমস্যা বিবেচনায় রেখেছিলেন লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপক ও সমর্থক নেতারা। তাই লাহোর প্রস্তাবে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখিত ছিল যে, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে উপমহাদেশের মুসলিম অধ্যুষিত পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে যে একাধিক রাষ্ট্র গঠিত হবে তা হবে স্বতন্ত্র, স্বাধীন ও সার্বভৌম। তবে ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ টিকেটে নির্বাচিত আইন সভার সদসদের নিয়ে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী কর্তৃক উত্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, লাহোর প্রস্তাবে উল্লেখিত একাধিকের বদলে আপাতত পাকিস্তান একটি রাষ্ট্র হিসাবেই পরিচালিত হবে। জনাব সোহরওয়ার্দী তাঁর এই প্রস্তাব উত্থাপনকালে যে ভাষণ দেন, তাতে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেছেন, পাকিস্তানই আপনার শেষ দাবী কিনা। এ প্রশ্নের কোন জবাব আমি দেব না। তবে একথা আমি অবশ্যই বলব বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানই আমার প্রধান দাবী।” অর্থাৎ তিনি অদূর ভবিষ্যতে উপমহাদেশের মুসলিম অধ্যুষিত পুর্বাঞ্চলে একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র (বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা বাতিল করে দিলেন না।
তাছাড়া ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামের দু’টি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রাক্কালে মুসলিম লীগের জনাব হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী ও জনাব আবুল হাশিম এবং কংগ্রেসের শরৎচন্দ্র বসু প্রমুখ নেতার যৌথ উদ্যোগে ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চলে। বিশস্ত সূত্রে জানা যায়, এই উদ্যোগের প্রতি মুসলিম লীগের নেতা কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহরও সমর্থন ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের গান্ধী, নেহেরু, প্যাটেল প্রমুখ অবাঙ্গালী নেতৃবৃন্দ এবং হিন্দু মহাসভার বাঙ্গালী নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রবল বিরোধিতার কারণে এই উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। সে সময় শেষোক্ত বাঙালী নেতা (শ্যামাপ্রসাদ) এমনও বলে ছিলেন, ভারত ভাগ না হলেও বাংলা ভাগ হতেই হবে। নইলে বাংলার হিন্দুরা চিরতরে বাঙ্গালী মুসলমানের গোলামে পরিণত হবে। এতে কী প্রমাণিত হয়? প্রমাণিত হয় যে বাঙালী মুসলমানের চাইতে অবাঙ্গালী হিন্দু নেতৃত্ব তাঁর কাছে অধিক কাম্য ছিল।
এখানে উল্লেখ যোগ্য যে, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরোধীরাই ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের জন্য উন্মত্ত হয়ে উঠেছিলেন। যারা ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গকে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ বলে বিবেচনা করতেন, তারা ১৯৪৭ সালে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদকে অবশ্য পালনীয় পূণ্য বলে বিবেচনা করেন কি শুধু তাদের মুসলিম বিদ্বেষের কারণে? আসলে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ তাদের কাছে কখনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের ফলে ঢাকা রাজধানীসহ “পূর্ব বঙ্গ ও আসাম” নামের নতুন প্রদেশ সৃষ্টি হওয়ায় পূর্ব বঙ্গে অবস্থিত কলিকাতা প্রবাসী হিন্দু জমিদারদের জমিদারীতে তাদের প্রভাব হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কায়ই তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন সৃষ্টি করে ছিলেন। বঙ্গভঙ্গকে যদি তারা বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপই বিবেচনা করতেন, তা হলে মাত্র তিন দশক পর সাতচল্লিশে এসে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ করতে তারা মরিয়া হয়ে উঠতেন না।
সাতচল্লিশে এসে তারা বাঙ্গালী মুসলমানের পরিবর্তে অবাঙ্গালী হিন্দু নেতৃত্বকে বরণ করতে সার্বভৌম বাংলা আন্দোলনকে যেভাবে ব্যর্থ করে দেন, তাতে প্রমাণিত হয় ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের মধ্যে তারা যে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের অভিযোগ এনেছিলেন তা ছিল ভূয়া, আসলে পূর্ববঙ্গে অবস্থিত জমিদারীতে কলিকাতা প্রবাসী হিন্দু জমিদারদের প্রভাব হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কাই ছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতার মূল কারণ।
সাতচল্লিশে ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে বাঙ্গালীদের বৃহত্তর সর্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের বিরোধিতা করে অবাঙ্গালী ভারতীয় নেতৃত্বকে বরণ করে নেয়ার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছেন বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের কথা ছিল একটা ডাহা মিথ্যা বাহানা। আসলে তারা চেয়েছিলেন পূর্ববঙ্গে অবস্থিত তাদের জমিদারীতে তাদের প্রভাব যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। নেহায়েৎ পার্থিব স্বার্থেই যে সেদিন তারা বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেন, বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপের ভয়ে নয়, তা প্রমাণিত হয় সাতচল্লিশে যখন তারা ভঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের জন্য উম্মত্ত হয়ে ওঠেন। আসলে বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের বিষয় ১৯০৫ সালে তাদের কাছে কখনও আসল বিবেচ্য ছিল না। পূর্ববঙ্গে অবস্থিত জমিদারীতে তাদের প্রভাব হ্রাসের আশঙ্কাই তাদের ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে ঠেলে দিয়েছিল। সাতচল্লিশে ঐরকম কোন আশঙ্কা না থাকায় তারা নিজেরা তথাকথিত বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের জন্য উম্মত্ত হয়ে উঠেছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
২১ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:৩০ এএম says : 1
100% All right
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন