শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

বিল-বাঁওড়ে পানি আছে নেই মাছ

মাগুরায় মাছের ঘাটতি ২ হাজার মেট্রিক টন

মাগুরা থেকে সাইদুর রহমান : | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাগুরা জেলায় এই হেমন্তে বিল-বাঁওড়ে পানি থাকলেও মাছ নেই। মাছ না থাকার কারণে জেলেরা জাল ওঠিয়ে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সুষ্ঠুু পরিকল্পনা না থাকায় মাছের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। কৃষকরা তাদের চাষাবাদের প্রয়োজনে বিল-বাঁওড়ের পানি ছেড়ে দেয়। আর এ কারণে বিল বাঁওড়ের পানি আগের মতো দীর্ঘদিন জমে না থাকায় মাছ বেশি বড় হতে পারে না। ফলে মাছের ঘাটতি পূরণে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে সব বিল-বাঁওড় ও জলাভ‚মি পানিতে ভরে গেলেও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। জেলা মৎস্য বিভাগ প্রতি বছর ঘটা করে মাছের উৎপাদন বাড়ানোর নামে মুক্তজলাশয়ে মাছের পোনা আবমুক্ত করলেও তা তেমন কাজে আসছে বলে মনে হয় না। জেলার প্রধান নদ-নদীগুলো বর্তমানে পানির অভাব থাকলেও বর্ষার সময় নদী পানিতে ভরে যায়। জেলায় জেলেদের সংখ্যাও কম নয়, তাদের রয়েছে প্রয়োজনীয় জাল ও নৌকা কিন্তু নদ-নদীতে নেই মাছ। সারাদিন জাল বেয়ে যে পরিমাণ মাছ তারা পান তা দিয়ে একজনের ভরণপোষণ চালানো কষ্টকর। তার উপর রয়েছে তাদের পরিবার। এ কারণে অনেকেই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন। মাগুরা জেলায় মাছের চাহিদা বছরে ১৭ হাজার ৪৩১ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় ১৫ হাজার ৬০ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকছে প্রতি বছর দুই হাজার ৩৭০ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের ২০ মেট্রিক টন মাছের পোনা অবমুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতি বছর জেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে সরকারিভাবে মুক্তজলাশয়ে মাছের পোনা ছাড়া হয় নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কিন্তু সে মাছ যায় কোথায়, তা কেউ জানেন না। মাগুরা জেলায় প্রধান নদ-নদীর মধ্যে গড়াই, মধুমতি, নবগঙ্গা, কুমার ও ফটকি নদী প্রধান। শুষ্ক মৌসুমে এসব নদ-নদীতে পানি তেমন একটা না থাকলেও বর্ষা মৌসুমে নদীগুলো পানিতে ভরে যায়। প্রতি মৌসুমে মৎস্য বিভাগ মৎস্য সপ্তাহ পালন করে। বিভিন্ন নদ-নদীর জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয় ঘটা করে। সরকারের লাখ লাখ টাকার পোনা ছাড়ার নামে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়। কিন্তু কি পরিমাণ মাছের পোনা ছাড়া হয় তা কেউ জানেন না। আসলে ছাড়া হয় নাকি খাতা-কলমে দেখানো হয়, এ প্রশ্ন দেখা দেয় তখনই; যখন জলাশয়ে মাছের কোনো দেখা পান না জেলেরা। সরকারের উদ্দেশ্য মানুষের আমিষের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করার সাথে জেলার ৫০ হাজার জেলে পরিবারের কাজের সুযোগ সৃষ্ঠি করা। কিন্তু এ পরিকল্পনা কাদের কারণে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না তা কেউ কোনো সময় হিসাব নেন না। জেলায় মৎস্য বিভাগের হিসাব মতে, জেলায় ছয় হাজার পুকুর, ৮১টি বিল, ৬৮টি বাঁওড়, ৫১টি খাল, আটটি নদী ও ২০টি প্লাবন ভ‚মি রয়েছে। এ হিসাব হয়তো খাতা-কলমে, বাস্তবে এর মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না, এমন কথা বলে থাকে অনেকেইে।
স্থানীয়রা মনে করেন, মাগুরা জেলার মাছের ঘাটতি কমাতে মৎস্য বিভাগকে আরো আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। কেবল প্রতি বছরের মতো মৌসুমে কয়েকটি জলাশয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্তির মধ্যে কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখলে মাগুরার মাছের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে না। সরকারের পরিকল্পনাও কোনোদিন বাস্তবায়ন হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন