মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দুপচাঁচিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পানিবদ্ধতা : শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মো. গোলাম ফারুক | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলা মডেল (পাইলট) উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ পানিবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়াও উপজেলা সদরের নাগর নদীর কোল ঘেঁষে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদ ধন্য দুপচাঁচিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি আজ নানা সমস্যায় জর্জড়িত।
জানা যায়, এলাকার বেশ কিছু বিদ্যানুরাগী বিশেষ করে বাবু গুরুচরণ কুন্ডুর উদ্যোগে ও স্থানীয় চৌধুরী পরিবারের প্রচেষ্ঠায় ১৯২৩ সালে দুপচাঁচিয়া হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্কুলটি বিদ্যাদানে সনামধন্য হয়ে ওঠে। ১৯৩৭ সালে বিশ্বকবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্কুলটির উপর গুরুত্ব দিয়ে একটি আশীর্বাদ বাণী লিখে দেন। বাণীটি ছিল ‘দেশে জ্ঞানের অভিষেচন কার্যে দুপচাঁচিয়া হাইস্কুল উন্নতম কেন্দ্র রূপে যে সাধনায় প্রবৃত্ত তাহাতে তাহার সফলতা আমি কামনা করি’। কবিগুরু ১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের করকমলে দুপচাঁচিয়া হাইস্কুলের জন্য উক্ত আশীর্বাদ বাণীটি তুলে দেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেই সময় কৃতী ছাত্র বাবু রমেন্দ্র নাথ পোদ্দার দুপচাঁচিয়া হাইস্কুল থেকে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল। পরবর্তীতে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৬ সালে এই স্কুলটি পাইলট স্কিমে গড়ায়। এর নাম তখন থেকে দুপচাঁচিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিতি লাভ করে। ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এই মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ আটজন শিক্ষক-শিক্ষিকা দুইজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭৩৩ জন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান অফিস সহকারীসহ শিক্ষকের প্রায় ২০টি পদ শুন্য রয়েছে। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে স্থানীয়ভাবে খন্ডকালীন আটজন শিক্ষক নিয়োগ করে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। বিদ্যালয়টিতে সরকারিভাবে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে একাডেমি ভবন ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রায় এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল একাডেমি ভবন নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষকের সমস্যা ছাড়াও মাঠের সমস্যাটি একটি বড় সমস্যা। বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের সামনের পুকুরটি প্রায় কয়েক বছর পূর্বে অর্ধভরাট করা হলেও দীর্ঘ দিনেও তা সম্পূর্ণ ভরাট হয়নি। ফলে অর্ধভরাটকৃত এই পুকুর ঘেঁষে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও অর্ধভরাটকৃত এই পুকুরে প্রায় সারা বছর পানি থাকায় ছাত্রছাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে গতকাল বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তৌফিক আলম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ‘দৈনিক ইনকিলাব’কে জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন এই ভবন সংলগ্ন পুকুরটি ২০০৫-৬ অর্থবছরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে মাটি ভরাটকরণ প্রকল্প গ্রহণ করে এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় তা সম্পূর্ণভাবে ভরাট করা সম্ভব হয়নি। একই সাথে তিনি অর্ধভরাট পুকুরটি ভরাটসহ বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সকলের সহযোগিতাও কামনা করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনিছুল ইসলাম লিটন জানান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদ ধন্য এই বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং সুনাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। অর্ধভরাট পুকুরটিতে মাটি ভরাট করে ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলার উপযোগী মাঠ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলেই অর্ধভরাটকৃত এই পুকুরটি সম্পূর্ণ ভরাট করে মাঠ তৈরি করা হবে বলেও তিনি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন