শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

আ.লীগের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হলেও বিএনপিতে বিরাজ করছে আতঙ্ক

প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা
প্রথম দফায় ফরিদপুর জেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন না হলেও তৃতীয় দফায় জেলার ৮১টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারি দলের প্রার্থীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করলেও নীরব রয়েছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত হলেও বিএনপিতে ভিন্ন চিত্র। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রার্থীদের মাঝে এখনো তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রতিদিনই শো-ডাউন, নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে ফরিদপুর জেলায় বিএনপি সমর্থিত যেসব চেয়ারম্যান রয়েছেন তারা নানা শঙ্কা এবং আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। নির্বাচনে তারা অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচন এলে মামলা দিয়ে তাদের দূরে সরিয়ে রাখা হতে পারে। তাছাড়া নির্বাচনে অংশ না নিতে তাদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপি সমর্থিত দুই ডজন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের সাথে ‘সখ্য’ বজায় রেখে চলছেন। নির্বাচনের সময় বিএনপির কিছু সুবিধাবাদী চেয়ারম্যান ‘ডিগবাজি’ দিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নেবেন এমন প্রার্থীর সংখ্যা নেহাতই কম নয়। ফলে বিএনপি তাদের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই নিয়ে বেশ সমস্যার মধ্যে পড়বেন এমনটি স্বীকার করেছেন খোদ দলটির প্রথম সারির একনেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরিদপুর সদর উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা জানিয়েছেন, তার ওপর আওয়ামী লীগে যোগদানের চাপ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ‘নৌকা প্রতীকে’ লড়বেন। এ ছাড়া তার কাছে বিকল্প কিছু নেই বলে জানান। মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাকিব হোসেন চৌধুরী ইরান অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে অংশ নেয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারি দলের নেতারা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। নির্বাচনের সময় ভোট জোর করেই নেবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাছাড়া হামলা-মামলার ভয় তো রয়েছেই। একই উপজেলার বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রহিম ফকির বলেন, বিএনপি করি বলেই আমাকে সরিয়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্র হয়েছে। এবার আমাকে হারানোর জন্য সরকারি দলের নেতারা নানা ছক আঁকছেন। জনগণের ভোট ছিনিয়ে নেয়া হলে জনগণকে সাথে নিয়েই প্রতিরোধ করব। চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছি। ‘ধানের শীষ’ নিয়ে নির্বাচন করতে পারব কিনা বলতে পারছি না। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের আচরণে বুঝতে পারছি তারা জোর করে হলেও তাদের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনবেÑ এমনটাই বলতে শুনেছি। এ বিষয়ে ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে তা আশা করি না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যারা চেয়ারম্যান রয়েছেন তাদের আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। অনেকেই সে চাপ সহ্য করতে না পেরে দলবদল করেছেন। যারা আওয়ামী লীগে যাননি তাদের ওপর চাপ অব্যাহত রয়েছে। মামলা-হামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে। ভোটে দাঁড়ালে তাদের হারিয়ে দেয়া হবে বলেও আগাম প্রচার করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন