রংপুরের বদরগঞ্জের লোহানীপাড়ার কাঁচাবাড়ি বানিয়াপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিয়ুক্ত মুল আসামী ইউনুস, ইব্রাহিম, মতিয়ার, তাহের এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। ঘটনার ২০ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো আসামীদের পরিবারের লোকজনদের দাপট এবং হুমকি-ধমকির কারণে মামলার বাদী এবং স্বাক্ষীরা ক্ষেতে-খামারে যেতে পারছে না। এমনকি বাদী পক্ষের পুরুষ লোকজন এশা এবং ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদেও যেতে পারছে না। পাশাপাশি আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় একটি কথিত ভিডিও ক্লিপের ধূয়া তুলে পুলিশ, সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষের চোখকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবর জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ওই এলাকার আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী সায়েদা বেগমকে (৬০) কে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় ইউনুস, মতিয়ার, ইব্রাহিম, তাহের, তাজকুল, স্বপন, মোর্শেদসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে বদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হত্যা মামলা দায়ের করেন মৃতের ভাতিজা মমিনুল ইসলাম। এ ঘটনায় পুলিশ ওই এলাকার কামাল মিয়ার পুত্র মোখলেছুর রহমান (৬৫) এবং শাহাদত হোসেনের পুত্র আব্দুর রহমান(৫২) কে গ্রেফতার করে। কিন্তু ঘটনার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্ত ইউনুস ইউনুস, মতিয়ার, ইব্রাহিম, তাহের, তাজকুল, স্বপন, মোর্শেদকে গ্রেফতার করতে পারে নি পুলিশ। তাদের গ্রেফতার করতে পারলেই এই নৃসংশ হত্যাকান্ডের ঘটনার স্বরূপ উম্মোচিত হবে বলে মনে করেন এলাকাবাসি। এলাকাবাসির অভিযোগ, হত্যাকারীরা প্রভাবশালী ও অর্থশালী হওয়ায় তারা পুলিশকে ম্যানেজ করেছে। সেকারনে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। শুধু পুলিশই নয়, যে সাংবাদিকদেরও প্যাকেট করেছে আওয়ামীলীগ নেতা ইউনুস।
মৃতের স্বামী আব্দুল হাই জানান, আমার স্ত্রীকে ইউনুস, ইব্রাহিম, তাহের, মতিয়াররা মিলে ছুরি ও বল্লম দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ওরা এখন আমাদেরও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে ফাসি চাই আমি। নইলে আমি আমার জীবন রাখবো না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্ত করা হচ্ছে পুংখানুপুংখভাবে। আসামীও গ্রেফতারে আমাদের প্রতিদিন রাত অভিযান চলছে। কথিত ভিডিও ক্লিপ সম্পর্কে তাদের কোন কিছুই জানা নেই।
বদরগঞ্জ থানার ওসি আখতারুজ্জামান প্রধান জানান, এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চুলচেরা তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রকৃত যারা অপরাধী তাদের নামেই চার্জশিট দেয়া হবে। প্রধান অভিযুক্ত ইউনুস, মতিয়ার ও ইব্রাহিমকে গ্রেফতার সাড়াশি অভিযান চলছে। কথিত ভিডিও ক্লিপের ব্যপারে ওসি জানান, এ ধরনের ভিডিও ক্লিপের কোন বিষয় আমার জানা নেই। তবে অনেকেই অনেক কথা বলবে। আমরা সঠিক তদন্ত করছি। অপরাধীদের গ্রেফতারেও আমাদের ত্রæটি নেই। স্থানীয় এমপি আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক বলেন, ইউনুস আওয়ামীলীগ নেতা হোক আর যে কেউই হোক না কেন। সে যদি অপরাধী হয়, তা হলে সে পার পাবে না। আমি পুলিশকে ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের কথা বলে দিয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন