মো. রিয়াজ, বোরহানউদ্দিন (ভোলা) থেকে
ভোলার বোরহানউদ্দিনের ৯টি ইউনিয়নে আগামী মঙ্গলবার নির্বাচনকে ঘিরে আ.লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার ও সাধারণ মেম্বার প্রার্থীদের কুশল বিনিময়, শোডাউন, মিছিল-মিটিং ও উঠানবৈঠকে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। তবে বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্ধী আ.লীগ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী ও মেম্বার প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সহিংস ঘটনায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০ জন আহত হয়েছে। শোডাউন ও মিছিল মিটিং নিষিদ্ধ হলেও আ.লীগ দলীয় প্রার্থীরা নিজেদের জনপ্রিয়তা জানান দিতে প্রকাশ্যেই তা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রার্থীদের অস্থায়ী নির্বাচনী অফিসে ভোটারদের আপ্যায়িত করতে দেখা গেছে। ফেইসবুকে তরুণ ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে প্রতিনিয়ত পোস্ট লাগাচ্ছেন। অপরদিকে কোন ইউনিয়নেই বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের মিছিল, মিটিং, উঠানবৈঠক লক্ষ্য করা যায়নি। অধিকাংশ ইউনিয়নে কিছু ছেড়া পোস্টার দেখা গেলেও ২-১টি ইউনিয়নে তাও দেখা যায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিএনপি কর্মী জানান, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ওই প্রার্থীরা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকার জন্য মূলত প্রার্থী হয়েছেন। ভোলা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জসিমউদ্দিন হায়দার, নাজমুল আহসান জোবায়েদ, কামরুল আহসান চৌধুরী, আলমগীর চৌধুরী, মহিবুল্লাহ মৃধা, আসাদুজ্জামান বাবুল, নাগর হাওলাদার, রেজাউল করিম রিয়াজ, ও আ. রব কাজি নির্বাচন করছেন। আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে টবগী ইউনিয়নে বেলায়েত হোসেন, দেউলা ইউনিয়নে শাহাজাদা তালুকদার, পক্ষিয়া ইউনিয়নে আলাউদ্দিন সর্দার ও কাচিয়া ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আমিন নিরব প্রার্থী হন। তবে ৩ প্রার্থী উচ্চ মহলের সমঝোতায় আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দিলেও নুরুল আমিন নিরব জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন- শিহাবউদ্দিন হাওলাদার, অ্যাড. ফরিদুর রহমান, অ্যাড. আজম কাজী, আমির বেপারি, ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, জসিমউদ্দিন চৌধুরী, শেখ সাদী, সোহরাব হোসেন ও বর্তমান চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির সেলিম। তবে পক্ষিয়া ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপি সভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে উপজেলা বিএনপির সদস্য খালেদ মামুন ভূঁইয়া নির্বাচন করছেন। অপরদিকে নিজেদের প্রতিক ব্যবহারে বাধ্যবাধকতার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা জামায়াতের আমির মাও. শফিউল্লাহ কাচিয়া ইউনিয়ন ও হাফেজ মাও. হেলালউদ্দিন টবগী ইউনিয়ন থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। পৌর মেয়র ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ৮ ইউনিয়নেই তাদের একক প্রার্থী। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, কাচিয়া ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা বিএনপি সভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, প্রার্থী নির্বাচনের ব্যাপারে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। প্রচারণার ব্যাপারেও তিনি জানেন না। উপজেলা জামায়াতের আমির মাও. শফিউল্লাহ তিনিসহ অপর প্রার্থীর জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পোস্টার টাঙ্গানো ও লিফলেট বিতরণের চেয়ে তারা প্রতিটি ভোটারদের কাছে যাওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এদিকে পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ও কুতুবা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্র্ডে আ.লীগ দলীয় প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের সমর্থকদের মাঝে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ও মামলা হয়। ফলে ওই এলাকার ভোটারদের মাঝে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে। পক্ষিয়া ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দিলেও একই দলের ২ মেম্বার প্রার্থী মুখোমুখি অবস্থানে। ৮০ শতাংশ হিন্দু ভোটারের এলাকা কুতুবা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের হিন্দু ভোটাররা এক প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থরা গাবের লাঠি নিয়ে তাদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বারণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। অপরদিকে কুতুবা ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত প্রার্র্থী তার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়াসহ কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসার কল্লোল বিশ্বাস জানান, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই নেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন