মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লোহাগাড়ায় জনপ্রিয় হচ্ছে বার্মি কম্পোস্ট সার

| প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) থেকে তাজ উদ্দীন : লোহাগাড়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে বার্মি কম্পোস্ট বা জৈবসার। এই সার উৎপাদন হচ্ছে এখন ঘরে ঘরে। যার দু’টি গরু আছে সেও বার্মি কম্পোস্ট বা জৈব সার উৎপাদন করছে, যার চারটি আছে সেও এবং যার আরো বেশি আছে সেও। একজনের দেখাদেখি অন্যজনে করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে কৃষি সম্প্রসারণ কর্তৃক উদ্ভাবিত এই সার উৎপাদনের কাজ শুরু হলেও তেমন পরিচিতি পায়নি। এমনকি এই সারের ব্যাপারে কারো ধারণাও ছিল না।
এক বছর আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীম হোসেন লোহাগাড়ায় যোগদানের পর উপজেলার কৃষকদের সারের চাহিদা দেখে তিনি এই সার উৎপাদনের দিকে নজর দেন। পুরো এলাকায় তার অফিসের কর্মীবাহিনী নিয়ে প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই সারের কথা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেন। স্বল্পখরচে ও পরিশ্রমে সারটি উৎপাদন করতে পারায় কৃষকরা এর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এমনকি যারা কৃষক নয়, শখের বশে গরু পালন করছেন তারাও দুই-তিনটি চাকতি নিয়ে বর্তমানে সার উৎপাদন করছেন। ক্রেতারা সারগুলো বাড়িতে এসেই কিনে নিচ্ছেন। মাটির উপর পলিথিন বিছিয়ে বা পাকা করে তার উপর চাকতি বসিয়ে দেয়া হয়। চাকতিতে প্রতিদিন গরুর গোবর রাখা হয়। গোবরে চাকতি ভরে গেলে সেখানে কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। কেঁচোগুলো ভিয়েতনাম থেকে আমদানিকৃত। স্থানীয় কৃষি অফিস এই কেঁচোগুলো সরবরাহ করে থাকে। সারের মধ্যে কেঁেচা দেয়ার ২০ দিনের মধ্যে গোবরগুলো বার্মি কম্পোস্ট বা জৈবসারে রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি চাকায় পাঁচশত কেঁচো ছেড়ে দিতে হয়। কেঁচোর মাধ্যমে গোবরুগুলো জৈবসার হওয়ার পাশাপাশি সেখানে দেয়া কেঁচোগুলো আবার বাঁচ্চা দিয়ে থাকে।
পাঁচশত কেঁচো ২০ দিনে আরো পাঁচশত কেঁচোর বাঁচ্চা দিয়ে থাকে, যেগুলো প্রতি পিস এক-দুই টাকায় বিক্রি করা যায়। অবশ্য সার উৎপাদনের জন্য রক্ষিত চাকতির উপর ছাউনি থাকতে হয়। তবে চারদিকে খোলা রাখা যাবে। উপজেলার চুনতি সাদত আলী জানান, তিনি তিনটি চাকতি থেকে বার্মি কম্পোস্ট বা জৈবসারের পাশাপাশি ছয় মাসে পাঁচ হাজার কেঁচো বিক্রি করেছেন। লোহাগাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীম হোসেন বলেন, বার্মি কম্পোস্ট বা জৈবসার পরিবেশবান্ধব এবং মাটির স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে সবজি চাষিরা এই সার ব্যবহার করলে অন্য কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না। এই সার ব্যবহারের ফলে সবজিতে রোগের প্রাদুর্ভাবও কমে যায়। এ ছাড়াও এই সার দিয়ে উৎপাদিত সবজির স্বাদও অনেক বেশি। তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলে এই সারের ব্যাপক ব্যবহার দেখে আমি এই এলাকায় এই সার ব্যবহারের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। কৃষকদের পরামর্শের পাশাপাশি সাধ্যমতো উপকরণও দিয়ে থাকি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন