কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন : বায়ুমন্ডলের শীত শীত আবহাওয়া অনুভব করছেন মানুষজন। কুমিল্লার নগর গ্রাম-গঞ্জে ভোরে আর রাতে পড়ছে কুয়াশা। তারমধ্যে গত দুইদিন থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মৃদু হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে গুঁটি গুঁটি পায়ে এগিয়ে আসছে শীত। নগরীর বাজারগুলোতে মিলছে শীতের সবজি। বিপনীবিতান ও ফুটপাথে শুরু হয়েছে গরম কাপড়ের বেচাবিক্রি। প্রসাধনি দোকানে জমে ওঠেছে ত্বক যতেœর লোশন, ক্রিম, লিপজেল বিক্রি। লেপ-তোশকের দোকানে ব্যস্ততা বেড়েছে কারিগরদের। কুমিল্লার আবহাওয়া অফিস বলছে নভেম্বরের শেষের দিকে পুরোদমে পড়তে শুরু করবে শীত।
বর্ষার বৃষ্টি, কাশফুলের শরত পেরিয়ে প্রকৃতিতে হেমন্ত। আর হেমন্ত পেরোলেই শীত। হেমন্তের এই মাঝ পথে বইছে হিম হিম শীতল হাওয়া। কার্তিকের প্রথম সপ্তাহের দিকে সাগরে নিম্নচাপের কারণে তিন-চারদিনের বৃষ্টিপাত এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে আবারো বৃষ্টি এবং অগ্রহায়ণের শুরুতে গুঁড়ি বৃষ্টি ও ঘুমোট আবহাওয়া উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের আমেজ এনে দিয়েছে। সন্ধ্যারাত থেকেই শীত শীতভাব, ভোরের হালকা কুয়াশায় শিশিরসিক্ত রাস্তাঘাট আর তাপমাত্রা কমার আভাসই বলে দিচ্ছে শীত আসছে গুঁটি গুঁটি পায়ে। গরিব অসহায় মানুষরা আশা করছেন, এবারে পুরোদমে শীত পড়ার আগে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের শীতবস্ত্র তাদের হাতে পৌঁছবে। আর হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডাক্তার চেম্বারে আসা রোগী ও স্বজনদের আবহাওয়া বদলানোর এসময়টিতে রোগবালাই মুক্ত থাকার ব্যাপারে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন। এরপরও বিভিন্ন পরিবারে ছোট শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। সন্ধ্যার পর থেকে রাত পেরিয়ে ভোরের সকাল পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীতে অনুভ‚ত হচ্ছে হালকা শীত। গ্রাম এলাকায় হেমন্তের শুরুতেই শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। এখন চলছে হেমন্তের শেষের মাস অগ্রহায়ণ। দেশে পৌষ-মাঘকে শীতকাল ধরা হলেও অগ্রহায়ণের মাঝামাঝিতেই অর্থাৎ ডিসেম্বরের শুরুতে পুরো শীত নামবে। এরই মধ্যে কুমিল্লা নগরীর ফুটপাথ থেকে শুরু করে পোশাক বিক্রির দোকানগুলোতে গরম জামাকাপড় বেচাবিক্রিও জানান দিচ্ছে এই বুঝি শীত এলো। ধুনকররা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন লেপ-তোশক তৈরির কাজে। রাতে ঘুমানোর সময় লেপ কম্বল বের না করলেও নগরীর প্রতিটি পরিবারই কাঁথা ব্যবহার করছে। তবে গ্রামাঞ্চলে শীত জেঁকে বসায় বাক্স পোটরা থেকে লেপ কম্বল বের করে ব্যবহার শুরু হয়েছে। শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলের খেঁজুর গাছে রসের হাঁড়ি বাঁধার হিড়িক পড়েছে।
প্রকৃতির নিয়মেই প্রকৃতি চলে। তবে এখন সবকিছুতেই যেন ব্যতিক্রম চলছে। পুরোদমে শীত পড়তে আরো মাসখানেক বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে শীতের আমেজ ধীরে ধীরে পরিবেশ পাল্টে দিচ্ছে। কুমিল্লার নগর গ্রাম গঞ্জে হিমেল হাওয়া শীতের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে শরীরে। কুমিল্লা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, দিনে না হলেও এখন রাতের দিকে শীতের হালকা আমেজ অনুভ‚ত হতে শুরু করেছে। সামনে যত সময় গড়াবে রাতের তাপমাত্রা কমতে থাকেবে এবং শীতকে ত্বরান্বিত করবে। বিশেষ করে নভেম্বরের শেষের দিকে শীতের মাত্রা প্রকোপ হতে থাকবে। এদিকে শীতের আগমনীর এসময়টিতে নাক দিয়ে পানি ঝরা, হাঁচি কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে ছোট শিশু ও বয়স্করা এসবে বেশি ভোগেন। কুমিল্লা বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডাক্তারের চেম্বারে আসা রোগী ও তাদের সাথে আসা স্বজনদের শীতকালীন রোগ প্রতিরোধ এবং সাবধানতা অবলম্বনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে শীতের আগমনী বার্তায় কুমিল্লা নগরী ও উপজেলার বাজারগুলোতে গরম পোশাকের কদর বাড়তে শুরু করেছে। অনেকেই গরম কাপড় কিনতে শুরু করেছেন। ধুনকরের দোকানগুলোতেও লেপ সেলাইয়ের কাজে কারিগররা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের খাল বিলে অতিথি পাখির আগমনও ঘটছে। নগরীর ফুটপাথে ইতোমধ্যে শীতের পিঠাপুলি বিক্রির পসরাও জমে উঠেছে। বাজারে শীতের সবজির দেখা মিললেও দামে নাভিশ্বাস ওঠছে ক্রেতাদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন