রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পা দিয়ে পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

| প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মোঃ গোলাম ফারুক : দুপচাঁচিয়া উপজেলার অদম্য মেধাবী আইয়ুব মন্ডল চলতি বছরে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের পাঁচথিতা গ্রামের ফিলিপস মন্ডলের ছেলে আইয়ুব মন্ডল (১৪) ২টি হাতই বিকলঙ্গ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। পরিবারের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে আইয়ুব মন্ডল ছোট। বড় বোন যখন লেখাপড়ার জন্য স্কুলে যায় প্রতিবন্ধী আইয়ুব মন্ডল বাড়িতে খেলাধুলা করে। তারো বড় ইচ্ছা হয়, অন্যান্যদের মতো স্কুলে লেখাপড়া করার। সে পরিবারের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। তাইতো বড় বোনের অনুপ্রেরণায় সে স্থানীয় পাঁচথিতা হাসানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। প্রতিদিন পায়ে হেঁটে স্কুলে যায়। স্কুলের প্রতিটি পরীক্ষায় সাফল্য জনক ফলাফল করে সে পঞ্চম শ্রেণিতে উঠে। গতকাল ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার মোস্তফাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, এই অদম্য মেধাবী আইয়ুব মন্ডল পিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। কেন্দ্রের ৮ নং কক্ষে একটি ব্রেষ্ণে বসে পা দিয়ে কলম ধরে সে খাতায় প্রশ্নের উত্তর লিখে যাচ্ছে। কোন দিকে তার যেন কোন খেয়ালই নেই। একমাত্র উদ্দেশ্যে যে ভাবেই হোক তাকে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতেই হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, প্রতিবন্ধী আইয়ুব মন্ডল তার বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেছে। চলতি বছরে পঞ্চম শ্রেণীর মডেল টেষ্ট পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করে সে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে। চলতি বছরের সমাপনী পরীক্ষাতে অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা শেষে প্রতিবন্ধী আইয়ুব মন্ডলের সাথে কথা হয়। সে জানায়, সে সমাজের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। অন্য আর দশ জন ছেলের মতো প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাথা উচুঁ করে দাড়াতে চায়। পড়াশুনা করে দরিদ্র বাবা-মা’র মুখে হাসি ফুটানোর পাশাপাশি দেশের কল্যানে কাজ করার আগ্রহ তার রয়েছে। এর মাঝে দরিদ্রতার ভয়ে অনেক কিছুই তাকে আবার পিছু টানে। তার প্রশ্ন অর্থের অভাবে তার স্বপ্ন মাঝ পথে বাঁধা হয়ে দাড়াবে না তো? এ ব্যাপারে সে সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগিতার পাশাপাশি সকলের দোয়া কামনা করেন। যেন সে বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন