সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ওদের মত স্কুলে যেতে পারতাম

| প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : দারিদ্রতার কষাঘাত কতটা নির্মম হতে পারে তা ভারী ডালা কাঁধে বয়ে খিলি পান বিক্রিকারী ৮ বছরের শিশু হাসানকে দেখলে বোঝা যায়। মঠবাড়িয়া পৌর শহরের অলি-গলিসহ বাস, টেম্পু ও রিক্সা স্ট্যান্ডে পানের বিক্রিরত হাসানের কচিঁ মুখটি দেখলে যে কারও মনের মধ্যে মায়ার উদ্রেক হবেই। হাসানের এখন মায়ের আঁচল ধরে স্কুলে যাওয়া ্এবং খেলাধুলায় মত্ত থাকার কথা। দারিদ্রতার কষাঘাতে হাসানের সব সপন ধুলিস্যাত হয়ে গেছে। সমবয়সি শিশুরা যখন পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যায় তখন কষ্টের পানের ডালা কাঁধে নিয়ে হাসান আনমনে তাকিয়ে দেখে আর ভাবে “আহা আমিও যদি ওদের মত স্কুলে যেতে পারতাম।”
মঠবাড়িয়া পৌর শহরের একটি বাস কাউন্টারে বসে কথা হয় হাসানের সাথে। উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামে হাসানের বাড়ি। বাবা মিরাজ তাদের ফেলে রেখে চলে গেছে। মা ফাহিমা ও চার ভাই-বোন নিয়ে হাসানদের সংসার। মা অন্যের বাড়িতে ঝিঁয়ের কাজ করে যা পায় তাতে আধ পেট খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন কাটে। তিন বেলা পেট পুরে খাওয়ার আসায় শিশু হাসান কাঁধে তুলে নিয়েছে পানের ডালা। প্রতিদিন পান বিক্রির ৫০/৬০ টাকা দিয়ে চলছে হাসান এর মায়ের সংসার। লেখাপড়া করতে ইচ্ছে করে কিনা জানতে চাইলে হাসান বলে, ”স্কুলে গ্যালে খামু কি ? স্কুলের টাহা কেডা দেবে”।
ঈগল বাস কাউন্টারের লিয়াকত জানান, হাসান প্রতিদিন বাস যাত্রীদের কাছে পান বিক্রি করতে আসে। কাছে ডেকে স্ব-স্নেহে পাশে বসিয়ে ওর ক্লান্তিমাখা অথচ অমলিন কঁচি মুখের দিকে তাকালে কষ্টে আমার ভেতরটা দুমরে-মুছরে যায়। স্ব-হৃদয় বিত্তবানদের হাসানের প্রতি সহযোগীতার হাত বাড়াবার আহবান জানান লিয়াকত।
আমড়াগাছিয়া গ্রামে জড়াজীর্ণ ঘরে বসবাসকারী হাসানের মা ফাহিমা বেগম জানান, স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর অভাবের সংসারে আধ পেটা খেয়ে দিন কাটাই। বাধ্য হয়ে আট বছরের ছেলেকে স্কুলে না পাঠিয়ে পান বিক্রি করাই। নিজে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করি। তবু ভিক্ষা করি না। ফাহিমা একটি কর্ম সংস্থানের জন্য বিভিন্ন সংগঠন এবং বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন